আছাদুজ্জামান ও তার পরিবারের জ্ঞ্যাত আয় বহির্ভূত  সম্পদের খোঁজে ৩০ দপ্তরে দুদকের চিঠি

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা প্রশাসনিক সংবাদ বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।- ফাইল ছবি।


বিজ্ঞাপন

 

 

নিজস্ব প্রতিবেদক  :  ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া ও তার স্ত্রী, দুই ছেলে-মেয়ে, শ্যালক ও মেয়ের জামাইয়ের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তথ্য চেয়ে সরকারি ও বেসরকারি ৩০টি প্রতিষ্ঠানে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।


বিজ্ঞাপন

এর আগে, গত ৯ সেপ্টেম্বর তার ব্যাংক হিসাব ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানের হিসাব পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে জব্দের নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। গত বৃহস্পতিবার মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র ৩০ প্রতিষ্ঠানে চিঠি পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে, গত ১৮ আগস্টে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক সভায় আছাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। পরে ২৮ আগস্ট অনুসন্ধানের জন্য দুদকের উপ-পরিচালক মো. হুমায়ুন কবীরকে প্রধান করে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির আরেক সদস্য হলেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আলিয়াজ হোসেন।

দুদকের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র জানায়, দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর আছাদুজ্জামান মিয়া, তার স্ত্রী, দুই সন্তান, শ্যালক ও মেয়ের জামাইয়ের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তথ্য চেয়ে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক, ৬১টি রাষ্ট্রায়ত্ত ও তফসীলি ব্যাংক, বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর, ফরিদপুর, কক্সবাজার ও ময়মনসিংহ ৭ জেলার সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয় ও ভূমি অফিস; ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, রাজউক, নিবন্ধন অধিদপ্তর, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষসহ ৩০টি প্রতিষ্ঠানে গতকাল শুক্রবার ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ক্রমান্বয়ে চিঠি দিয়েছে দুদকের সংশ্লিষ্ট টিম।

দুদক সূত্র জানায়, ডিএমপির সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার স্ত্রীর নামে ঢাকায় একটি বাড়ি ও দুটি ফ্ল্যাট এবং মেয়ের নামে একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এছাড়া ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে তার স্ত্রী ও সন্তানদের নামে ৬৭ শতক জমি রয়েছে। এই তিন জেলায় তার পরিবারের সদস্যদের নামে রয়েছে আরও ১৬৬ শতক জমি।

অনুসন্ধানে আরও উঠে আসে, রাজধানীতে ১০ কাঠা জমির ওপর একটি ছয়তলা বাড়ি রয়েছে আছাদুজ্জামান মিয়ার। এছাড়া গাজীপুরের কালীগঞ্জের চাঁদখোলা মৌজায় ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে সর্বমোট ১০৬ শতক জমি কেনা হয় আছাদুজ্জামানের স্ত্রী আফরোজা জামানের নামে।

এছাড়া ২০১৮ সালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কৈয়ামসাইল-কায়েতপাড়া মৌজায় আফরোজার নামে ২৮ শতক জমি কেনা হয়। একই বছর একই মৌজায় আরও ৩২ শতক জমি কেনা এবং পূর্বাচলের নিউ টাউনের ১ নম্বর সেক্টরের ৪০৬/বি রোডে ১০ কাঠা জমি রয়েছে। এছাড়া পরিবারের সদস্যদের নামে রাজধানীর আফতাবনগরে ৩ নম্বর সেক্টরের এইচ ব্লকের ৮ নম্বর রোডে ২৬ নং প্লটে ২১ কাঠা জমি এবং নিকুঞ্জ-১-এ ছোট ছেলের নামে একটি বাড়ি রয়েছে বলে দুদকের অনুসন্ধানে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, ৮৫ ব্যাচের পুলিশ কর্মকর্তা আছাদুজ্জামান মিয়া ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি ডিএমপি কমিশনার হিসেবে যোগদান করেন এবং দায়িত্ব পালন শেষে অবসরে যান। পরে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে তাকে জাতীয় নিরাপত্তাসংক্রান্ত সেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দেয় সরকার। ২০২২ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর এই পদে তার ৩ বছরের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়।

গত বুধবার দিবাগত রাতে আছাদুজ্জামান মিয়াকে আটক করে র‍্যাব। পরে তাকে খিলগাঁও থানা ছাত্রদল নেতা জনি হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে সাত দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *