কোম্পানীগঞ্জ (সিলেট) প্রতিনিধি : সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় পুলিশ ও বিজিবির নাকের ডগায়ই মাদক সম্রাট নাছির উদ্দিন বিরামহীন চালিয়ে যাচ্ছে মাদক ব্যবসা। নাছির উদ্দীনের নিজ বাড়িতে রেখেও মাদক ব্যবসা করে আসছে এবং মাদক ব্যবসায় রয়েছে তার বিশাল নেটওয়ার্ক সঙ্গে রয়েছে শক্তিশালী বাহিনী।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ২নং পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডে শিবনগর গ্রামের মৃত ইজ্জত আলীর ছেলে নাছির উদ্দীন (৪০)কে এলাকাবাসী তাকে ‘মাদক ডন’ বলেই চেনে। সে সবাইকে ম্যানেজ করে মাদক বিক্রি করে আসছে দীর্ঘ দেড় যুগেরও বেশী সময় থেকে। স্থানীয় এলাকার কেউ প্রতিবাদ প্রতিরোধ করার জন্য চেষ্টা করলে দেওয়া হয় প্রকাশ্যে হুমকি, ধামকি, হামলা, মামলার শিকার হতে হয়। জীবনের নিরাপত্তার চিন্তা করে ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পায় না মাদক সম্রাট নাছির উদ্দিন ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, থানা পুলিশ ও বিজিবি এবং ডিবি পুলিশকে ম্যানেজ করেই কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ২ নং পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নেই কমপক্ষে ৪০টি স্পটে প্রকাশ্যে মাদকদ্রব্য সাপ্লাই দিয়ে আসছে।
মাদক সম্রাট নাছির উদ্দীনের সহযোগীদের মধ্যে রয়েছে তার শালা, সম্বন্ধী, ভায়রাভাই, খালাতো ভাইয়েরা সহ তার ভাগিনা, ভাগিনাদের চাচাতো ভাই সহ তার নিকটাত্মীয়রা। শিবনগর গ্রামের হুছন আলীর ছেলে ফয়জুল মিয়া (৪০) তার ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন (২৮),সহ বাবুল, আনসার, রেদোয়ান, জুনায়েদ, ফরহাদ, তারেক, কামাল, আশিক, আলাউদ্দিন, আইন উদ্দিনসহ অনেকে। মাদক সম্রাট নাছির উদ্দীনের জমজমাট মাদক ব্যবসার কারণে কোম্পানীগঞ্জে হাত বাড়ালেই মিলছে মদ, গাঁজা, ফেনসিডিল, হেরোইন, ইয়াবা ও অবৈধ ভারতীয় নাছির উদ্দীন বিড়ি।
এলাকায় মাদক বিক্রি হওয়াটা এখন স্বাভাবিক বলে মনে করে অনেকেই। এ ব্যাপারে কোনো রাখঢাকও নেই। সন্ধ্যার পর থেকে রাস্তাঘাটে পাড়া মহল্লায় মাদক ঘুরে ঘুরে ফেরি করে বিক্রি করছে এমন অভিযোগ করেন অনেকে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলার কমপক্ষে ৪০টি স্পটে ফেনসিডিল, মদ, গাঁজা ও ইয়াবার বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা এখন পুলিশ, বিজিবি ও ডিবি পুলিশের সাথে নাকি মাসিক চুক্তি করে নাছির উদ্দিনের সাহায্যে মাদক ব্যবসা চালাচ্ছে। এই চক্রের মাদক ব্যবসার শেল্টারদাতা নাকি অনেক প্রভাবশালী নেতারা। এদের মধ্যে আওয়ামীলীগ ও বর্তমানে বিএনপির নেতাদের নামও বলছেন অনেকে।
এ সকল প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় চক্রটি নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে মাদক বিক্রি করে থাকেন। মাদক সহজলভ্য হওয়ায় এলাকার উঠতি বয়সি তরুণদের সঙ্গে কিছু সংখ্যক যুবক, বৃদ্ধারাও নেশার দিকে ঝুঁকে পড়েছে। ইদানিং মাদকাসক্ত পরিস্থিতিটা উপজেলার পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড সহ আশপাশ এলাকায় ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন সংবাদকর্মীদের জানান, পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় হেরোইন, গাঁজা, ইয়াবা, ফেনসিডিলে সয়লাব হলেও এগুলো দেখার কেউ নেই। যারা বন্ধ বা প্রতিরোধ করবে তারাই এ ব্যবসায়ীদের সাথে জড়িত হয়ে নিরব ভূমিকা পালন করছে। এ মরণনেশা মাদকে দিন দিন এলাকার তরুণরা আসক্ত হচ্ছে।
তারা আরো জানান, মাদক সেবনকারীদের উৎপাতে দূষিত হচ্ছে সমাজ। এলাকায় প্রতিনিয়ত বাড়ছে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, মারামারিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড।
পুলিশ ও র্যাব লোক দেখানো অভিযান চালায় মাঝে মধ্যে। কিন্তুু এসব অভিযানে মাদক ব্যবসায়ীদের ধারেকাছেও যেতে অক্ষম স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। মাদক সম্রাট নাছির উদ্দিনের নেতৃত্বে নির্বিঘ্নে চলছে মাদক ব্যবসা। বরং দিন দিন এলাকায় মাদক ব্যবসা ও মাদক সেবনকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিনিয়ত যুবক ও তরুণরা যোগ দিচ্ছে মাদক সেবনের সাথে ব্যবসায়ও।
এ ব্যাপারে কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ জানান, চোরাচালান ও মাদক ব্যবসায় জড়িত সে যেই হোক না কেন তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তথ্য পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিবো।
এরকম সবাই দেখেও কিছু দেখছেনা কেন অজানা কারনে। চোরাচালান ও মাদকের প্রতি নজর না দেয়া কিংবা এতদসংক্রান্ত জনগুরুত্ব আরোপ না করায় মাদকে ভাসমান জনপদ, বেপরোয়া নাছির উদ্দিন চক্র!