পেট্রোবাংলাবাংলা চেয়ারম্যান জনেন্দ্রনাথ সরকার।
নাজমুল হাসান : পেট্রোবাংলাবাংলা চেয়ারম্যান জনেন্দ্রনাথ সরকার এর সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনায় আশার আলো সঞ্চার হয়েছে জ্বালানি খাতে। দেশের চলমান শিল্পায়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ করতে রাষ্ট্রায়ত্ত এই প্রতিষ্ঠানকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্রনাথ সরকার। উচ্চ মূল্যে বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে কিভাবে দেশের গ্যাসফিল্ড গুলো থেকে সর্বোচ্চ গ্যাস আহরণ করা যায় সেজন্য নতুন নতুন কূপ খননসহ দেশের নানা প্রান্তে গ্যাস আহরণের জন্য অনুসন্ধানে তার ভূমিকা অপরিসীম।পেট্রোবাংলা সরকারি মালিকানাধীন বাংলাদেশের জাতীয় তেল কোম্পানি ,বাংলাদেশে খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধান, উত্তোলন, পরিশোধন, ও বাজারজাতকরণের কাজ করে।১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ সংস্থাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সংস্থার অধীনস্থ ১৩ টি কোম্পানি রয়েছে।এছাড়াও কোম্পানিটি বাংলাদেশে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধান এবং উন্নয়নে আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানিসমূহের সাথে উৎপাদন অংশীদারি চুক্তি করে থাকে।
বাংলাদেশে বর্তমানে জ্বালানি গ্যাসের সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। ফলে গ্যাস আমদানিতে রিজার্ভ থেকে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করতে হয় রাষ্ট্রকে।দেশে বর্তমানে দৈনিক ৪ হাজার এমএমসিএফডি গ্যাসের চাহিদা রয়েছে,যার বিপরীতে দেশীয় উৎপাদন ও এলএনজি সরবরাহ মিলে গড়ে দৈনিক মাত্র ২ হাজার ছয়শত এমএমসিএফডি সরবরাহ সম্ভব হয়।এলএনজি বিদেশ হতে আমদানী করতে হয় যাতে আমাদের বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হচ্ছে। বছরে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার এলএনজি আমদানি করা হয়।এই কারনে পেট্রোবাংলচেয়ারম্যান জনেন্দ্রনাথ সরকার জোড়ালোভাবে চেষ্টা করছেন উন্নয়ন ও অনুসন্ধান গ্যাস কুপ খনন করে দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন বৃদ্ধি করার।
২০২৫ ও ২০২৬ সাল নাগাদ সিলেট এলাকায় ১২ টি উন্নয়ন ও অনুসন্ধান কুপ খনন করে দৈনিক ১১৮ মিলিয়ন ঘনফুট, ফেনী – নোয়াখালী- লক্ষীপুর এলাকায় ৯টি উন্নয়ন ও অনুসন্ধান কুপ খনন করে ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট,ভোলাতে ১০ টি উন্নয়ন অনুসন্ধান কুপ খনন করে ১৯০ মিলিয়ন ঘনফুট , কুমিল্লা ও ব্রাহ্মনবাড়িয়ায় ৮ টি উন্নয়ন ও অনুসন্ধান কুপ খনন করে দৈনিক ১২০ মিলিয়ন ঘনফুট,দেশের অন্যান্য এলাকায় ৮ টি উন্নয়ন ও অনুসন্ধান কুপে দৈনিক ১০৫ মিলিয়ন ঘনফুট সর্বমোট ৬৩৩ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন এর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন।যা গ্যাস সংকট দূর করতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
প্রথমে ৫০ টি ও পরবর্তীতে ১০০ টি উন্নয়ন ও অনুসন্ধান কুপ খনন এর পরিকল্পনা চুড়ান্ত করেছেন যার বেশির ভাগ কুপ বাপেক্সের ৫ টি রিগ দিয়ে করা হবে। রিগ শিডিউল ও চুড়ান্ত।বাকি কুপগুলি উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে খনন করা হবে। এছাড়াও দেশের মহা মুল্যবান সম্পদ গ্যাস চুরি ঠেকাতে পেট্রো বাংলার চেয়ারম্যান হিসাবে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে বিতরণ কোম্পানিগুলোর সুষ্ঠু মিটারিং সিস্টেম চালু করা। কোন বিতরন কোম্পানি কি পরিমাণ গ্যাস বিতরণ করছে তা পর্যবেক্ষণ করে সেই অনুপাতে রাজস্ব আদায় কি পরিমান হচ্ছে সেটা তদারকি করা, সিস্টেম লস হ্রাস করা।
এছাড়াও দেশের অন্যতম গ্যাস সরবরাহ প্রতিষ্ঠান তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগ এবং অব্যবস্থাপনা ঠেকাতে কার্যকরী ভূমিকা নিয়েছেন তিনি। তিতাস গ্যাসের অভিযান পরিচালনায় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে সার্বক্ষণিক ম্যাজিস্ট্রেটের ব্যবস্থা করেছেন। নিয়মিত প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সাথে পরামর্শ করে বিভিন্ন ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন। দেশের সম্পদ রক্ষায় সর্বদা নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করছেন পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান জনেন্দ্রনাথ সরকার।
গত দুই বছর পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান হিসেবে জ্বালানি খাতে কাজ করার সুবাদে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে ব্যাপক অভিজ্ঞতা সঞ্চার করে একের পর এক সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে জ্বালানি খাতকে একটি স্থিতিশীল পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য যে যাত্রা তিনি শুরু করেছেন ধীরে ধীরে তা আলোর মুখ দেখতে শুরু করেছে। সেই অবস্থায় তার মত একজন দক্ষ লোককে অন্তত আরো কয়েক বছর এই কাজে নিয়োজিত রাখলে দেশের সম্পদ সাশ্রয় ও উপকার নিশ্চিত হবে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।