শিল্প মন্ত্রণালয় এখনো সাবেক আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রেতাত্মার দখলে !

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী রাজনীতি সংগঠন সংবাদ সারাদেশ

বিশেষ প্রতিবেদক : গত ৫ আগষ্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে  স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলেও বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সরকারি দপ্তরে তার দোসররা এখনো  রয়েগেছে।তাদের অতিদ্রুত লোভনীয় পদগুলো থেকে অপসারণ করা না হলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিপদে পড়বে এমন মন্তব্য করেছেন সুশীল সমাজ।


বিজ্ঞাপন

গত ১৬ বছরের আওয়ামী শাসনামলে গোপালগঞ্জের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা একচেটিয়া সুবিধা ভোগ করেছে। এক এক জনকে ২/৩ টি লোভনীয় পদে বসিয়ে দুহাতে সরকারি টাকা লুটপাট ও ঘুস দুর্নীতিকে অবারিত করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এমন একজন কর্মকর্তা হলেন যুগ্ম সচিব মুহা: নুরুল আমিন খান। যিনি আজ ৬/৭ বছর শিল্প মন্ত্রণালয়ের দুটি লোভনীয় পদে অধিষ্ঠিত রয়েছেন। তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ বিধায় তাকে দলীয় বিবেচনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এলাকার লোক গন্য করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ দুটি পদ প্রদান করা হয়। সেই থেকে তিনি অসীম ক্ষমতা প্রদর্শন করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সর্বেসর্বা বনে যান।


বিজ্ঞাপন

তিনি বঙ্গবন্ধুর কবর জিয়ারত করে এসে গোটা শিল্প মন্ত্রণালয় নিজের হাতের মুঠিতে ভরে গত ৬/৭ বছর দুহাতে অবৈধ টাকা অর্জন করেছেন। বিশেষ করে চিনি শিল্প করপোরেশন এর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব পেয়েই এই শিল্পকে ধ্বংস করতে উঠে পড়ে লাগেন। তিনি দেশ লুটেরা এস আলম গ্রুপের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা ঘুস খেয়ে একটি রাষ্ট্রীয় চিনিকল এস আলম গ্রুপের হাতে তুলে দেন৷ যেটির চুক্তি পরে বাতিল করা হয়।

এ ছাড়া তিনি বিসিআইসি, বিসিক, বিটাক, চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন এর উন্নয়ন প্রকল্পের পিডিদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে পিডি নিয়োগ,ঠিকাদার নিয়োগ,যন্ত্রপাতি ক্রয় এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের জনবল নিয়োগে হস্তক্ষেপ করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

গোপালগঞ্জের লোক হিসাবে কোন কর্মকর্তাই তার কাজে বাঁধা দিতে সাহস পান নি। এমন কি সাবেক মন্ত্রী নুরুল মজিদ হুমায়ুন এবং প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারও তার হাতে জিম্মি ছিলেন। আরো জানাগেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অতি আস্থাভাজন সচিব জাকিয়া সুলতানার হাতে হাত মিলিয়ে তিনি সব কিছু একাই নিয়ন্ত্রণ করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী বলেন,আসলে যুগ্ম সচিব মুহাঃ নুরুল আমিন খান সচিব জাকিয়া সুলতানার ক্যাশিয়ারের দায়িত্ব পালন করেন।তাকে বেশিরভাগ সময়েই শিল্প মন্ত্রণালয়ে পাওয়া যায় না। তিনি প্রায় সময়ই চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনে অবস্থান করেন।
তার কাছে সব সময় ঠিকাদারদের ভীড় লেগেই থাকে।

এর আগে তার বিরুদ্ধে ৫০ লক্ষ টাকার দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। কিন্তু তিনি গোপালগঞ্জের দাপট দেখিয়ে সেই অভিযোগ ধামাচাপা দেন।এখন তিনি বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের রক্ত চুষে খাচ্ছেন বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন।

শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানার সাথে আঁতাত করে তিনি একটি ঠিকাদার সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। বিসিক এবং বিসিআইসির যত টেন্ডার হয় তার সব কাজই তিনি নিজের সিন্ডিকেট ঠিকাদারদের মাঝে বন্টন করে মোটা অংকের কমিশন হাতিয়ে নেন বলে প্রচার আছে।

তিনি বিসিক এর রানিং ৫ টি প্রকল্পের পিডিদের কাছ থেকে মাসিক চাঁদাও নেন। যে পিডি তার কথামত চাঁদা না দেন সেই পিডিকেই বদলী করে দেন। গোপালগঞ্জের এই স্বৈরাচারের দোসরকে অতি সত্তর ওএসডি করার দাবী তুলেছেন বিসিআইসি,বিসিক,বিটাক ও চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের দেশপ্রেমিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। এ ক্ষেত্রে তারা প্রধান উপদেষ্টা ও শিল্প উপদেষ্টার তড়িৎ পদক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ সব অভিযোগের বিষয়ে যুগ্ম সচিব মুহাঃ নুরুল আমিন খানের কাছে জানতে চাইলে সাংবাদিক পরিচয় দিতেই তিনি ফোন কল কেটে দেন। এরপর বারবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেন নি। বিধায় তার কোন প্রকার বক্তব্য প্রকাশিত হলো না।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *