নাসিম উদ্দিন হাওলাদার।
নিজস্ব প্রতিবেদক : দেড়যুগ আগেও যার স্বপ্ন ছিল কোনরকমে খেয়েপরে বেচে থাকা, এখন তার স্বপ্ন দেখতে হয়না। হয়েছে বাড়ি, গাড়ী, বিদেশ ভ্রমন এমনকি সন্তানকে লেখাপড়ার উদ্দেশ্যে পাঠিয়েছিলেন লন্ডনেও। স্বল্প সময়ে কিভাবে পেলেন এই আলাদিনের চেড়াগ? কি তার পরিচয়? তালতলী উপজেলার শারিকখালী ইউনিয়নের বাদুরগাছা গ্রামের এক নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান নাসির হাওলাদার, ছিলেন ৪ ভাইয়ের মধ্যে তৃতীয়। অন্যান্য ভাইয়েরা জিবিকার তাগিদে ঢাকার সদরঘাটে যখন টুকরিতে ফল বিক্রয় করতেন তখন নাসির হাওলাদার কষ্ট করেও চালিয়েছেন পড়ালেখা।
জগন্নাত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করে ছোটেন চাকুরির উদ্দেশ্যে। নাসির হাওলাদার অতি দারিদ্রতার সাথে লড়াই করে বাঁচার জন্য পিনাকল নামে আয়ুর্বেদ ঔষধ কোম্পানিতে মার্কেটিং এ কাজ শুরু করেন। কাজ ছিল রাস্তায় হেটে হেটে যৌন উত্তেজক ঔষধ বিক্রি করা। এ পর্যন্ত সব ঠিক থাকলেও এরপর থেকে শুরু হয় নাসিরের প্রতারণা। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ মঙ্গলবার দূর্নীতি দমন কমিশনে নাসিরের সকল অপকর্ম ও দূর্নীতি ক্ষতিয়ে দেখতে সরোয়ার নামে এক ব্যক্তি আবেদন করেন।
নাসির হাওলাদার তার প্রতারণার মাধ্যমে অর্জিত টাকা দিয়ে গাজীপুর-২৭ এ বাংলো বাড়ি করেছেন। উত্তরা জয়নাল মার্কেটের পিছনে জমি কিনেছেন। কচুখেত রজনীগন্ধা মার্কেটে জনতা ব্যাংকের শাখায় স্ত্রীর নামে কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট করেছেন। তিন ভাইকে তার গ্রামের বাড়ি তালতলী উপজেলার শারিকখালী ইউনিয়নের কচুপাত্রা গ্রামে জমি কিনে দিয়েছেন ও বাজারে রড সিমেন্টের দোকান দিয়ে দিয়েছেন। তার ভাইয়েরা পূর্বে ঢাকা সদরঘাটে টুকরিতে ফল বিক্রি করতো। এছাড়াও স্ত্রী, শ্বশুর, ৩ ভাই ও শালা-সুমন্দির নামে সম্পত্তি গড়েছেন।
একমাত্র ছেলেকে লন্ডনে লেখাপড়া করতে পাঠিয়েছিলেন। তারাও স্ব পরিবারে বিদেশ ঘুরেছেন একাধিকবার। লন্ডনে ছেলের একা থাকতে কষ্ট হওয়ায় আবার দেশে এনে শাহিন স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন। নাসির হাওলাদার বর্তমানে দক্ষিন কাফরুল মিতালি হাউজিং এ বাসা নং-১৫ এর লিফটের ৭ এ নাসির বসবাস করেন। প্রতারণা চালিয়ে যেতে গাড়িও পাল্টিয়েছেন একাধিক। ১ম গাড়ি – Toyota x corolla, ২য় গাড়ি নিশান এক্স স্টাইল, ৩য় গাড়ি টয়োটা হেরিয়ার, ৪র্থ ও বর্তমান গাড়ি – Toyota Allion (Dhaka Metro Ga-195602)
ছাত্র আন্দেলন চলাকালে তিনি ছাত্র আন্দোলনের বিরোধীদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছেন। এর কারন খুজতে গিয়ে জানা গেছে তিনি জগন্নাত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাথে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন।
এই বিষয়ে নাসির হাওলাদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি সকল বিষয় অস্বীকার করে বলেন আমার পিছনে শত্রু লেগে আছে তারা আমাকে হেয় করার জন্য এসব রটাচ্ছে।
এই সকল তথ্যের ভিত্তিতে দূর্নীতি দমন কমিশনের সাথে আমরাও অনুসন্ধান শুরু করেছি এই নাসির হাওলাদারকে নিয়ে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এই নাসির হাওলাদার আগামী ১৭ অক্টোবরের পরেও তিনি ব্যবসায়ীক কাজে ০৮ দিনের বিদেশ সফর করে এসেছেন।