র্যাবের হাতে গ্রেফতার মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় থানার চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত নুরজাহান কুলেস হত্যার হত্যাকান্ডের মূলহোতা মোঃ আলিফ।
নিজস্ব প্রতিবেদক : মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় থানার চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত নুরজাহান (৩৩) কুলেস হত্যার রহস্য উদঘাটনপূর্বক মৃতদেহ উদ্ধারের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকান্ডের মূলহোতা মোঃ আলিফ (২৭)’কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪, সিপিসি-৩, মানিকগঞ্জ, এ খবর সংশ্লিষ্ট সুত্রের।
জানা গেছে, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূল ও মাদকবিরোধী অভিযানের পাশাপাশি খুন, চাঁদাবাজি, ডাকাতি ও অস্ত্রধারী সংঘবদ্ধ ও সক্রিয় সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতারে র্যাবের জোড়ালো তৎপরতা অব্যাহত আছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২২ নভেম্বর ২০২৪ বিকাল ৫ টা ০০ মিনিটের সময় তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় র্যাব-৪, সিপিসি-৩ এর একটি চৌকশ আভিযানিক দল মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় থানার চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত নুরজাহান (৩৩) ব্লুলেস হত্যার রহস্য উদঘাটনপূর্বক মৃতদেহ উদ্ধারের ৭২ ঘন্টার মধ্যে হত্যাকান্ডের মূলহোতা মোঃ আলিফ (২৭)’ কে টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর খানাধীন সলিমাবাদ এলাকা হতে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীর নাম ও ঠিকানা যথাক্রমে, মোঃ আলিফ (২৭), পিতা- মোঃ আতোয়ার ও আকালী, সাং- বোয়ালীপাড়া, থানা- শিবালয়, জেলা- মানিকগঞ্জ।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও ঘটনার বিবরণে জানা যায় যে, ভিকটিম নুরজাহান ও বিবাদী মোঃ আলিফ (২৭) একই সাকিনে বসবাস করে এবং উভয়ই একে অপরের প্রতিবেশী।
ভিকটিমের স্বামীর সাথে বিবাদীর ব্যবসায়িক সম্পর্ক থাকায় বিবাদী প্রায়শই ভিকটিমের বাড়িতে যাতায়াত করত। এছাড়াও বিবাদী ভিকটিমের স্বামীর সাথে ব্যবসায়িক বিষয়ে যোগাযোগ রক্ষার্থে মাঝেমাঝে ভিকটিমের মোবাইলে যোগাযোগ করত।
উক্ত যোগাযোগের সূত্র ধরে ভিকটিম ও বিবাদীর মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে উভয়ের সম্মতিক্রমে তারা অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি ভিকটিমের স্বামী ও আশেপাশের লোকজনের কাছে জানাজানি হলে ভিকটিম ও ভিকটিমের স্বামীর মধ্যে মনোমালিন্য হয়।
মনোমালিন্যের ফলে ভিকটিমের স্বামী বিবাদীর সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিনু করে এবং বিবাদীকে ভিকটিমের সাথে কোনরুপ কথা ও দেখা না করতে অনুরোধ করে। পরবর্তীতে ভিকটিম বিবাদীর সাথে বেশ কিছুদিন ধরে যোগাযোগ বন্ধ রাখলে বিবাদী ভিকটিমকে ফোন করে সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে এবং তার সাথে এক বারের জন্য হলেও দেখা করতে বলে।
ভিকটিম এক পর্যায়ে বিবাদীর অনুরোধে বিবাদীর কথা অনুযায়ী গত ১৮ নভেম্বর রাত অনুমান ৭ টা ২০ মিনিটের সময় মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় থানাধীন বোয়ালীপাড়া সাকিনস্ব জনৈক বিল্লাল হোসেনের ঘাসের জমিতে দেখা করতে গেলে বিবাদীর পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিবাদী ভিকটিমের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে বিবাদীর সাথে থাকা ছুরি দিয়ে ভিকটিমের গলা, বুক ও পেট কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
এরপর গত ১৯ নভেম্বর, দুপুর ২ টা .২০ মিনিটের সময় ভিকটিমের বাবা ও স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে মৃতদেহটি দেখতে পেয়ে শিবালয় থানা পুলিশকে সংবাদ দিলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতপূর্বক মৃতদেহ মর্গে প্রেরণ করে।
উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে শিবালয় খানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যার শিবালয় থানার মামলা নং-০৮, তারিখঃ ২০/১১/২০২৪ ইং, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড।
উক্ত হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে র্যাব-৪, সিপিসি-৩, মানিকগঞ্জ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল তথ্য-প্রযুক্তি ও ঘটনাস্থলে থাকা পারিপার্শ্বিক আলামত এবং তথ্যের ভিত্তিতে উক্ত ঘটনার রহস্য উদঘাটন পূর্বক ঘটনার সাথে জড়িত অভিযুক্ত মোঃ আলিফ (২৭)’কে টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর থানাধীন সলিমাবাদ এলাকা হতে আটক করতে সক্ষম হয়।
আটকের পর অভিযুক্ত মোঃ আলিফ (২৭)’কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করে।গ্রেফতারকৃত আসামীকে শিবালয় থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।