নিজস্ব প্রতিবেদক : শীতের হিমেল হাওয়া চারপাশে বইতে শুরু করেছে; ইতোমধ্যে কমতে শুরু করেছে আশপাশের তাপমাত্রা। শীত আরও বাড়তে থাকার সাথে সাথে আমাদের প্রতিদিনের জীবনেও কিছু পরিবর্তন আসবে। যেমন, এই সময়ে আমাদের এয়ার কন্ডিশনারগুলো (এসি) বন্ধ করে রাখতে হবে। তবে, এসি দীর্ঘসময় বন্ধ করে রাখলে এর যন্ত্রাংশের ক্ষতি হতে পারে—গরমের সময় আবার চালু করতে গিয়ে প্রয়োজন হতে পারে অতিরিক্ত সার্ভিসিং খরচ। ঠিকঠাকভাবে এসির যত্ন না নেয়া গেলে যন্ত্রাংশে ক্ষয় যেমন হতে পারে, তেমনি এর ওপর ধুলাবালির আস্তরণ পড়তে পারে; ফলে, কমে যেতে পারে কার্যক্ষমতা।
আবহাওয়া-জনিত ক্ষতি, মরিচা ধরা, ধুলো-ময়লা জমা রোধ করে এসি সুরক্ষিত রাখার প্রক্রিয়াকে বলা হয় উইন্টারাইজিং। এই প্রক্রিয়াটি বাংলাদেশের মতো আর্দ্র অঞ্চলে এসিগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে বেশ কার্যকর।
তাই, শীত পুরোদমে জেঁকে বসার আগেই কীভাবে উইন্টারাইজ করার মাধ্যমে এসিকে সুরক্ষিত রাখতে পারি, চলুন আজ জেনে নিই।
এসি পরিষ্কার করুন : প্রথমেই এসি বন্ধ করে ফিল্টার বের করে নিন। এরপর খুব সাবধানতার সাথে ফিল্টার ও ভেন্ট মুছে নিন। পরিচ্ছন্ন ফিল্টার আপনার এসির ভেতরে বাতাসের নিরবচ্ছিন্ন প্রবাহ নিশ্চিতে কাজ করবে। এরপর একটি নরম কাপড় দিয়ে ইভেপোরেটর কয়েল থেকে ধুলো-ময়লা মুছে ফেলতে হবে। এতে করে এসির ভেতরকার অস্বস্তিকর গন্ধ কমে আসবে। এসিতে ফ্রিজ ওয়াশ বা অটো ড্রাইয়ের মতো ফিচার থাকলে, ইভেপোরেটর কয়েল ম্যানুয়ালি পরিষ্কার করার বদলে এগুলো ব্যবহার করুন।
জমে থাকা পানি ফেলুন : এয়ার কন্ডিশনারে কুলিং প্রসেস চলার সময় এর ভেতরে থাকা কনডেনসেট প্যানে পানি জমে থাকে। তাই, সেখানে নোংরা-ময়লা না জমাতে চাইলে এবং দুর্গন্ধ থেকে মুক্ত থাকতে চাইলে এই জমে থাকা পানি ফেলে দিতে হবে। এরপর, অপ্রত্যাশিত ঝামেলা এড়াতে আবার এসি ব্যবহার শুরু করার আগে ড্রেইন লাইনটি ভালোভাবে দেখে নিন। লাইনে কোনো ধরনের লিক নেই, তা নিশ্চিত করে নিন।
এসি ঢেকে রাখুন : পরিষ্কার করা ও জমা পানি ফেলা হয়ে গেলে আর্দ্রতা, পোকামাকড় ও ধুলা থেকে সুরক্ষিত রাখতে এসি ঢেকে রাখুন। এক্ষেত্রে, ওয়াটারপ্রুফ কভার ব্যবহার করলে ভালো হবে। সম্ভব হলে, মাঝেমাঝে কিছু সময়ের জন্য হলেও এসি চালিয়ে দেখে নিতে হবে সব ঠিকঠাক আছে কিনা!
এই কাজগুলো এখন আপনি নিজেই করতে পারবেন। তবে, এসির ইন্টারনাল কম্পোনেন্ট ঠিক আছে কিনা দেখতে, ডিপ ক্লিন করতে এবং এই শীতের পরেও এসিকে আগের মতো সচল রাখতে প্রফেশনাল কারও সহায়তা নেয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে, স্যামসাংয়ের মতো বিশ্বস্ত ব্র্যান্ডগুলো এসি সহ বাকি গৃহস্থালি অ্যাপ্লায়েন্সের সুরক্ষায় সুদক্ষ প্রফেশনালদের নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। এসি উইন্টারাইজ করার ক্ষেত্রে তারা আপনাকে সহায়তা করতে পারে।
বাংলাদেশের আবহাওয়ায় এসি ঠিক রাখতে এর উইন্টারাইজ করা অত্যন্ত জরুরি। তবে, ওপরের পদক্ষেপগুলো যথাযথভাবে সম্পন্ন করা হলে বলা যায়, শীত শেষে গরম আসলেও আপনার এসি স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করবে। এসিকে সুরক্ষিত রাখার উপায়গুলো আমরা জেনে নিলাম। এখন আমাদের দায়িত্ব দরকারি এই টিপসগুলো আমাদের কাছের মানুষদের জানানো এবং প্রয়োজনে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের সাথে আলাপ করা। আপনার এবারের শীত আনন্দে কাটুক!