বিশেষ প্রতিবেদক : সীমান্ত নদী জাদুকাটার পাড় (তীর) কেটে খনিজ বালি পাথর চুরির আরেক হোতা মোশাহিদ হোসেন রানু মেম্বার ফের কারাগারে। বহুল আলোচিত বিতর্কিত রানু সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও ঘাগটিয়া (আদর্শ) গ্রামের মৃত এখলাছ মিয়ার ছেলে।
গতকাল শনিবার রাতে তাহিরপুর থানার ওসি দেলেয়ার হোসেন জানান, একটি নিয়মিত মামলার পলাতক আসামি হিসাকে গ্রেফতারের পর রানুকে শুক্রবার বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এরপুর্বেও রানু অপর একটি মামলায় দীর্ঘদিন জেল হাজতে ছিল বলেও জানান ওসি।
থানা পুলিশ ও স্থানীয় এলাকাাসী জানান,তাহিরপুরের ঘাগটিয়া (আদর্শ) গ্রামের মৃত এখলাছ মিয়ার ছেলে মোশাহিদ হোসেন রানু দ্বীর্ঘ এ যুগের বেশী সময় ধরে কখনো কখনো জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা, নেতার ভাই আবার কখনো জেলা পরিষদ, নিজের জায়গা দাবি করে খনিজ বালি পাথর সমৃদ্ধ সীমান্ত নদী জাদুকাটা থেকে অবৈধভাবে চুরি করে নেয়া বিভিন্ন বালি পাথর কারবারিদের নিকট থেকে লাখ লাখ টাকা চাঁদাবাজি করে আসছিলো।
অভিযোগ রয়েছে , চাঁদাবাজির পাশাপাশী বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর নিজেই নিজের গ্রাম ঘাগটিয়াসহ বিভিন্ন গ্রামের ৫০ থেকে ৬০ জনের নেশাগ্রস্থ যুবকদের সংগঠিত করে দিবারাত্রী জাদুকাটা নদীর তীরবর্তী বড়টেক, পাঁকা সড়কের মাথা, আদর্শ গ্রামের পুকুর সহ সরকারি খাঁস খতিয়াভুক্ত নদীর চর ও পাড়কেটে, একাধিক সেইভ, ড্রেজার, বোমা মেশিন দিয়ে খনিজ বালি পাথর চুরি করে অন্যত্র বিক্রয় করে আসছিলো।
এসব অপকর্মে রানু বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কিছু অসৎ নেতা, গোটা কয়েক কথিত সাংবাদিক, থানা, থানার বাদাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশের কিছু অসৎ সদস্যকে দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসোহারা দিয়ে ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় খনিজ সম্পদ বালি পাথর চুরি করে বিক্রিতে সিদ্ধহস্ত হয়ে উঠে।
উপজেলার জাদুকাটা নদী সংলগ্ন পাটলাই নদীর উৎস মুখ, মাহারাম নদীর উৎস মুখ , জাদুকাটা নদী তীরবর্তী বড়টেক,পাকা সড়কের মাথা, ঝালোর টেক, বড়ইবাগ সহ নদী তীরবর্তী সরকারি খাঁস খতিয়াভুক্ত জায়গা ছাড়াও নিজ গ্রামের হতদরিদ্র জয়নাল আবেদীন, মজিবুর, আবদুল কাইয়ুমসহ প্রায় অর্ধশতাধিক নিরীহ মানুষজনের জায়গা জবর দখল করে বালি পাথর চুরি করে বিক্রয় করে আসছিলো রানু এবং তার প্রাইভেট বাহিনীর সদস্যরা।
উপজেলার ঘাগটিয়া গ্রামের ভোক্তভোগী জয়নাল আবেদীন, মজিবুর রহমান, আব্দুল কাইয়ুম বলেন, রানুর লালিত প্রাইভেট বাহিনীর সদস্যরা রাতে বালি পাথর চুরিতে যাওয়ার পুর্বে ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকসেবন করে হাতে হাতে রামদা, দা, ছেল , কাঠের রোল, হাতুড়ি নিয়ে নদীর তীরে অবস্থান করত। এসব নিয়ে একাধিক বার সংঘর্ষ হয়, হয় মামলাও কিন্তু কোন কিছুতেই ধমেনি রানু ও তার প্রাইভেট বাহিনীর সদস্যরা।
পরিবেশবাদী সংগঠক ও সমাজ উন্নয়নকর্মী সারোয়ার জাহান বলেন,সীমান্ত নদী জাদুকাটার তীরে রানু ও তার প্রাইভেট বাহিনীর দখলবাজিতে অনেক নিরীহ মানুষ বসতভিটা, ফসলী জমি খুঁইয়েছেন। একই ভাবে বছরের পর বছর ধরে তার পরিবেশধ্বংসী অপকান্ডে সরকারের কয়েক শত কোটি টাকার খনিজ বালি পাথর চুরি হয়েছে নির্ব্রিগ্নে।