আপনজনের মঙ্গল কামনার্থে কুমিল্লায় রাখের উপবাস ও ঘিয়ের বাতি প্রজ্জ্বলন

Uncategorized ইতিহাস ঐতিহ্য গ্রাম বাংলার খবর জাতীয় বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ

আপনজনের মঙ্গল কামনায় প্রার্থনায়রত লোকনাথ ভক্তরা। শনিবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা মহেশাঙ্গণ থেকে দৃশ্যটি ক্যামেরাবন্দি করেছেন আমাদের প্রতিনিধি তাপস চন্দ্র সরকার।


বিজ্ঞাপন

 

নিজস্ব প্রতিনিধি (কুমিল্লা)  :  প্রাণঘাতী বিভিন্ন রোগবালাই থেকে রক্ষা পেতে এবং আপনজনের মঙ্গল কামনার্থে রাখের উপবাস ও ঘৃত প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ব্রত পালন করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
এ সময় প্রদীপ, ধুপ, ফল, ফুল সামনে নিয়ে একাগ্রচিত্তে নারী-পুরুষ, শিশু-তরুণ-বৃদ্ধ নির্বিশেষে মগ্ন থাকেন লোকনাথ ব্রহ্মচারী বাবার আরাধনায়।


বিজ্ঞাপন

এ দিনটিতে লোকনাথ অনুসারী ও ভক্তরা কুমিল্লা মহেশাঙ্গণে গিয়ে প্রদীপ ও ধুপ জ্বালিয়ে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেন। ভক্তদের আগমনে এই স্থানটি তীর্থস্থানে পরিণত হয়। আর চারদিকের ধুপের ধোঁয়া ও প্রদীপের আলোয় এক স্বর্গীয় অনুভূতি হয় ভক্তদের প্রাণে প্রাণে।

এদিকে, মহেশাঙ্গণ শ্রী শ্রী লোকনাথ স্মৃতি তর্পণ সংঘের সভাপতি ননী গোপাল পাল ও সাধারণ সম্পাদক হারাধন ভৌমিক বলেন বিপদ-আপদ ও রোগবালাই থেকে মুক্তি কামনায় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা প্রতি বছর কার্তিক মাসের শেষ পনের দিনের প্রতি শনি ও মঙ্গলবার পালন করে ‘কার্তিক ব্রত’ বা ‘রাখের উপবাস’। অনেকে আবার ‘গোসাইর উপবাস’ ও ‘ঘৃত প্রদীপ প্রজ্জ্বলন’ উৎসব নামেও জানেন। প্রতি বছর কুমিল্লা মহেশাঙ্গণে ঘটা করে এ উৎসব পালিত হয়। আজকে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন অংশ নেন ১৭শ ব্রতী।
তিনি আরও বলেন- প্রাণঘাতী রোগ কলেরা-বসন্তের হাত থেকে বাঁচার জন্য কার্তিক মাসে উপবাস পালন এবং আশ্রম প্রাঙ্গণে ঘিয়ের প্রদীপ ও ধূপ-ধুনা জ্বালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন বাবা লোকনাথ। সেই থেকে বিপদ-আপদ, রোগবালাই থেকে মুক্তি পেতে লোকনাথ অনুসারী ও ভক্তরা পালন করে থাকেন ‘রাখের উপবাস’।

শ্রী শ্রী লোকনাথ যুব সেবা সংঘের সিনিয়র সদস্য এডভোকেট তাপস চন্দ্র সরকার এর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়- বিভিন্ন রোগবালাই থেকে রক্ষা পেতে এবং আপনজনের মঙ্গল কামনায় কার্তিক মাসের শেষার্ধের প্রতি শনি ও মঙ্গলবার রাখের উপবাস পালন করেন লোকনাথ ভক্তরা। সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলন শেষে তারা উপবাস ভাঙেন। এ উৎসব ‘কার্তিক ব্রত’, ‘রাখের উপবাস’ নামে পরিচিত।

তিনি আরও বলেন- দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে কুমিল্লা মহেশাঙ্গণে রাখের উপবাস ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ব্রত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। দূর-দূরান্ত থেকে প্রদীপ হাতে বিকেল ৪টা থেকে ভক্তরা এসে জড়ো হন। এই ব্রতের আগের দিন সংযম থেকে পরদিন উপবাস থেকে সন্ধ্যায় ধূপ-প্রদীপ নিয়ে আরাধনায় বসতে হয়। আরাধনায় বসে প্রদীপ জ্বালানোর পর কথা বলা বন্ধ করে দিতে হয়।

সংযম, মনোব্রতের মাধ্যমে একাগ্রচিত্তে লোকনাথ ব্রহ্মচারী বাবাকে ডাকতে হয়। প্রদীপের আলো নিভে গেলে মন্দির থেকে ফলফলাদি ও চড়ুই প্রসাদ দেওয়া হয় ব্রতী ও পূণ্যার্থীদের।

মহেশাঙ্গণে আসা একজন ব্রতী বলেন, আমি আজকে উপবাস থেকে আমার পরিবারের সকলের মঙ্গল কামণাসহ বিভিন্ন রোগবালাই থেকে মুক্তি পেতে এখানে এসেছি প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করতে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *