বিশেষ প্রতিবেদক : সীমান্ত নদী জাদুকাটায় ফের পরিবেশ ধ্বংসী ড্রেজার মেশিনে খনিজ বালি পাথর চুরি বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে জাদুকাটা নদীর তীরবর্তী বড়টেক এলাকায় সংক্ষুদ্ধ শ্রমিক জনতার আয়োজনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় রবিবার বিকেলে। ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন চলাকালে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন , গেল কিছু দিন বন্ধ থাকার পর জাদুকাটা নদীর রাষ্ট্রীয় খনিজ সম্পদ বালি পাথর চুরি করতে ফের ড্রেজার সিন্ডিক্যাটের সদ্যরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
জাদুকাটা নদীর বালি মহালের ইজারাদার চক্র ও থানা পুলিশের কিছু বিপথগামী অফিসারদের চত্রছায়ায় উচ্চ আদালত থেকে ড্রেজার চালানোর আদেশ পেয়েছে এমন গুজব রটিয়ে গেল শুক্রবার (১১ অক্টোবর) গভীর রাতে পদত্যাগী আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে সুবিধাভোগী জাদুকাটা নদী- বালি মহাল ১ এর ইজারাদার সোহাগ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী রতন মিয়ার শ্যালক বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মিয়ারচর গ্রামের জাকির হোসেন ডালিমের নেতৃত্বে ৭ থেকে ৮টি পরিবেশ ধ্বংসী ড্রেজার মেশিন নিয়ে জাদুকাটার পাকা সড়কের সামনে ফের অবৈধভবে রাষ্ট্রীয় খনিজ সম্পদ বালি পাথর চুরি করাতে থাকে।
বক্তারা অভিযোগ করে আরো বলেন, ওই রাতে ড্রেজার মেশিনে ফের খনিজ বালি পাথর চুরির বিষয়টি তাহিরপুর থানার ওসি ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে জাদুকাটা নদীর তীরবর্তী এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ বসতবাড়ির বাসিন্দারা, সাধারন বারকি শ্রমিকরা অবহিত করলেও থানার ওসি ও দায়িত্বশীলরা নানা অজুহাতে খনিজ বালি পাথর চুরি ঠেকাতে, ড্রেজারগুলো জব্দে কোন রকম প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেননি ইজারাদার রতনের সাথে গোপন সখ্যতা থাকার কারনে।
সংক্ষুদ্ধ বারকি শ্রমিকদের পক্ষে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বক্তারা বলেন, জাদুকাটায় কর্মরত প্রায় ৩০ হাজার বারকি শ্রমিক যুগ যুগ ধরে সনাতন পদ্ধতিতে বেলচা, বালতি, হাতে নদী থেক বালি পাথর উক্তোলন করে শ্রমিক পরিবাররের প্রায় দেড় লক্ষাধিক সদস্যের জীবন জীবিকা চালিয়ে আসছিলো।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ওই নদীর নৌপথ জুড়ে শতাধিকের উপর ড্রেজারে অবৈধ ভাবে ইজারাদার রতন চক্রের ইন্দনে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে প্রতি দিবারাত্রী হাজার কোটি টাকার টাকার রাষ্ট্রীয় সম্পদ খনিজ বালি পাথর চুরি করে ইজারার আড়ালে জাদুকাটা নদীর সাধারন বারকি শ্রমিকদের কর্মহীন করে রাখা হয়েছিলো।
পুন:রায় নতীতে ড্রেজার মেশিনে বালি পাথর উক্তোলন বন্ধ না করা হলে আইনশৃস্খলা পরিস্থির কোন অবনতি ঘটলে তার দায়ভার, প্রশাসন ,থানা পুলিশ ও ইজারাদার চক্রকে বহন করতে হবে।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন , জাদুকাটা নদী তীরবর্তী বসতির ক্ষতিগ্রস্থ বাসিন্দা কুদরত উল্লাহ, সজিব শাহাদাত, জয়নাল আবেদীন , শ্রমিক নেতা আব্দুস সাহিদ, আবুল কালাম, বারকি শ্রমিক নজিব, রফিকুল প্রমুখ।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে জাদুকাটা নদী তীরবর্তী বসতির ক্ষতিগ্রস্থ্য বাসিন্দা, সাধারন বারকি শ্রমিক, পরিবেশ বাদী সংগঠনের নেতকাকর্মী,কলেজ বিশ^ বিদ্যালয়ে পড়–য়া এলাকার শিক্ষার্থী, অভিভাবক সহ হাজারো মানুষজন উপস্থিত হয়ে ড্রেজার বন্ধের দাবিতে একাত্বতা পোষন করেন।
সোমবার সন্ধায় তাহিরপুর থানার ওসি দেলোয়ার হোসেনের নিকট জাদুকাটায় ড্রেজার মেশিনে খনিজ পাথর চুরি ও মানববন্ধন প্রতিবাদ সমাবেশে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জাদুকাটায় গেল শুক্রবার রাতে কোন ধরণের ড্রেজার মেশিন কেউ চালায়নি, কোন লোকজনও বিষযটি আমাকে অবহিত করেননি, লোকজন আমার সম্পর্কে গণমাদ্যমকে ভুল তথ্য দিয়েছেন।
সোমবার সন্ধায় জাদুকাটা নদী- বালি মহাল ১ এর ইজারাদার সোহাগ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী রতন মিয়ার নিকট তার শ্যালক জাকির হোসেন ডালিমের নেতৃত্বে গেল শুক্রবার রাতে ড্রেজার মেশিনে জাদুকাটায় ফের অবৈধভবে রাষ্ট্রীয় খনিজ সম্পদ বালি পাথর চুরির প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তার ব্যাক্তিগত মুঠোফোনে কল করা হলে রতন বলেন, জাদুকাটার পাকা সড়কের সামনে নয় ডাইসের চর জাকির হোসেন ডালিমের লোকজন (চিকন বালি) ছোট ছোট মেশিনে উক্তোলনে করতে গেলে সেখানকার সেইভ মেশিনের সিন্ডিক্যাটের লোকজন ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া করে বালি উক্তোলন করতে দেয়নি।