ময়মনসিংহে কাঁচিঝুলির বহুতল ফাতিহা ভবনের অবৈধ অংশ অপসারণে নির্দেশনা মানছে না ভবন কর্তৃপক্ষ

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত গ্রাম বাংলার খবর জাতীয় বিশেষ প্রতিবেদন ময়মনসিংহ সারাদেশ

শিবলী সাদিক খান (ময়মনসিংহ) : ময়মনসিংহে কাচিঝুলি গোলাপজান রোডে সিনিয়র সাংবাদিক সাইদুর রহমান বাবুলের বাসার পাশে ডঃ মাহবুবুর রহমান গং শিক্ষক চাকুরিজীবী ব্যাবসায়ীদের সিন্ডিকেট বিল্ডিং কোর্ডের নিয়ম নিতীমালার কোন তোয়াক্কা না করেই অনুমোদিত লে-আউট নকসা ও প্ল্যান অমান্য করে নয়তলার স্থলে বহুতল ১০ (দশ তলা) ফাতিহা ভবন নির্মাণ করায় সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় সর্বশেষ ৭ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে সর্বোচ্চ ১৫ দিনের মধ্যে ভেঙ্গে অপসারণ করার নির্দেশনা দিলেও কোন তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি বর্ধিত অংশ অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন ময়মনসিংহ বি. সি কমিটি ও সিটি কর্পোরেশনের নগর পরিকল্পনাবিদ। কাগজে কলমের নির্দেশনার তোয়াক্কা করছে না ভবন কর্তৃপক্ষ।


বিজ্ঞাপন

ময়মনসিংহে অপরিকল্পিত বহুতল ভবন নির্মাণ করার অনেক অভিযোগ রয়েছে ব্যক্তি মালিকানা এবং বিভিন্ন হাউজিং নির্মাণ প্রতিষ্ঠান গুলির বিরুদ্ধে যাদের অনেকেই সিটি কর্পোরেশনের বিল্ডিং কোড নিয়ম নীতিমালা উপেক্ষা করে যে যার মতো অধিক মুনাফা অর্জন করার জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন কতিপয় সিন্ডিকেট করে।


বিজ্ঞাপন

যাহার দরুণ ভূমির পরিমান ও ভবনের তলার উচ্চতা অনুসারে অনুমোদিত লে-আউট নকসা ও লে-আউট প্লান অমান্য করে বিল্ডিং কোর্ডের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর হিরিক পরে গেছে। অনুমোদিত নকশার ইনডোর, আউটডোরে ব্যাপক গরমিল করে অনিয়মকে নিয়মে পরিণত করা নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। এছাড়াও সরকারের ভিপি সম্পত্তিতে গৌরহরী বহুতল ভবন নির্মাণের অনুমোদনের সফলতা দেখিয়েছেন এই সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্টরা, এ সকল সংবাদ প্রকাশিত হলেও দুর্নীতিগ্রস্তরাই দায়িত্বে থাকায় তদন্তের নামে চিঠি চালাচালি করলেও দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না।

রবিবার (১৩ অক্টোবর) ২০২৪ তারিখে নিয়ম বহির্ভূত একটি বহুতল ভবন নির্মাণের ঘটনাস্থলে পরিদর্শন কালে সিনিয়র সাংবাদিক সাইদুর রহমান বাবুল ঐ ভবনের তদন্ত সংশ্লিষ্ট সকল কাগজপত্র দেখালেন যা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ময়মনসিংহ বি.সি. কমিটি কর্তৃক ডঃ মুহাম্মাদ মাহবুবুর রহমান গং, ১৩/ক গোলাপজান রোড, কাঁচিঝুলি, সদর, ময়মনসিংহ যার বিআরএস দাগ নং-৪৬৬, ৪৬৮, খতিয়ান নং বিআরএস -৩৪৪০, জেএল নং-৭৪, মৌজা-গোহাইলকান্দি এর নির্মানাধীন ০৯ (নয়) তলা আবাসিক ভবনের লে-আউট নকশা ও প্লান অনুমোদন দেয়া হয়। নির্মাণাধীন বহুতল ভবনটির বিযয়ে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক সভাপতি বিসি কমিটি বরাবরে অভিযোগ করা হলে ময়মনসিংহ গণপূর্ত বিভাগ এর মাধ্যমে ভবনটি সরেজমিনে পরিদর্শন ও পরিমাপ করা হয়।

বি. সি কমিটির তদন্তে দেখা যায় অনুমোদিত লে-আউট নকশা অনুযায়ী উক্ত ভবনের সম্মুখে ছাড়তে হবে ১.৫০ মিটার কিন্তু ছাড়া হয়েছে ০.৩০ মিটার, দুই পাশে ছাড়তে হবে ১.২৫ মিটার করে কিন্তু ছাড়া হয়েছে ০.৩০ মিটার এবং পিছনে ছাড়তে হবে ২.০০ মিটার কিন্তু ছাড়া হয়েছে ০.৩০ মিটার যাহার অনুমোদিত লে-আউট নকশা অনুযায়ী ছাড়া হয়নি।

যাহাতে অনুমোদিত লে-আউটের ব্যত্যয় ঘটানো হয়েছে। এছাড়াও ০৯ (নয়) তলা আবাসিক ভবনের লে-আউট প্লান অনুমোদন নিয়ে ডঃ মুহাম্মাদ মাহবুবুর রহমান গং, ১০ (দশ তলা) নির্মাণ করেছেন। অনুমোদন বহির্ভূত নির্মিত ১০ (দশ তলা) অপসারণ এবং অনুমোদিত লে-আউট প্ল্যানের সেট-ব্যাগ অনুযায়ী বর্ধিত অংশ অপসারণ করার জন্য জেলা প্রশাসক কাগজপত্র পর্যালোচনা করেছেন এবং তদন্তে সন্তোষ প্রকাশ পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা ‘কে অনুরোধ ক্রমে নির্দেশ দেন।

সিটি কর্পোরেশন নগর পরিকল্পনাবিদ মানস বিশ্বাস ও গণপূর্ত বিভাগ নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ জিলুর রহমান সিদ্দিকী সদস্য সচিব বি. সি কমিটি ময়মনসিংহ সংশ্লিষ্টদের পত্র প্রেরণের মাধ্যমে একাধিক বার আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রকৃয়া অব্যাহত থাকলেও সাবেক মেয়র ইকরামুল হক টিটু এই অনিয়মের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে বাদী ‘কে অজ্ঞাত কারণে ৩ মাস অপেক্ষা করতে সময় নেওয়ার পরেও অজ্ঞাত কারণে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় জনমনে বিভিন্ন প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।

অবশেষে এই বিষয়ে বর্তমান সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক বরাবরে উপরোক্ত সমস্ত কাগজ পত্র দাখিল করলে তিনি এই ফাতিহা ভবনটি নির্মাণে বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।

এরই প্রেক্ষিতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং মানস বিশ্বাস স্বাক্ষরিত এক পত্রে মাহবুবুর রহমান গং বিবাদী পক্ষ’কে উক্ত ফাতিহা ভবন এর সকল বর্ধিত অংশ ১৫ দিনের মধ্যে ভেঙ্গে অপসারণ করে সিটি কর্পোরেশন’কে অবহিত করা সহ ব্যাবস্থা নিতে অনুরোধ ক্রমে নির্দেশ দিয়েছেন । অতপর ৭ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে সর্বোচ্চ ১৫ দিনের মধ্যে ভেঙ্গে অপসারণ করার নির্দেশনা দিলেও কোন তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি। এত ক্ষমতার উৎস কোথা থেকে পেলো এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

এছাড়াও সংশ্লিষ্ট দপ্তর সমূহের দুর্নীতিগ্রস্থদের চিহ্নিত করা সহ অভিলম্ভে অনুমোদিত লে-আউট প্ল্যান নকশা অনুযায়ি বর্ধিত অংশ অপসারণ ও বিল্ডিং কোর্ড আইনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য নগরবাসী কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *