নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির উদ্যোগে আজ ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। উক্ত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলের চেয়ারম্যান বলেন, যারা দেশ মাতৃকার মুক্তির জন্য ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে দেশকে মুক্ত করেছিলো আমি সে সব মুক্তিযোদ্ধাদেরকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। সেইসঙ্গে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। নিহতদের পরিবার-পরিজন ও আহতদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছি এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।
তিনি আরো বলেন, দেশবাসী আজ এমন এক সময় মহান বিজয় দিবস পালন করতে যাচ্ছে, যখন ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে দেশকে ফ্যাসিস্ট সরকারের কবল থেকে মুক্ত করেছে। দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের অপশাসন, জুলুম-নির্যাতন ও গুম-খুন থেকে দেশের মানুষ মুক্তি পেয়েছে। মহান মুক্তিসংগ্রাম ও বিজয় আমাদের জাতীয় জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন। এই অর্জন কোন দল, গোষ্ঠী বা ব্যক্তির অর্জন ছিল না বরং এটা ছিল দলমত, ধর্ম, বর্ণ ও গোত্র নির্বিশেষে সকল শ্রেণির মানুষের কাঙ্খিত সাফল্য। তাই মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীরদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন ও মহান বিজয়কে টেকসই ও অর্থবহ করতে হলে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের কোন বিকল্প নেই।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে দলের মহাসচিব বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছরের দূ:শাসনের পরে যখন বাংলার মানুষ শান্তিতে-স্বস্তিতে থাকার প্রয়াস পাচ্ছে এবং দেশ ভঙুর অর্থনীতি থেকে মুক্তি লাভের চেষ্টা করছে। এমতাবস্থায় পতিত স্বৈরাচারের দেশি বিদেশি দোসররা আবার দেশকে নানা কূটকৌশল ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তারা ধীরে ধীরে আবার কুটকৌশল নিয়ে জনতার কাতারে দাঁড়ানো অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
তিনি সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, একজন স্বৈরাচারের দোসর কিভাবে সরকারের পক্ষ থেকে দাওয়াত পায়? কিভাবে জাতীয় স্মৃতিসৌধের মত একটা মর্যাদাপূর্ণ জায়গা থেকে এই ফ্যাসিবাদের দোসরেরা নির্লজ্জ ভাবে সেখানে দাঁড়িয়ে ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে সেটা সরকারকে খতিয়ে দেখতে হবে। ফ্যাসিবাদের দোসরদের রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিয়ে সরকার ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের রক্তের সাথে বেইমানি করেছে। এই গণহত্যার দোসর এবং অর্থলোভীকে কারা দাওয়াত দিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে নিয়েছে এবং তাদেরকে পূনর্বাসনের চেষ্টা চালাচ্ছে তাদেরকে অতিদ্রুত বের করে আইনের আওতায় আনার জোড় দাবি জানাচ্ছি। এই ঘটনা দ্বারা এটাই প্রমাণ হয় প্রশাসনের ভেতর এখনো স্বৈরাচারের অপশক্তি বহাল তবিয়তে আছে এবং এই সরকারকে ব্যর্থ করতে উঠেপড়ে লেগেছে। তাই পতিত স্বৈরাচারের দেশবিরোধী সকল চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলা করার জন্য আমরা এই সরকার সহ দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
দলের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি লায়ন উমার রাযীর সভাপতিত্বে ও ঢাকা মহানগর দক্ষিনের সেক্রেটারি লায়ন শফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন কল্যাণ পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা কল্যাণ পার্টির সভানেত্রী শামীমা চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিনের সভাপতি আবু ইউসুফ সুমন সহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতৃবৃন্দ।
আলোচনা সভা শেষে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও দেশ-জাতির সুখ-সমৃদ্ধি, শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে দোয়া ও মুনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।