ওয়েস্টিনের সম্পৃক্ততা পেলে অনুসন্ধান করবে দুদক

অপরাধ আইন ও আদালত

পাপিয়ার পাপাচার

নিজস্ব প্রতিবেদক : যুব মহিলা লীগ থেকে বহিষ্কৃত শামীমা নূর পাপিয়ার বিরুদ্ধে ওঠা অবৈধ অর্থ উপার্জনের অভিযোগের তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্তকালে পাপিয়ার অবৈধ অর্থ উপার্জনের সঙ্গে ওয়েস্টিন হোটেল কর্তৃপক্ষের সম্পৃক্ততার তথ্য মিললে তা অনুসন্ধান করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সোমবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখত।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দেশত্যাগের সময় পাপিয়াসহ চারজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। গ্রেফতার অন্যরা হলেন-পাপিয়ার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমন (৩৮), সাব্বির খন্দকার (২৯) ও শেখ তায়্যিবা (২২)। সে সময় সাতটি পাসপোর্ট, নগদ দুই লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ টাকার জাল মুদ্রা, ১১ হাজার ৯১ ইউএস ডলারসহ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারের পর ওইদিন রাতেই নরসিংদীর বাসায় এবং পরদিন (২৩ ফেব্রুয়ারি) ভোরে হোটেল ওয়েস্টিনে তাদের নামে বুকিং করা বিলাসবহুল প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুটে অভিযান চালানো হয়। ফার্মগেট এলাকার ২৮ নম্বর ইন্দিরা রোডে অবস্থিত রওশন’স ডমিনো রিলিভো নামক বিলাসবহুল ভবনে তাদের দুটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি পিস্তলের ম্যাগজিন, ২০ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, পাঁচ বোতল বিদেশি মদ ও নগদ ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, পাঁচটি পাসপোর্ট, তিনটি চেক, বিদেশি মুদ্রা, বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি ভিসা ও এটিএম কার্ড জব্দ করে র্যাব।
র‌্যাব জানায়, প্রতিদিন দুই হাজার ডলারে বিলাসবহুল কক্ষটি ভাড়া নিয়ে পাপিয়া যৌনবাণিজ্য চালাতেন। স্বামী সুমন চৌধুরীকে নিয়ে পাপিয়া ‘অস্ত্র ও মাদকের কারবার, চাঁদাবাজি, চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণাসহ বিভিন্নভাবে মানুষের অর্থ আত্মসাত করে’ বিপুল সম্পদ গড়েছেন বলেও জানায় র্যাব।
এসব অভিযোগের তদন্তের স্বার্থে এক চিঠির জবাবে ওয়েস্টিনে পাপিয়ার পরিশোধ করা তিন কোটি ২৩ লাখ টাকার বিল এবং সেখানে ১০ অতিথিকে নিয়ে তার অবস্থানের বিষয়ে তথ্যসহ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র দুদককে দিয়েছে হোটেল কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক সচিব বলেন, অভিযোগের অনুসন্ধানের স্বার্থে তথ্য চেয়ে ৫৯টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বিএফআইউতে চিঠি দেয়া হয়েছে। হোটেল ওয়েস্টিনেও চিঠি দেয়া হয়েছে। হোটেল কর্তৃপক্ষ কিছু তথ্য দিয়েছে। তদন্তের স্বার্থেই এই মুহূর্তে বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না।
হোটেলের মালিক নূর আলীর সম্পৃক্ততার অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে কিনা জানতে চাইলে দুদক সচিব বলেন, তার (পাপিয়ার) অবৈধ সম্পদ অর্জনের সাথে হোটেল কর্তৃপক্ষের সম্পৃক্ততার কোনো তথ্য পাওয়া গেলে তা আলাদা অনুসন্ধানের মাধ্যমে দেখা হবে।
উল্লেখ্য, পাপিয়ার ভাড়া করা ওয়েস্টিন হোটেলের প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুটে কারা যেতেন, সে বিষয়ে গোয়েন্দা পুলিশও তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে হোটেল কর্তৃপক্ষকে। এছাড়া ওয়েস্টিনের কাছে পাপিয়ার বিপুল পরিমাণ মদ কেনার তথ্যও জানতে চেয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *