নিজস্ব প্রতিবেদক : সম্প্রতি রাজধানীর বনানী থানাধীন ১৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুনকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। এ বিষয়ে ওয়ার্ডের মানুষের ও স্থানীয় বিএনপি নেতাদের প্রতিক্রিয়া জানতে চেষ্টা করেছি আমরা। তা নিয়ে আজকের প্রতিবেদন।
ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া হয়েছিল, “১৯নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন এর বহিষ্কার প্রসঙ্গে কারো কোনো বক্তব্য থাকলে কমেন্টে অথবা ইনবক্সে জানাতে পারেন। এছাড়া আবদুল্লাহ আল মামুন সম্পর্কে আপনার মতামত জানাতে পারেন! ব্যাক্তি জীবনে তিনি কেমন? তার কর্মকাণ্ড সম্পর্কে? এসব আরকি! কমেন্টে-ইনবক্সে বক্তব্য/মতামতের শেষে আপনার পরিচয় উল্লেখ করে দিবেন।” এতে ৪৭ জন তাদের ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি প্রতিক্রিয়া ‘আজকের দেশ.কম’ এ ধরা হলো-
বনানী থানা ছাত্রদলের সভাপতি নাঈম উদ্দিন মিজবাহ প্রতিক্রিয়ায় লিখেছেন, ‘আমার বনানী থানা আওতাধীন ১৯নং ওয়ার্ড বিএনপির রেকোর্ড সংখ্যক ভোটে নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক জনাব,আব্দুল্লাহ আল মামুন একজন দক্ষ সংগঠক,পরিশ্রমি,ত্যাগি এবং দলের প্রতি ১০০%কমিটেড নেতা। দূর্দিনে দলের প্রতি উনার ভুমিকার কোন বিতর্ক নাই,উনি ফ্যাসিস্ট সরকার কর্তৃক ৪টি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত।তাই দলের প্রয়োজনে তার পুনঃতদন্তের মাধ্যমে একটি ন্যায্য সমাধানের আশা রাখছি।’
নাদিম হোসেন নামে একজন প্রতিক্রিয়ায় লিখেছেন, ‘একজন সৎ ও নীতিবান, নির্ভীক নেতা উনার বিরুদ্ধে বারবার মিথ্যা মামলা দিয়ে উনাকে হয়রানি করা হয়েছে।উনি রাজনৈতিকভাবে আদর্শিক ও কর্মীবান্ধব নেতা,যে মানুষটা দলের দুঃসময়েও ১৯ নং ওয়ার্ড বিএনপিকে গুছিয়ে রেখেছেন।প্রত্যেকটা ইউনিট নেতাকর্মীর সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রেখেছেন,আমার দেখা বিএনপি’র মধ্যে যতগুলো মানুষ স্বার্থহীন ও শর্ত হীন ভাবে কাজ করে তার মধ্যে মামুন ভাই একজন।এছাড়া ও আমার জানামতে আমাদের গুলশান ও বনানী থানা কিংবা ১৯ নং ওয়ার্ড বিএনপি’র যে কোন নেতা বা কর্মী,স্বৈরাচার হাসিনার শাসন আমলে কারা নির্যাতিত হয়া প্রত্যকের পরিবার পরিজনের সাথে সার্বক্ষণ যোগাযোগ রেখেছেন।আব্দুল্লাহ আল মামুন ভাই একজন আদর্শবান রাজনীতিবিদ,জিয়ার আদর্শে ঘেরা একজন শত ও নিষ্ঠাবান,রাজপথের ত্যাগী ও লড়াকু সৈনিক।মামুন ভাইয়ের ত্যাগ,কর্মীদের প্রতি দায়িত্ব মমতা বোধ লিখে ভাষায় যা প্রকাশ করা সম্ভব নয়।এমন একজন সৎ দক্ষ ও আদর্শবান ব্যক্তি,দল ও দেশের জন্য গুরুত্ব বহন করে। গুলশান ১ নং ইউনিটের পক্ষ থেকে,বিনীত অনুরোধ করবো, মামুন ভাইয়ের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাখ্যান করা হোক।’
সাইফ আহমেদ নামক আরেকজন তার মতামত লিখেছেন, ‘রাজনীতি বরাবরই দুঃসাহসী ব্যক্তিদের খেলা, কোন কাপুরুষের খেলা নয়। রাজনীতিতে উত্তপ্ত রাজপথে বুলেটের সামনে যেমন বুক পেতে দেওয়ার সাহস রাখতে হয়, তেমনি বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক মারপ্যাঁচে ষড়যন্ত্র কে মোকাবিলা করার জন্য সাহসও রাখতে হয়।
রাজনীতি মাঠে হাজারও বাধা বাধ্যবাধকতা আছে থাকবে এবং চলমান তা দোষের কিছু না, তবে ত্যাগি সাহসী রাজপথে যাদের ঠিকানা তাদের কে হারানোর জন্য কঠিন চক্রান্ত করা হচ্ছে দোষ।
ত্যাগিরা সবসময়ই রাজপথে থাকে বলেই অনেক সময়ে কঠিন চক্রান্তের মাঝে পড়তে হয়,তবে Overcome করে ঠিকই ত্যাগীরা ফলাফল নিয়ে আসে,সেটুকু সময়ের জন্য দরকার হয় ধৈর্য্য
ইনশাআল্লাহ জনাব আবদুল্লাহ আল মামুন কে নিয়ে যতই ষড়যন্ত্র করা হোক,কোন লাভ হবেনা কারন সামনে এমন চমকপ্রদ কিছু অপেক্ষা করছে যা হয়ত ষড়যন্ত্রকারিরা কখনও কল্পনাও করে নি, তার চাওয়ারও অনেক উর্ধ্বে।
রাজনীতি একটা ম্যারাথন,একটা দীর্ঘমেয়াদী খেলা। এখানে সাময়িক চিন্তার কোন অবকাশ নেই, সবই এখানে শিক্ষার অংশ। জনাব আবদুল্লাহ আল মামুন একদিনে রাজপথে সৃষ্টি হয়েনি,বহু চড়াইউৎড়াই হাটি হাটি পা পা করে জিয়া পরিবারের বিশ্বাস্ত হয়েছে।এর ঐদিক মামলা ঘাড়ে নিয়ে বছরের পর বছর নেতাকর্মীদের বুকে নিয়ে রাজপথে ছিল।
এই তো সেইদিনের কথা ৫ই আগষ্ট আমরা যখন নতুন স্বাধীন দেশ পেয়েছি, কাদের ভূমিকা ছিল রাজপথে নিশ্চয়ই আমাদের জানা রয়েছে সেদিন দেশনায়ক জনাব তারেক রহমানের নির্দেশ ঢাকায় আন্দোলনের জন্য যারা ঝাপিয়ে পড়েছিল তাদের মধ্যে অন্যতম ছিল জনাব আবদুল্লাহ আল মামুন। জনাব তারেক রহমান যেভাবে গাউড লাইন করেছিল সুদূর লন্ডন থেকে ঠিক সেভাবে প্রতিটি নির্দেশনা পালন করেছিল জনাব আবদুল্লাহ আল মামুন। এই কঠিন আন্দোলন যখন তীব্র থেকে তীব্র হচ্ছিল তখনি স্বৈরাচার হাসিনা জনাব আবদুল্লাহ আল মামুন কে গ্রেফতার করানোর জন্য বিভিন্ন বাহিনী কে সরাসরি হুকুম করেছিল।জীবিত হোক আর মৃত হোক আবদুল্লাহ আল মামুন কে ধরতেই হবে।
আন্দোলন সংগ্রামে যখন নিজের জীবন বাজি রেখে নেতাকর্মীদের কে নিয়ে রাজপথ যার ঠিকানা,তাকে দমিয়ে রাখার কার সাধ্য কার! ইনশাআল্লাহ কোন ষড়যন্ত্রকারি ষড়যন্ত্র করে কোন কিছু ই করতে পারবেনা। পরিশেষে জনাব আবদুল্লাহ আল মামুন এর দীর্ঘায়ূ সুস্থতা কামনা করছি।’
গুলশান-১ নং ইউনিট বিএনপির সভাপতি আলমগীর হোসেন প্রতিক্রিয়ায় লিখেছেন, ‘১৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন ভাইকে অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে,যে নেতা দুর্দিনে কর্মীদের খোঁজ খবর রেখেছে, কর্মীদের আপদে বিপদে পাশে দাঁড়িয়েছেন, আজকে সুদিনে ঐ নেতা বহিষ্কার। মামুন ভাই শত পরিশ্রমী ও ত্যাগী নেতা, মামুন ভাইয়ের বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করা হোক।’
মোঃ বাদশা লিখেছেন, ‘যে সন্ত্রাস চাঁদাবাজ এর বিরুদ্ধে ১৬ বছর ধরে রাস্তায় সংগ্রাম করে এসেছে আজ তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এটা গ্রহণযোগ্য নয় ১৯ নং ওয়ার্ড সন্ত্রাস চাপাবাজি মুক্ত করার জন্য মামুন ভাইয়ের বিকল্প নেই তাই অবিলম্বে তারপদ ফেরত দিয়ে তাকে পূর্ণ বহল করার জোর দাবি জানাচ্ছি। প্রচারে ১৯ নং ওয়ার্ড ২ নং ইউনিট বউ বাজার যুবদল।’
যুবদল নেতা মঈনুল তালুকদার লিখেছেন, ‘আমার জানামতে আব্দুল্লাহ আল মামুন ভাই একজন সৎ, পরিশ্রমী, ত্যাগি,নেতা। ওনার বিরুদ্ধে একটি কুচক্রী মহল গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল দীর্ঘদিন এবং এখনো আছে। ওনার বহিষ্কার পত্র প্রত্যাহার করে ওনাকে পুনরায় কাজ করার সুযোগ দেয়ার দাবি জানাচ্ছি। উনি একজন পরিপূর্ণ সৎ ও ভালো মানুষ। ওনার প্রতি অবিচার হলে এটা খুব কষ্টের হবে ১৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির জন্য।১৯ নং ওয়ার্ড ২ ইউনিট যুবদল বনানী।’
বিএনপি কর্মী মোঃ নাজমুল হোসাইন লিখেছেন, ‘১৯ নং ওয়ার্ডের মামুন ভাই বিএনপির সাধারণ সম্পাদক উনাকে আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রায় ২০ বছর ধরে জানি উনি সৎ ব্যক্তি এবং সংগ্রামী রাজপথের এবং তৃণমূলের কর্মীর নেতা অনেক মামলার শিকার হয়েছেন আওয়ামী লীগের আমলে। মামুন ভাই তৃণমূলে খোঁজখবর সবসময় সব সময় আমাদের খবর রাজপথের এই সংগ্রামী সৈনিককে আমরা কোনভাবেই হারাতে চাই না পুনরায় আমরা দাবি জানাচ্ছি তাকে সম্মান করে ফিরিয়ে দিতে নিতেন। রাজপথের এই সংগ্রামের সৈনিককে আমরা কোনভাবেই হারাতে চাই না পুনরায় আমরা দাবি জানাচ্ছি তাকে পুনরায় তার পথ ফিরে জন্য দাবি জানাচ্ছি দাবি জানাচ্ছি, ১৯ নং ওয়ার্ডের বিএনপি’র তৃণমূল এর কর্মী।’
আল মামুন সানু প্রতিক্রিয়ায় লিখেছেন, ‘১৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন ভাইকে অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে,যে নেতা দুর্দিনে কর্মীদের খোঁজ খবর রেখেছে, কর্মীদের আপদে বিপদে পাশে দাঁড়িয়েছেন, আজকে সুদিনে ঐ নেতা বহিষ্কার। মামুন ভাই শত পরিশ্রমী ও ত্যাগী নেতা, মামুন ভাইয়ের বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করা হোক।’
হাসান চৌধুরী লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল মহানগর থেকে। আমি সাধারণ কর্মী হিসাবে এমন কিছু আশা করি নাই একজন সৎ আদর্শবান ব্যক্তিকে এভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। যা আমরা ১৯ নম্বর ওয়ার্ড আহবায়ক কমিটি ও সাতটা ইউনিট কর্মীদের ভোটে সাধারণ সম্পাদক মামুন ভাই নির্বাচিত হইছে। সিলেকশনে না ইলেকশনে ইউনিটির ওয়ার্ডের সবাই ভালোবাসে ওনাকে। উনার কতটুক জনপ্রিয়তা ও আদর্শবান নেতা হলে মহানগর খুশি হবে প্রায় ২০০ জন কর্মী কে কর্মীবান্ধব একটা সমিতি করা হয়েছে একমাত্র কর্মীদের স্বার্থে। মহানগরের কাছে অনুরোধ করব আপনারা ভালোভাবে যাচাই করেন। আমার জানার মত ভুল করতে পারে না কারণ যেই লোক বিএনপি’র সাথে কাজ করে উনার দ্বারা অপরাধ করা বিশ্বাস করি না আবারো সুযোগ দেয়ার জন্য আমি মহানগরকে কাছে আকুল আবেদন। বনানী ইউনিট যোগ্য সাধারন সম্পাদক।’
এছাড়া আরো অনেকেই তাদের প্রতিক্রিয়ায় আবদুল্লাহ আল মামুনের বহিস্কারের আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, দলীয় শৃঙ্খলা ও নীতি-আদর্শ পরিপন্থি অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগের ভিত্তিতে বনানী থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম মাজেদ এবং বনানী থানাধীন ১৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুনকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক (দপ্তরের দায়িত্বে) এ বি এম এ রাজ্জাকের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
Post Views: 6