বিশেষ প্রতিবেদক : বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল- এসই জেডে ইস্পাত খাতে বিদেশি বিনিয়োগ দেশিয় উদ্যোক্তাদের বাজার থেকে ছিটকে দেবে। চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান কুনমিং স্টিলের বিনিয়োগ আগ্রহের পরিপ্রেক্ষিতে এমন আশঙ্কা এখাতের ব্যবসায়ীদের।
তবে অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ-বেজা বলছে, বিদেশি বিনিয়োগ আনতে এমন কোন প্রতিশ্রুতি দেয়া হবে না, যাতে ক্ষতির মুখে পড়ে দেশীয় শিল্প। এক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য অভ্যন্তরীণ ও রপ্তানি বাজার বিবেচনায় আলাদা সুবিধা কাঠামো ঠিক করার পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের।
অবকাঠামো উন্নয়নসহ নির্মাণ শিল্পে ক্রমবর্ধমান চাহিদার তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ উৎপাদন সক্ষমতা নিয়ে চলছে দেশের ইস্পাত খাত। পদ্মাসেতু চালু হলে দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে এক লাফে ইস্পাতের চাহিদা বাড়বে অনেক। এমন সম্ভাবনার কথা বললেও এ খাতের ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ইস্পাত খাতে বিদেশি বিনিয়োগ কোণঠাসা করে ফলবে তাদের।
বাংলাদেশ স্টিল প্রস্তুতকারক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ মাসুদুল আলম মাসুদ বলেন, আমাদের এই শিল্পগুলো ধীরে ধীরে জিম্মি হয়ে যাবে। আমাদের ট্যাক্সের টাকায় তাদের সুবিধা দেবেন, তাই তাদের বিনিয়োগগুলো আমাদের মাথায় রাখতে হবে।
বেজার তথ্য, এরই মধ্যে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৫শ’ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে জাপানি প্রতিষ্ঠান নিপ্পন স্টিল অ্যান্ড সুমিতমো মেটাল। বিনিয়োগে আগ্রহী কুনমিং আয়রন অ্যান্ড স্টিল কোম্পানি লিমিটেড। এজন্য ২০১৭ সালে ১৯ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে ১ হাজার একর জমিতে ২০ লাখ টন উৎপাদন সক্ষমতার স্টিল মিল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেয় এই চীনা প্রতিষ্ঠান। বেজা বলছে, প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চূড়ান্ত কোনো চুক্তি হয়নি, আলোচনা চলছে।
বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, তারা যে জায়গাতে জমি চেয়েছিল, আমার সে জায়গাতে জমি দেয়নি। সেই জায়গাটা যদি ফাইনাল হয় তাহলে বিষয়টা বিবেচনার কথা আসে। সাধারণভাবে অর্থনৈতিক অঞ্চলে কিছু এনসেফটিপস থাকে। তবে বাজারে যাতে কোনো ধরনের ক্ষতি না হয়, সরকার সে দিকে নজর রাখবে।
বিদেশি বিনিয়োগ যেমন দরকার তেমনি কোনো প্রতিষ্ঠান যেন একচেটিয়া বাজার সুবিধা না পায় তা নিশ্চিত করেই নীতি-কৌশল ঠিক করার পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের। গেল দেড় দশকের তথ্য, দেশে মাথাপিছু ইস্পাতের ব্যবহার দ্বিগুন বেড়ে ৪০ কেজি ছাড়িয়েছে, একই সময়ে টন প্রতি দাম কমছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা।