সরিষাবাড়ী (জামালপুর) : জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে শিক্ষকের উপর বখাটে নবম শ্রেণির কতিপয় শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার(১২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টায় উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের পাটাবুগা দাখিল মাদ্রাসায় পরীক্ষা চলাকালীন পরীক্ষার হলে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করলে পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষক রমজান আলী কে মারধরের হাত থেকে রক্ষা করতে পরীক্ষার হলের ২ নং কক্ষের দরজা লাগিয়ে দিয়ে পরীক্ষার্থীরা আত্নচিৎকার করলেও এগিয়ে যায়নি বলে মাদ্রাসার সুপার আইয়ুব আলী’র বিরুদ্ধে স্থানীয় সচেতন মহল ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।খবর পেয়ে সরিষাবাড়ী থানা পুলিশ,উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক ও একাডেমিক সুপার ভাইজার রুহুল আমীন বেগ ঘটনা স্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ ঘটনায় মাদ্রাসার প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে না পেরে পরীক্ষার খাতা নিয়ে ক্ষোভে বাড়ীতে চলে যায়।
মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের পাটাবুগা দাখিল মাদ্রাসায় সকাল ১০ টা থেকে ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়। মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক রমজান আলী পরীক্ষার ২ নং কক্ষে সকাল ১০ থেকে পরীক্ষার দায়িত্ব পালন করছিলেন। হঠাৎ করে মাদ্রাসার অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর সাইফুল ইসলাম এর ৯ম শ্রেণিতে পড়ুয়া বখাটে ছেলে রাকিব এর নেতৃত্বে আল আমীন ,শাকিল,সোহান, আপেল,মাহিম কে সাথে নিয়ে মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক রমজান আলী’র কোর্টের কলার ধরে টানা -হেচড়া কিল-ঘুষি শুরু করে। এ সময় মাদ্রাসার আয়া আঞ্জুমনোয়ারা ফিরাতে গেলে তাকে শ্লীলতাহানিসহ তার মোবাইল নিয়ে নেয় এবং শিক্ষক রমজান আলীর মোটর সাইকেলের চাবি নিয়ে নেয় এবং ভাংচুর করে। এ সময় মাদ্রাসার সুপার আইয়ূব আলী শিক্ষার্থীদের বিশৃংখলা পরিস্থিতি শান্ত না করে তার কক্ষে বসে থাকতে দেখে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি মোজাম্মেল হক রঞ্জু, সাবেক বিদ্যুৎসাহী সদস্য আব্দুল আজিজ ও সাবেক সদস্য আব্দুল মান্নান সহ স্থানীয় লোকজন উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার অনুরোধ করেন।এ ছাড়াও মাদ্রাসার নৈশ্য প্রহরী নজরুল ইসলাম (রাজীব) পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য এগিয়ে গেলে তাকেও মারধর করে। মাদ্রাসার উদ্ভূত পরিস্থিতির ইন্ধনদাতা হিসেবে মাদ্রাসার সুপার আইয়ুব আলী ও শরীর চর্চা শিক্ষক এ কে এম আমিনুল হক এবং মাদ্রাসার অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর সাইফুল ইসলাম জড়িত বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষকরা মন্তব্য করেন।
এ ব্যাপারে মাদ্রাসার সুপার আইয়ুব আলী জানান, মাদ্রাসার উদ্ভূত পরিস্থিতি’র বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক ও একডেমিক সুপার ভাইজার রুহুল আমীন বেগ এবং সরিষাবাড়ী থানা পুলিশ বিষয়টি জেনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এনে চলে গেছে। তিনি আরও বলেন, আমি এ ঘটনার কোন ইন্ধন যোগাইনি বলে জানান তিনি।
জানতে চাইলে পাটাবুগা দাখিল মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার জানান, ঘটনার খবর পেয়ে বিষয়টি ওসি সাহেব কে অবগত করে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার এবং একাডেমিক সুপারভাইজার কে পাঠানো হয়। এ বিষয়টি তদন্ত করে দোষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।