উপহারের প্লট নেয়ার অভিযোগ ওঠার পর প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে আসলেন টিউলিপ সিদ্দিক

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি আইন ও আদালত আন্তর্জাতিক জাতীয় বিশেষ প্রতিবেদন রাজনীতি

আজকের দেশ ডটকম ডেস্ক  :  যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মন্ত্রী (ইকোনমিক সেক্রেটারি) টিউলিপ সিদ্দিক সম্প্রতি নিজের বিরুদ্ধে ওঠা একাধিক অভিযোগের বিষয়ে স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। অভিযোগে বলা হচ্ছে, তিনি বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের নেতাদের সঙ্গে একাধিক ব্যক্তির মালিকানাধীন ফ্ল্যাটে বসবাস করেছেন। এসব অভিযোগের কারণে তার পদত্যাগের বিষয়ে আলোচনা উঠছে।


বিজ্ঞাপন

এসব অভিযোগের পর প্রথম প্রকাশ্যে দেখা গেছে টিউলিপকে। সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বুধবার (৮ জানুয়ারি) তাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অফিসে যেতে দেখা গেছে। সে সময় ক্যামেরাবন্দি করা হয় তাকে।


বিজ্ঞাপন

টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে লন্ডনের বিভিন্ন এলাকায় একাধিক ফ্ল্যাটে বসবাস করার অভিযোগ ওঠে। যেগুলোর তাকে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এসব ফ্ল্যাট তাকে বিনা মূল্যে দেওয়া হয়েছিল।

ফিন্যান্সিয়াল টাইমস ও সানডে টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা গেছে, ২০০৪ সালে আবদুল মোতালিফ নামক এক আবাসন ব্যবসায়ী টিউলিপকে বিনামূল্যে একটি ফ্ল্যাট দেন। মোতালিফের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাদের সম্পর্ক ছিল। এ ছাড়া টিউলিপের বোনও মঈন গনি নামের এক আইনজীবী থেকে আরেকটি ফ্ল্যাট পেয়েছিলেন। তিনিও আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

টিউলিপ সিদ্দিক এই অভিযোগগুলোর বিরুদ্ধে সরাসরি প্রতিবাদ করেছেন। তিনি এক চিঠিতে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা লাউরি ম্যাগনাসকে তদন্তের আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমি ভুল কিছুই করিনি, তবে এই বিষয়গুলো নিয়ে স্বাধীনভাবে সত্যটি সামনে আনুন। টিউলিপের দাবি, গণমাধ্যমে প্রকাশিত অনেক তথ্য সঠিক নয়। এসব অভিযোগের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে চান তিনি।

বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট ৬১টি ব্যাংককে টিউলিপ সিদ্দিকের অ্যাকাউন্ট ও লেনদেনের রেকর্ড জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে এই আদেশে তার নাম, জন্ম তারিখ, বাবা-মায়ের নাম ও স্বামীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

টিউলিপ সিদ্দিকের একজন মুখপাত্র গণমাধ্যমে বলেছেন, এই অভিযোগের জন্য কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। টিউলিপের সঙ্গে কেউ এই বিষয়ে যোগাযোগ করেনি। তিনি পুরোপুরি এই দাবি অস্বীকার করেন।

এদিকে টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের চাপও বাড়ছে। যুক্তরাজ্যের কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ক্রিস ফিলিপ তার পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, টিউলিপ সিদ্দিককে তার ব্যক্তিগত সম্পদের উৎস ব্যাখ্যা করতে হবে। তিনি যে সব ফ্ল্যাটে বসবাস করেছেন সেগুলো আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতির সম্পদ কিনা- তা ব্যাখা তাকে ব্যাখ্যা করতে হবে। এসব প্রশ্নের উত্তর না মেলা পর্যন্ত টিউলিপকে তার পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হবে।

এ ছাড়া টিউলিপ সিদ্দিক, তার খালা শেখ হাসিনা, মা শেখ রেহানা এবং শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) । ৯টি প্রকল্পে প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে এই অনুসন্ধান চলছে।

এদিকে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার টিউলিপ সিদ্দিকের পাশে দাঁড়িয়ে বলেছেন, তিনি তার প্রতি আস্থা রাখেন। তবে লেবার পার্টির কিছু জ্যেষ্ঠ নেতা মনে করছেন, টিউলিপের ব্যক্তিগত আর্থিক বিষয়গুলোর কারণে দলের জন্য তা সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *