কিশোরগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ অভিযান  :  দুই টোব্যাকো কোম্পানি সিলগালাসহ ৪ লাখ টাকা জরিমানা

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত গ্রাম বাংলার খবর জাতীয় প্রশাসনিক সংবাদ বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক  :  কিশোরগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর  দুই দফা অভিযানে প্রায় ১৫ লাখ শলাকা অবৈধ সিগারেট ও প্রায় সাড়ে ১২ লাখ নকল রাজস্ব স্ট্যাম্প জব্দ করেছে যৌথবাহিনী। যার বাজারমূল্য ২১ কোটি ৪৩ লাখ ৩৫ হাজার ৮০৬ টাকা। অনিয়মের অভিযোগে হ্যারিটেজ টোব্যাকো ও তারা ইন্টারন্যাশনাল নামে দুই প্রতিষ্ঠানকে চার লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পরে প্রতিষ্ঠান দুইটিকে সিলগালা করে দেওয়া হয়।


বিজ্ঞাপন

কর ফাঁকি দিয়ে এসব সিগারেট বাজারজাত করার পরিকল্পনা ছিল দুই টোব্যাকো কোম্পানির। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও স্থানীয় প্রশাসনের অনুরোধে গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত কুলিয়ারচর ও ভৈরবে অভিযান চালায় যৌথবাহিনী। যৌথ অভিযানের নেতৃত্ব দেন লে. কর্নেল ফারহানা আফরিন। অভিযানে দুইটি কারখানা থেকে ১৪ লাখ ৭৯ হাজার ৮২০ শলাকা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের অবৈধ সিগারেট এবং ১২ লাখ ২৫ হাজার অবৈধ ট্যাক্স স্ট্যাম্প জব্দ করা হয়। যার বাজার মূল্য ২১ কোটি ৪৩ লাখ ৩৫ হাজার ৮০৬ টাকা।


বিজ্ঞাপন

গতকাল দুপুরে কুলিয়ারচরে হ্যারিটেজ টোব্যাকো কোম্পানিতে করা অভিযানে জাল ব্যান্ডরোল ও ব্যবহার করা ব্যান্ডরোলের সন্ধান পায় যৌথ বাহিনী। এছাড়াও কারখানার বর্জ্য যায় নদীতে। যার মাধ্যমে নদীতে দূষণ ছড়িয়ে পড়ছে। নকল পণ্য উৎপাদনের অভিযোগে হ্যারিটেজ টোব্যাকো কোম্পানিকে ১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।  এ ছাড়া নকল সন্দেহে ১ লাখ ৬০ হাজার শলাকা সিগারেট, ১১ লাখ ৭২ হাজার অবৈধ রাজস্ব স্ট্যাম্প ও ৭ হাজার কেজি সেলুলোজ এ্যাসিটেট  জব্দ করা হয়।

জানা যায়, হেরিটেজ টোব্যাকো ব্যান্ডরোল নকল করার মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ সিগারেট উৎপাদন করছে। প্রতিষ্ঠানটি কোনো অনুমোদন ছাড়াই কারখানায় বয়লার মেশিন স্থাপন করে সিগারেট উৎপাদন করছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি ‘টোব্যাকো প্রসেসিং প্ল্যান্ট’তৈরি করেছে। এ ধরণের প্ল্যান্ট তৈরি করতে কলকারখানা কর্তৃপক্ষের বিশেষ অনুমোদনের প্রয়োজন।

এর আগেও হেরিটেজ টোব্যাকোকে পরিবেশ ছাড়পত্রের জন্য সিলগালা করা হয়েছিল। তখন কারখানায় কোনো ধরনের বয়লার বা কোনো ধরণের বিশেষ যন্ত্রপাতি স্থাপন করতে পারবে না বলে জানানো হয়। তারপরও প্রতিষ্ঠানটি প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে মেশিন স্থাপন, ব্যান্ডরোল জালিয়াতি করে বাজারজাতকরণ ও পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করছে।

অভিযানে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সামিউল ইসলাম, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট নরসিংদীর বিভাগের উপকমিশনার সোহেল রানা, কিশোরগঞ্জ জেলার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মতিন।

এর আগে বেলা ১১টার দিকে ভৈরব উপজেলার শম্ভুপুরে তারা ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো কোম্পানিতে যৌথ বাহিনী অভিযান পরিচালনা করে। ভৈরব উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিদওয়ান আহমেদ জানান, ওই কারখানা জাল ব্যান্ডরোল পাওয়ায় দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

যৌথ বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, তারা ইন্টারন্যাশনালের কারখানার অবস্থান নীরব ও জনশূন্য এলাকায়। প্রতিষ্ঠানের মালিক লিটন মিয়া নানা কৌশলে রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ আছে। অভিযানে ৫৩ হাজার অবৈধ রাজস্ব স্ট্যাম্প এবং নকল সন্দেহে ১৩ লাখ ১৯ হাজার ৮২০ শলাকা সিগারেট জব্দ করা হয়। পরে নকল পণ্য উৎপাদনের অভিযোগে তারা ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো কোম্পানিকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযানে সময় উপস্থিত ছিলেন র্যাব-১৪ ভৈরব ক্যাম্পের কমান্ডার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, ভৈরব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শাহীন।

ভারপ্রাপ্ত ইউএনও রিদওয়ান আহমেদ বলেন,  ‘কোম্পানিটি জাল ব্যান্ডরোলের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে এসেছে। অভিযানে বিপুল পরিমাণ সিগারেট ও ব্যান্ডরোল জব্দ করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *