রাজউকের দায়িত্বপ্রাপ্ত জোন ৬/১ এর সাবেক অথরাইজড অফিসার জোটন দেবনাথ।
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর মানিক নগর রাজধানী উন্নয়নকর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর অনুমোদন ছাড়া অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে ছয়তলা ভবন নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।গ অতিগোপনে আইনকে টেক্কা দিয়ে ভবন নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করেছেন। যখন পাইলিং থেকে আরম্ভ করে ছাদ ঢালাইয়ের প্রস্তুতি নিলে স্থানীয়দের নজরে আসলে রাজউকে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হয়ে ভবন মালিক আনোয়ারকে কারন দর্শানোর নোটিশ প্রদানসহ রাজউকের নির্বাহী আদেশে নোটিশ দিয়ে মগদা থানাকে স্তিতিশীল রাখার নির্দেশ প্রদান করেন। থানায় সাময়িক কাজ বন্ধ করে দিয়ে স্বশরীরে রাজউকে হাজির হয়ে কারন দর্শানোসহ বিষয়টি নিস্পত্তি করতে বলেন। ওই বাড়ির নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হলেও রাজউক জানেননা। অ্যাকশন নোটিশ দিয়ে রাজউকের দায়সারা ভাব,অদৃশ্য কারণে চূড়ান্ত নোটিশ আলোর মুখ দেখতে পায়নি। জোটনের ঘুষবানিজ্যে চূড়ান্ত নোটিশ ধামাচাপা পড়ে যায়।
জানা গেছে ৫০/৪ মানিক নগর ওয়াসা রোড বাড়ির মালিক আনোয়ার হোসেন গং তাদের নিজস্ব জমিতে নকশা ছাড়াই ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেন। নীচতলার আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করে ছাদ ঢালাইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। পাশের ভবন মালিক হবিবুর রহমান কাজের অনিয়ম দেখে রাজউকে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন । তবে অ্যাকশন নোটিশ দিয়ে চলে দেন দরবার। সত্যতার ভিত্তিতে কাজ বন্ধ করেছিলেন রাজউক। তিন মাস রাজউকের সাথে দেনদরবার চালিয়ে পূনরায় নির্মাণ কাজ শুরু করেন।
গোপনে ওই বাড়ির ছয়তলার কাজ শেষ করে ফেললেও রাজউকে এখনও নিস্পত্তি হয়নি অভিযোগের বিষয়টি। এ ছাড়াও পুরনো চারটি গ্যাসের চুলার সাবেক অনুমোদন থাকলেও ওই বাড়ির ১৬টি গ্যাসের চুলার অনুমোদন নেই। যা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ব্যবহার করছে অবৈধ গ্যাস। অদ্যাবধি রাজউক এর চূড়ান্ত নোটিশ আলোর মুখ দেখতে পায়নি। ১৯৫২ এর ৩ বি ধারার বিধানমতে ঢাকা মহানগর ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮ সুস্পষ্টভাবে লঙ্ঘন করেছেন। সাত কর্মদিবসের মধ্য কারন দর্শানোর নির্দেশ প্রদান করা হলেও তা অদৃশ্য কারনে অমিমাংসিত রয়েছে।
এবিষয় ভবন মালিক আানোয়ার হোসেন এর কাছে জানতে চাইলে ঢাকা প্রেস ডটকম ’কে বলেন,আমি রাজউকের নোটিশ পেয়ে হাজির হয়ে নোটিশের লিখিত জবাব দিয়েছি। থানায় গিয়ে সব কিছু অবহিত করেছি। রাজউকের সাথে একাধিকবার বৈঠকও হয়েছে। অভিযোগের বিষয়টি এখনও চলমান থাকলেও চূড়ান্ত হয়নি। যেভাবে হোক আমি রাজউককে ম্যানেজ করে ফেলেছি।
একপর্যায় অকপটে স্বীকার করে বলেন রাজউক আমাকে মৌখিকভাবে অনুমোদন দিয়েছেন সেকারনে আমি দ্রুত বাড়ির কাজ শেষ করে ফেলেছি। নকশা ছাড়াই আপনাকে কীভাবে অনুমতি দিল এমন প্রশ্নের জবাবে সে কোনো সদোত্তর দিতে পারেননি। তিনি আরও বলেন ,রাজধানীতে শুধু আমার বাড়ি ছাড়াও মানিক নগরে শত শত বাড়ি আছে। আপনি তদন্ত করে দেখেন।
এ ছাড়াও মৌখিক আদেশে রয়েছে পরিবেশের মারাত্মক হুমকি। ভূমি জড়িপ আইনে তিনটি প্লটের মাথায় এক ফিট করে সীমানার জন্য ভূমি বরাদ্ধ থাকলেও ওই বাড়তি জমির ভেতরে অধিগ্রহণ করে ভবন নির্মাণ করছেন অসাধু মালিক আনোয়ার। সামনে ৫পিট পেছনে তিনফিট ডানে ও বামে একই নিয়মে জমি ছেড়ে ভবন নির্মাণ করার নিযম থাকলেও তা মানা হয়নি। শুধু অনিয়মে ভরা যে কোনো সময় ঘটতে পারে অনাকাঙ্খিত ঘটনা। এলাকাটি ঘনবসতি হওয়ায় মারাত্মকভাবে হুমকিতে বসবাস করছেন ওই বাড়ির বসনবাসকারী লোকজন। এক কাঠা দুই ছটাক জামির ওপর ছয়তলা বাড়ি যা নগরবাসীর জন্য অশ্বনি সংকেত।
এ বিষয় ভবন মালিক আনোয়ারের কাছে অনিয়মের বিষয় জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যম কে কে বলেন , অভিযোগকারী হাবিবুর রহমান ও নকশা ছাড়া বাড়ি নির্মাণ করছেন তাহলে আমি করতে পারবনা কেন? আমি বাড়ি করছি আপনি লিখতে থাকেন আমার কিছু যায় আসেনা। পারলে রাজউকের সাথে ফয়শালা করব। অবৈধ গ্যাস সংযোগ কীভাবে দিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে বলেণ , আপনি তিতাস গ্যাস অফিসে গিয়ে জেনে নিন।
উল্লেখ্য যে রাজউক একাটি আস্থাশীল রাষ্টীয় প্রতিষ্ঠান তাদের এ তুঘলকি কান্ডে দিন দিন জনগণের মাঝে একটি বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করবে এমনটিই ধারনা করছেন সংশ্লিষ্ট জনেরা। ইতিমধ্যে রাজধানীবাসীর নগর পরিবর্তনে নতুন নতুন সংশোধনী সংযোজন করছেন যা রাজধানী বাসীর জন্য ইতিবাচক ভুমিকা রাখবে। জনগণের প্রত্যাশা রেখে রাজউক সাবেক চেয়ারম্যান আনিচুর রহমান মিয়া সাংবাদিকদের সাথে আলাপচারিতায় বলেছিলেন , যারা অনুমোদন না নিয়ে ভবন নির্মাণ করেছন তাদেরকে যেন রাজউকের দৃষ্টিগোচরে আনেন। কিন্তু অসাধু কর্মচারী ও কর্মকর্তার দায়িত্বহীনতার কারণে অনিয়ম দিন দিন বেড়ে চলেছে।
এসব বিষয় জানার জন্য রাজউকের দায়িত্বপ্রাপ্ত জোন ৬/১ এর সাবেক অথরাইজড অফিসার জোটন দেবনাথ এর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সে ফোনকল গ্রহণ করছেন না। এছাড়াও চলতি দায়িত্বে থাকা হাসানুজ্জামানের মুঠো ফোনে একাধিকবার কোন করলেও তারা উভয়ই মোবাইল রিসিভ না করায় তাদের কোন প্রকার বক্তব্য প্রকাশিত হলো না।
মতিঝিল জোনে তিতাসের দায়িত্বে থাকা অভিযোগ গ্রহণকারী ওই কর্মকর্তার কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের ‘ কে বলেন,আপনি কাওরান বাজার অফিসে অভিযোগ দেন তারা ব্যবস্থা নিবে। আমরা শুধু অভিযোগ শোনার দায়িত্ব ব্যবস্থা তারা নিবে।