!! এখন পর্যন্ত এই ক্যাম্পের মাধ্যমে প্রায় ৩১৪৫ জনের বেশি রোগীর চোখ বিনামূল্যে অপারেশন করা হয়েছে!!
নিজস্ব প্রতিবেদক : বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটে বিনামূল্যে ৩৭ জন গরিব ও দুস্থ রোগীর চোখের ছানি অপারেশন হয়েছে। বৃহস্পতিবার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সাবরিনা সোবহান রোডে অবস্থিত বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটে দিনব্যাপী এ ফ্রি অপারেশন অনুষ্ঠিত হয়।
যৌথভাবে এ অপারেশন কার্যক্রমের আয়োজন করে বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্ট ইনস্টিটিউট, ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশন ও চিকিৎসা সহায়তা কেন্দ্র চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অবৈতনিক পরিচালক এবং ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশনের সভাপতি প্রফেসর ডা. মো. সালেহ আহমদের তত্ত্বাবধানে এ সার্জারিতে অংশ নেন ডা. অ্যান্থনি অ্যালবার্ট, ডা. তাসরুবা শাহনাজ, ডা. জেরিন পারভীন এবং ডা. নুসরাত লুবনা ইসলাম।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষ্ণগোবিন্দপুর ডিগ্রি কলেজে একটি আই ক্যাম্প করা হয়। সেখানে ১ হাজার ২০০ রোগীর চোখ পরীক্ষা করে ৪২০ জনকে অপারেশনের জন্য বাছাই করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার সেই রোগীদের ৫ম ব্যাচের ৩৭ জনের চোখে অপারেশন করা হয়। এর মধ্যে ১৫ জন পুরুষ ও ২২ জন নারী রয়েছেন।
এ বিষয়ে বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অবৈতনিক পরিচালক এবং ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশনের সভাপতি প্রফেসর ডা. মো. সালেহ আহমদ বলেন, ২০১৪ সাল থেকে আমরা বিনামূল্যে রোগীদের চোখ অপারেশন করার এই কার্যক্রম শুরু করেছি। আমরা দেশের দূর-দূরান্ত অঞ্চলে গিয়ে বিনামূল্যে আই ক্যাম্প করি। সেখানে অপারেশনের রোগী বাছাই করে আমাদের হাসপাতালে নিয়ে আসি। অপারেশন শেষে আবার তাদের নিজ বাড়িতে দিয়ে আসি। এ পুরো কার্যক্রমই আমরা আমাদের নিজ খরচে করে থাকি। আমি মনে করি, এই কার্যক্রমে আমাদের সফলতা শতভাগ।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের মানুষরা চোখ নিয়ে অবহেলা করেন। শিশুদের কিছু জন্মগত চোখের রোগ হয়, যেটা বাবা-মা বুঝতে পারেন না। পরবর্তীতে শিশু যখন স্কুলে যায় তখন সেসব সমস্যা ধরা পড়ে। তাই শিশুদের পাঁচ বছরের আগে চোখের স্ক্রিনিং করে নেওয়া দরকার। এছাড়া ৪০ বছরের পরে চোখের ছানি পড়াসহ বেশ কিছু সমস্যা দেখা দেয়। তাদেরও নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করানো দরকার। যাতে চোখ ভালো থাকে এবং ভালোভাবে দেখতে পায়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে বসুন্ধরা আই হসপিটালে চোখের ছানি অপারেশন করাতে আসা মো. ইকরামুল হক বলেন, এই কার্যক্রমটি নিঃসন্দেহে একটি মহৎ। মানবসেবা সবচেয়ে বড় ধর্ম। এ ধর্মটা সবাই পালন করতে পারেন না। বসুন্ধরা আই হসপিটাল সেটা করতে পারছে। এখানকার ডাক্তারসহ অন্যান্যদের ব্যবহার খুবই চমৎকার। তারা রোগীদের বাবা-চাচা-ভাইয়ের মতো করে সেবা যত্ন করেন। তাদের ব্যবহার অতুলনীয়। যেন সবাই তাদের আপনজন।
একই এলাকা থেকে চোখের ছানি অপারেশন করতে আসা মোমেনা বেগম বলেন, আমি আগে চোখে ঝাপসা দেখতাম। টাকার জন্য চিকিৎসা করাতে পারিনি। আমাদের এলাকার একজনের কাছে খবর পেয়ে আই ক্যাম্পে বিনামূল্যে চোখ পরীক্ষা করাতে যাই। পরে তারা চোখ পরীক্ষা করে অপারেশনের জন্য নিয়ে আসে। আমার কোনো খরচ হয়নি। এখন আবার আমি ঠিকভাবে দেখতে পারবো। আল্লাহ এদের ভালো করুক।
বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ম্যানেজার (এইচআর অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) মোহাম্মদ আহসান হাবীব বলেন, গরিব-দুস্থ ও অন্ধ রোগীদের চক্ষু চিকিৎসার সাহায্যার্থে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দুস্থদের সেবায় আগে থেকেই এ ধরনের কার্যক্রম চলমান আছে। সারা দেশে বিনামূল্যে এ ক্যাম্পটি অনুষ্ঠিত হয়। এখন পর্যন্ত এই ক্যাম্পের মাধ্যমে প্রায় তিন হাজার ১৪৫ জনের বেশি রোগীর চোখ বিনামূল্যে অপারেশন করা হয়েছে।