এখন বিএনপির নাম ভাঙিয়ে আরো বেপরোয়া নজরুল—–আসিয়ান সিটির দখল দারিত্বের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা 

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ কর্পোরেট সংবাদ জাতীয় বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী

নিজস্ব প্রতিবেদক  :  অবৈধভাবে আশিয়ান সিটির জমি দখল, সীমাহীন প্রতারণা, জালিয়াতি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের প্রতিবাদে খিলক্ষেত থানার বড়ুয়া দক্ষিণ পাড়ার বাসিন্দা আনোয়ারা মায়া সংবাদ সম্মেলন করতে গিয়ে সেগুনবাগিচায় ঢাকা রির্পোর্টাস ইউনিটিতে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন। পরে তাকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। এ হামলা উপেক্ষা করে আসিয়ান সিটির দখল দারিত্বের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন আনোয়ারা মায়ার মেয়ে। তিনি তার মায়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।


বিজ্ঞাপন

গতকাল শুক্রবার সকালে ঢাকা রির্পোর্টাস ইউনিটিতে এ ঘটনা ঘটে। সংবাদ সম্মেলন শুরুর আগে ওই ভুক্তভোগী আনোয়ারা মায়ার উপর আসিয়ান সিটির লেলিয়ে দেওয়া সন্ত্রাসী বাহিনী হামলা করেন।


বিজ্ঞাপন

এক পর্যায়ে ওই মহিলাকে পুলিশ আটক করে নিয়ে যায়। ঢাকা রির্পোর্টাস ইউনিটির চত্ত্বরে আসিয়ান সন্ত্রাসী বাহিনী সকাল থেকেই ভিড় জমায় এবং হট্রগোলের চেষ্টা চালায়। তারা ভুক্তভোগী মহিলার পরিবারের অন্য সদস্যদের উপর আক্রমণ করারও চেষ্টা করে। এসময় তারা সংবাদ সম্মেলন না করারও হুমকী-ধামকী দেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে ঢাকা রির্পোর্টাস ইউনিটির সাধারন সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেলের হস্তক্ষেপে ও পুলিশের সহযোগিতায় আসিয়ান সিটির সন্ত্রাসীরা ডিআরইউ চত্ত্বর ছেড়ে চলে যায়।

পরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে আনোয়ারা মায়ার মেয়ে বলেন, আমরা অনেকটা মৃত্যুর ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। আমরা সবাই আশিয়ান সিটির প্রতারণার শিকার। আমাদের কারো কারো পৈত্রিক জমি কেড়ে নেয়া হয়েছে। সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে আমাদের ভিটে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। কেউ কেউ প্লট কিনেও তা বুঝে পাচ্ছেন না। বরং প্লট বুঝিয়ে দেওয়ার কথা বললে জীবননাশের হুমকি দেওয়া হয়। এরকম শত শত মানুষের শতশত বিঘা জমি দখল করে নিয়েছে আশিয়ান সিটি। এখানে যারা আছেন সবাই তারা কিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তা তুলে ধরবেন।

লিখিত বক্তব্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০০৯ সালে খিলক্ষেত থানার বড়ুয়া দক্ষিণ পাড়ায় আমার মা আনোয়ারা মায়ার এক বিঘা জমি দখল করে নিয়েছে আশিয়ান সিটি। এই জমির দলিল, নামজারি, খাজনাসহ সকল কাগজপত্র আমার নামে। এই জমি নিয়ে বিবাদের জেরে আমার মামাকে তারা হত্যা করেছে। আদালতে গিয়েছি তাদের বিরুদ্ধে। আদালত ওই জমির উপর ইনজাংশন দিয়ে বলেছেন, কোন পক্ষ কিছু করতে পারবে না।

গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই সেই জমি সন্ত্রাসীবাহিনী দিয়ে অস্ত্রের মুখে দখল করে নেওয়া হয়েছে। এব্যাপারে খিলক্ষেত থানায় গিয়ে কোন লাভ হয়নি। আশিয়ানের বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরি পর্যন্ত নেয়নি।
তিনি আরো বলেন, বিতর্কিত এই আশিয়ান সিটির মালিক ভূমিদস্যু নজরুল ইসলাম ভূইয়া এতোদিন আওয়ামী লীগের দোসর হয়ে দখলবাজির মাধ্যমে জমির অবৈধ ব্যবসা করেছে।

তখন জমি খেকো এই নজরুলের মূল পৃষ্ঠপোষক ছিলো সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই কর্মকর্তা মেজর জেনারেল শেখ মামুন খালেদ, পুলিশের বেনজীর, হারুণ, মনির, আসাদুজ্জামান মিয়া, হাবিব, আওয়ামী লীগ নেতা মৃত সাহারা খাতুন, তোফাজ্জল চেয়্যারম্যান, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মফিজ, নাঈমসহ আরো অনেকে। আশিয়ান সিটির ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের মধ্যে যারা ওই এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তারা হলেন-আব্বাস আলী, ওলীউল্লাহ, রাশেদুল, নুরুল্লাহ, ফাহিম, আনিস, জিহাদ, নুরুল, সাইফুল, জাহিদুল, মজিবর, রিয়াজসহ আরো অনেকে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই নজরুল এখন বিএনপির নাম ভাঙিয়ে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

খিলক্ষেত, উত্তরখান, দক্ষিণ খান, ও বড়ুড়া মৌজায় প্রতিদিনই কাউকে না কাউকে ভিটে মাটি ছাড়া করা হচ্ছে। স্থানীয় সাধারণ মানুষ তাদের হাতে জিম্মি। বংশ পরম্পরায় পূর্বপুরুষের বসতভিটা, জমি জমা, খামার, ফসলি জমি, সরকারের খাসজমি, জলাশয় ভরাট করে তারা অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

কেউ এর প্রতিবাদ করতে গেলেই নজরুল বাহিনী লেলিয়ে দেয়া হয়। নজরুল বাহিনীর অত্যাচার-নির্যাচনের বহু ছবি আপনাদের আমরা দেখাতে পারবো। এই সন্ত্রাসীবাহিনী সারাদিন আশকুনা, কাউলা, দক্ষিণখান, উত্তরখান, বউরা, এবং খিলক্ষেত এলাকায় অস্ত্রহাতে টহল দেয়।
এলাকাবাসী কিংবা ভূক্তভোগীরা এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে শত ক্ষোভ-বিক্ষোভ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না। পুলিশের কাছে অভিযোগ করার পরও পুলিশ ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিকদের নিরাপত্তায় কোনো আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

অভিযোগ আছে আশিয়ান সিটি পুলিশ, মাস্তান, ক্যাডার, রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনকে প্রচুর টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করে রাখে। আর রাজউক তাদের অবৈধ কাজ বন্ধ রাখার নোটিশ দিয়েই ক্ষান্ত। রাজউকের তরফ থেকে ব্যক্তিগত মালিকানার জমিজমা দূরে থাক সরকারি খাস জমি রক্ষায় এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অন্যদিকে জুলাই-আগষ্ট আন্দোলনে ১ ডজনেরও বেশি ছাত্র হত্যা মামলার আসামী হয়েও নজরুল, সাইফুল, জাহিদুল আছে বহাল তবিয়তে। আর এই আন্দোলনে ছাত্রদের সমর্থক আমরা পথে পথে ঘুরছি।

এই অবস্থায় আমরা নিরুপায় হয়ে আপনাদের দ্বারস্থ হয়েছি। আমরা আমাদের পৈত্রিক জমি ফেরত চাই, কেনা প্লট বুঝে পেতে চাই। এজন্য আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহম্মদ ইউনূসের হস্তক্ষেপ চাই। স্বাধীন দেশে মানুষের জমি জমা দখল করে এমন দুই নাম্বারী ব্যবসা এখনি বন্ধ করা হোক। এছাড়া রিহ্যাব ফেয়ারে এখনো আশিয়ান অন্যের জায়গা বিক্রির যে তৎপরতা চালাচ্ছে তা বন্ধ করতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কার্যকরী উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *