নিজস্ব প্রতিবেদক : কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সেবা সংস্থা ও বহু মাধ্যমভিত্তিক উন্নয়ন যোগাযোগ বিভাগ কৃষি তথ্য সার্ভিসে প্রকল্পের দুর্নীতি অনিয়ম নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে প্রতিদিনের সংবাদ। ‘কৃষি তথ্য সার্ভিস আধুনিকায়ন এবং ডিজিটাল কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ শক্তিশালীকরণ’ নামক প্রকল্পের নানা অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গত বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) দুদকের অনুসন্ধানী কর্মকর্তা ও সহকারী পরিচালক মো. তানজিল হাসান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানা গেছে।
দুদকের ওই চিঠিতে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ ও দুর্নীতি দমন বিধিমালা-২০০৭ অনুযায়ী কৃষি তথ্য সার্ভিসের সাবেক পরিচালক ড. সুরজিত সাহা রায় ও অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারী বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুসন্ধান শুরুর কথা বলা হয়েছে। ১০৯ কোটি টাকার প্রকল্পের অধীন ২৯ কোটি টাকার ১৩টি প্রেস মেশিন কেনার দরপত্র বিজ্ঞপ্তি, দরপত্র শিডিউল, সিডিউল বিক্রির রেজিস্ট্রারসহ অন্যান্য তথ্য প্রদান করতে নির্দেশ দিয়েছে দুদক।
এ ছাড়া অক্টোবরের শুরুর দিকে জাতীয় বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় কৃষি তথ্য সার্ভিসের আধুনিকায়ন প্রকল্পের বড় ধরনের লুটপাট নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন শুরু হলে দপ্তরের আটজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠায় দুদক। সেই তালিকায় দেখা যায় সাবেক কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরিচালক ড. সুরজিত সাহা রায়, প্রধান তথ্য অফিসার বি এম রাশেদুল আলম, প্রেস ম্যানেজার খন্দকার জান্নাতুল ফেরদাউস, প্রেস শাখার স্টোর কিপার ইসরাত জাহান খান ও কৃষি তথ্য সার্ভিসের স্টোর কিপার আরিফুল ইসলাম, প্রদর্শনী বিশেষজ্ঞ সমীরণ বিশ্বাস ও ইলেকট্রেশিয়ান সোলায়মানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, কৃষি তথ্য সার্ভিসের অভিযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রকল্প শেষ হওয়ার আগেই গায়েব করে দেয় কোটি কোটি টাকার মালামাল। তৎকালীন প্রকল্প পরিচালক তাপস কুমারের অনিয়ম-দুর্নীতির পেছনে কৃষি মন্ত্রণালয়ের বেশ কয়েকজন আওয়ামীপন্থি কৃষি ক্যাডারের সম্পর্ক রয়েছে। এ ছাড়া তাপসের শ্বশুর আওয়ামীপন্থি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকারের পতন হলেও সুকৌশলে সেফ জোনে চলে যান দুর্নীতির মূল পরিকল্পনাকারী প্রকল্প পরিচালক তাপস কুমার। বদলি করা হয় কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরিচালক ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে ব্যানার ফেস্টুন বানানো এবং কর্মচারীদের মাঠে নামানো আওয়ামী ফ্যাস্টিস সরকারে দোসর ড. সুরজিত সাহা রায় এবং আমিনুর ইসলাম তথ্য অফিসার কৃষিকে। এখনো বহাল তবিয়তে আছেন অভিযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
সূত্র থেকে জানা গেছে, আওয়ামী ফ্যাস্টিস সরকারে দোসর দুর্নীতির মূল পরিকল্পনাকারী কৃষি তথ্য সার্ভিসের সাবেক পরিচালক ড. সুরজিত সাহা রায় এবং আমিনুর ইসলাম তথ্য অফিসার কৃষিসহ বেশকিছু দুর্নীতিবাজ কর্মচারীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলাসহ কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া প্রক্রিয়াধীন।