মানিকগঞ্জের সিংগাইরের চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত রুবেল হত্যাকাণ্ডের কুলেস মামলার রহস্য উদঘাটন : মূলহোতা  ও তার সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৪

Uncategorized অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক  : মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর থানাধীন এলাকায় চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত রুবেল (৩৬) হত্যাকাণ্ডের কুলেস মামলার রহস্য উদঘাটনপূর্বক হত্যাকান্ডের মূলহোতা মোঃ বিজয় (১৯) ও তার সহযোগী মোছাঃ শ্রাবনী আক্তার (১৮)’কে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৪, এ খবর সংশ্লিষ্ট সুত্রে।


বিজ্ঞাপন

জানা গেছে,  র‍্যাব-৪ সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূল ও মাদকবিরোধী অভিযানের পাশাপাশি খুন, চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই চক্রের সাথে জড়িত বিভিন্ন সংঘবদ্ধ ও সক্রিয় সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের জন্য শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে জোরালো তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে।


বিজ্ঞাপন

এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শুক্রবার ৮ নভেম্বর,  বিকালে র‍্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর থানাধীন ফোর্ডনগর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সিংগাইর থানার চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত রুবেল (৩৬) হত্যাকান্ডের ক্লুলেস মামলার রহস্য উদঘাটনপূর্বক মৃতদেহ উদ্ধারের ০৬ ঘণ্টার মধ্যে মামলার ঘটনার মূলহোতা মোঃ বিজয় (১৯), পিতা- মোঃ আঃ সালাম, সাং- ফোর্ডনগর, থানা- সিংগাইর, জেলা- মানিকগঞ্জ এবং তার অন্যতম সহযোগী মোছাঃ শ্রাবনী আক্তার (১৮), স্বামী- মোঃ আলআমিন, সাং- ফোর্ডনগর, থানা- ধামরাই, জেলা- ঢাকা’কে মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর থানাধীন ফোর্ডনগর এলাকা হতে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ও ঘটনার বিবরণে জানা যায় যে, উক্ত হত্যাকান্ডের মূলহোতা মোঃ বিজয় (১৯) ও তার অন্যতম সহযোগী মোছাঃ শ্রাবনী আক্তার এবং ভিকটিম পরস্পর প্রতিবেশী ছিল। শ্রাবনী আক্তার সম্পর্কে ভিকটিমের প্রতিবেশী ভাতিজি। খেয়া পারাপার এর সময় বিজয়ের সাথে শ্রাবনী আক্তারের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে ভিকটিম ঘটনার ৫ দিন পূর্বে বিজয়কে উক্ত ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করে এবং বিজয়ের ব্যবহৃত মোবাইল হেফাজতে নিয়ে কৌশলে বিজয় ও শ্রাবণীর স্পর্শকাতর ছবি নিজের ব্যক্তিগত মোবাইলে নেয় এবং ভিকটিম শ্রাবনীকে রাস্তায় একা পেয়ে তার ও বিজয়ের স্পর্শকাতর ছবির কথা উল্লেখ করে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য কুপ্রস্তাব দেয় এবং ভিকটিম আরও বলে যে, উক্ত কুপ্রস্তাবে রাজি না হলে শ্রাবণীর ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেবে। শ্রাবণী ভিকটিমের প্রস্তাবের বিষয়টি সাথে সাথে বিজয়কে জানায়।

এর পর থেকেই ভিকটিম প্রায়শই মোবাইল ফোনে শ্রাবণীকে কুপ্রস্তাবের বিষয়ে বলে। ভিকটিম উপায়ান্তর না পেয়ে পুনরায় বিজয়কে জানায়। উক্ত কারণে বিজয় ও শ্রাবণী ভিকটিমের উপরে ক্ষিপ্ত হয়ে ভিকটিমকে হত্যার পরিকল্পনা করে বলে আসামিদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়।

গত ৬ নভেম্বর  মাঝরাতে মোবাইলের মাধ্যমে ভিকটিম শ্রাবণীকে কুপ্রস্তাব দেয় এবং তার বাড়িতে আসবে বলে জানায়। ভিকটিমের উক্ত কুপ্রস্তাব পেয়ে শ্রাবণী বিজয়কে মোবাইলে ঘটনার বিষয়ে জানালে হত্যার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিজয় শ্রাবণীকে ফোর্ডনগর সাকিনস্থ আক্তার ডেইরী ফার্ম সংলগ্ন ধলেশ্বরী নদীর পাড়ে ভিকটিমকে নিয়ে আসতে বলে। ভিকটিম শ্রাবণীর ফোন পেয়ে উল্লেখিত স্থানে পৌঁছে শ্রাবণীর সাথে দেখা করে কথাবার্তা বলতে থাকে।

উল্লেখিত স্থানে পূর্বে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা বিজয় পিছন থেকে এসে ভিকটিমের মাথার পিছনে ইট দিয়ে আঘাত করলে ভিকটিম মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।

এরপর  শ্রাবণী ভিকটিমের পা চেপে ধরে এবং বিজয় তার সাথে থাকা কাপড় কাটার বড় কেচি দিয়ে ভিকটিমের মাথায় ও গলায় উপুর্যপুরি আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে ভিকটিমের মৃতদেহ ও আলামত নদীর মধ্যে ফেলে ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়।

গতকাল শুক্রবার  ৮ নভেম্বর  সকালে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে মৃতদেহটি দেখতে পেয়ে সিংগাইর থানা পুলিশকে সংবাদ দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতপূর্বক মৃতদেহ মর্গে প্রেরণ করেন। উক্ত ঘটনার রহস্য উদঘাটনে র‍্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল দ্রুততম সময়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং পরবর্তীতে উক্ত ঘটনার রহস্য উদঘাটনপূর্বক হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত উল্লেখিত বিজয় ও শ্রাবনীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামীদের সিংগাইর থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *