আত্মীয়-স্বজন, এপিএস ও ব্যবসায়িক অংশীদারের নামে অঢেল সম্পদের মালিক নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী  : দুদকের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য 

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী রাজনীতি

!!  প্রতিমন্ত্রী হাজার কোটি টাকা লন্ডনে পাচার করেছেন সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) বাশারের মালিকানায় নেওয়া এজেন্ট ব্যাংকিং শাখার মাধ্যমে। প্রতিমন্ত্রীর ছত্রছায়ায় বোচাগঞ্জ উপজেলার সীমান্ত এলাকায় ফেনসিডিল ও টাপেনটাডল নামের মাদক চোরাচালানের বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফ আলী তুহিন।তবে ২০১৮ সালে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পরই বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) প্রধান কার্যালয় নিয়ন্ত্রণ রাখতেন এপিএসের মাধ্যমে। নিজস্ব ঠিকাদার ও ব্যক্তিগত ক্যাডার বাহিনী নিয়ে বিআইডব্লিউটিএ ভবনে প্রবেশ করে বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী ও নির্বাহী প্রকৌশলীদের কক্ষে গিয়ে এপিএসের মাধ্যমে কাজ দেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করতেন। অপছন্দের ঠিকাদারকে বিআইডব্লিউটিএ ভবনে প্রবেশ করতে দিতেন না। ২০ লাখ টাকার ওপরে যে কোনো কাজে কমিশন দিতে হতো প্রতিমন্ত্রীর লোকদের। কমিশন না দিলে কাজ পাওয়া যেত না।এসব কাজে এপিএসের বড় সহযোগী ছিলেন প্রতিমন্ত্রীর চাচাতো ভাইয়ের শ্যালিকার স্বামী মো. আরশাদ। এই দুজন মিলে নিয়ন্ত্রণ করতেন মন্ত্রণালয়ের সবকিছু।তাদের মাধ্যমেই কাজের পারসেন্টেজ নিতেন প্রতিমন্ত্রী। কাকে কাজ দেওয়া যাবে, তা ঠিক করতেন আরশাদ আর বাশার।বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসি, চট্টগ্রাম বন্দর, পায়রা পোর্টের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী পদে নিজেদের সিন্ডিকেটের লোক বসাতেন ওই দুজন। তাদের মধ্যে আরশাদ নৌপ্রতিমন্ত্রীর ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত ছিলেন সবার কাছে। মূলত এই আরশাদই প্রতিমন্ত্রীর হাজার হাজার কোটি টাকা দেশের বাইরে পাচার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে   !!


বিজ্ঞাপন
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

 

 

নিজস্ব প্রতিবেদক  :  আত্মীয়-স্বজন, এপিএস ও ব্যবসায়িক অংশীদারের নামে কিনে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তাঁর এমন বেনামে অঢেল সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) গোয়েন্দা ইউনিট ও দিনাজপুর জেলা কার্যালয়। সূত্র জানায়, তিনি দিনাজপুর জেলা এবং রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় হাজার কোটি টাকার সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। ক্ষমতার প্রভাবে নিয়োগবাণিজ্য, টেন্ডারবাজি এবং দলীয় পদ দেওয়ার নামে কামিয়েছেন এসব টাকা।

এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যাংক থেকে স্বজনদের নামে স্বল্প সুদে কৃষিঋণ নিয়ে গড়েছেন একের পর এক অটোরাইস মিল। জোহুরা অটোরাইস মিলের নেপথ্যে বিশাল বিনিয়োগ রয়েছে খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর। পাচার করা টাকায় লন্ডনে একাধিক বাড়ি কিনেছেন মেয়ের নামে। রাজধানীতে ১৩টি ফ্ল্যাট এবং ৫ শতাংশ করে কয়েকটি প্লট রয়েছে।


বিজ্ঞাপন

নিজ জেলা দিনাজপুরে রয়েছে শত কোটি টাকার অবৈধ বালুবাণিজ্য। দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম জানান, ওই প্রতিমন্ত্রীর অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান চলমান আছে।


বিজ্ঞাপন

প্রাথমিক অনুসন্ধানে দুদক জানতে পারে, প্রতিমন্ত্রী হাজার কোটি টাকা লন্ডনে পাচার করেছেন সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) বাশারের মালিকানায় নেওয়া এজেন্ট ব্যাংকিং শাখার মাধ্যমে। প্রতিমন্ত্রীর ছত্রছায়ায় বোচাগঞ্জ উপজেলার সীমান্ত এলাকায় ফেনসিডিল ও টাপেনটাডল নামের মাদক চোরাচালানের বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফ আলী তুহিন।তবে ২০১৮ সালে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পরই বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) প্রধান কার্যালয় নিয়ন্ত্রণ রাখতেন এপিএসের মাধ্যমে।

নিজস্ব ঠিকাদার ও ব্যক্তিগত ক্যাডার বাহিনী নিয়ে বিআইডব্লিউটিএ ভবনে প্রবেশ করে বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী ও নির্বাহী প্রকৌশলীদের কক্ষে গিয়ে এপিএসের মাধ্যমে কাজ দেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করতেন। অপছন্দের ঠিকাদারকে বিআইডব্লিউটিএ ভবনে প্রবেশ করতে দিতেন না। ২০ লাখ টাকার ওপরে যে কোনো কাজে কমিশন দিতে হতো প্রতিমন্ত্রীর লোকদের। কমিশন না দিলে কাজ পাওয়া যেত না।

এসব কাজে এপিএসের বড় সহযোগী ছিলেন প্রতিমন্ত্রীর চাচাতো ভাইয়ের শ্যালিকার স্বামী মো. আরশাদ। এই দুজন মিলে নিয়ন্ত্রণ করতেন মন্ত্রণালয়ের সবকিছু।তাদের মাধ্যমেই কাজের পারসেন্টেজ নিতেন প্রতিমন্ত্রী। কাকে কাজ দেওয়া যাবে, তা ঠিক করতেন আরশাদ আর বাশার।বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসি, চট্টগ্রাম বন্দর, পায়রা পোর্টের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী পদে নিজেদের সিন্ডিকেটের লোক বসাতেন ওই দুজন। তাদের মধ্যে আরশাদ নৌপ্রতিমন্ত্রীর ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত ছিলেন সবার কাছে। মূলত এই আরশাদই প্রতিমন্ত্রীর হাজার হাজার কোটি টাকা দেশের বাইরে পাচার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

গত ৫ আগস্ট গণ অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যদের সঙ্গে আত্মগোপনে চলে যান খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তার সঙ্গে আত্মগোপনে গেছেন তার একান্ত অনুসারীরাও।

ঠাকুরগাঁয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার আওয়ামী লীগের স্থানীয় কয়েকজন নেতা জানান, ৫ আগস্টের পর লাশের গাড়িতে করে উপজেলার বৈরচুনা ইউনিয়নে পৌঁছান। এর পর ভবানীপুরের সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যান।

দুদক সূত্র জানায়, প্রতিমন্ত্রী দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলায় এপিএস বাশারের মাধ্যমে টেনা গ্রামে নামে-বেনামে ৩০০ বিঘা জমি কেনেন। এ ছাড়া কালুপীর বাজারের পাশে মসলাবাটি নামক স্থানে ১৫০ বিঘার ওপর পুকুরের সঙ্গে করেছেন খামারবাড়ি। কালুপীর বাজারে কয়েক কোটি টাকার জমি, দোকান ও গোডাউন করেছেন।

পার্শ্ববর্তী উপজেলা পীরগঞ্জের ৫ নম্বর সৈয়দপুর ইউনিয়নে ৯০ বিঘা জমির ওপর আমবাগান, পীরগঞ্জ উপজেলায় কয়েক কোটি টাকা মূল্যের ৫৮ শতাংশ জমি, বোচাগঞ্জের সেতাবগঞ্জ বাজারে কয়েক কোটি টাকার ১ হাজার ৭৪১ শতাংশ জমি, বিরল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রমাকান্তের মাধ্যমে স্থলবন্দরের পাশেই ৩৮৬ শতাংশ জমিসহ শত শত কোটি টাকার বালুবাণিজ্য রয়েছে।

দিনাজপুর শহরে ৫টি প্লট রয়েছে। জেলার পুনর্ভবা নদী থেকে প্রতিমন্ত্রীর অবৈধ বালু উত্তোলন নিয়ন্ত্রণে ছিলেন রমাকান্ত। এ ছাড়া জোহুরা অটোরাইস মিলের মালিক আবদুল হান্নান তার একাধিক ম্যানেজারের নামে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে শত শত বিঘা জমি কিনেছেন।

ওইসব জমির কয়েক গুণ বেশি দাম দেখিয়ে বিভিন্ন ব্যাংকে বন্ধক রেখে খালিদ মাহমুদের প্রভাবে শত কোটি টাকার ঋণ নিয়েছেন আবদুল হান্নান। এ ছাড়া প্রতিমন্ত্রীর বেনামে ঢাকার লালমাটিয়া, আদাবর, শেখেরটেক, মোহাম্মদিয়া হাউজিং সোসাইটি, বাবর রোড ও হুমায়ুন রোডে রয়েছে ১৩টি ফ্ল্যাট এবং বছিলা ও ঢাকা উদ্যানে ৫ শতাংশ করে কয়েকটি প্লট।

গত ২ সেপ্টেম্বর সাবেক নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, তার স্ত্রী, সন্তান ও তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তলব করে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

👁️ 17 News Views

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *