প্রহসনের নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার আগেই সেক্রেটারি প্রার্থী আগষ্টিন পূত্র প্যাপিলন পিউরিফিকেশনের শুভ কামনা করে, স্ট্যাটাস দিয়েছেন হাউজিং ও কালব এর দখলদার ডেভিড প্রবিন রোজারিও। প্যাপিলন পিউরিফিকেশন ইতিমধ্যে হাউজিং এ দুর্নীতির ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। হাউজিং এ ঠিকাদারির নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এখন দায়িত্ব নিয়ে দুর্নীতির ষোলকলা পূর্ণ করার প্রস্তুতি নিয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক : সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ঘনিষ্ঠ সহোচর দি মেট্রোপলিটন খ্রিষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেড এর দখলদার অবৈধ চেয়ারম্যান আগষ্টিন পিউরিফিকিশেন পূর্বের মত একটি প্রহসনের নির্বাচনের আয়োজন করতে যাচ্ছেন। সদস্যরা যাতে নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে না পারে;সেজন্যে ৬০ দিনের স্থলে ৩০ দিনের পূর্বে তফসিল প্রকাশ করেছে। এবং ভোটার তালিকা প্রকাশ করেনি।
ভোটার তালিকা না দেয়ার সমালোচনা করায় উল্টো সদস্য পদ বাতিল করার উদ্যেগ নিয়েছে। আগ্রহী প্রার্থীদের আগষ্টিন তার পোষা সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে নির্বাচন না করার হুমকি দিচ্ছে। সদস্যদের মধ্যে গুম খুনের আতংক বিরাজ করছে। মাফিয়া আগষ্টিনের ব্যবসায়িক অংশীদার ও সাবেক ডিবি কমিশনার হারুনুর রশিদের একান্ত আস্থাভাজন সহোচর এবং বর্তমানে এসবি’র পরিদর্শক নাজমুল হক-কে দিয়ে আগ্রহী প্রার্থীদের মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে।
অন্যদিকে মাফিয়া আগষ্টিনের অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলে রাখতে সহযোগিতা করছেন সমবায় অধিদপ্তরের অতিরিক্ত নিবন্ধক আহসান কবির,যুগ্ম নিবন্ধক শেখ কামাল হোসেন ও উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা রুহুল আমিনসহ কতিপয় অসাধু ককর্মকর্তা। উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা রুহুল আমিন সরকারি চাকুরি বিধি লংঘন করে দি মেট্রোপলিটন খ্রিষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেড-এ চাকরি করছেন। তিনি মাসিক বেতনের ভিত্তিতে নিয়মিত অফিস করেন।
এদিকে মাফিয়া আগষ্টিনের অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলে রাখতে সহযোগিতা করছেন;পতিত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর নির্মল রোজারিও,পংকজ গিলবার্ট কস্তা,বাবু মার্কুজ গোমেজ ও ইগ্নাসিওস হেমন্ত কোড়াইয়া। তার সাথে যুক্ত হয়েছে অর্থলোভি কতিপয় বিএনপি নেতা। বর্তমানে কতিপয় পিএনপি নেতাকে ম্যানেজ করে আগষ্টিন অবৈধভাবে দি মেট্রোপলিটন খ্রিষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেড ও দি কোÑঅপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লীগ অব বাংলাদেশ লি: দখল করে রেখেছেন।
সূত্রমতে, দি মেট্রোপলিটন খ্রিষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেড এর সদস্য(নং-১৭৬৯৬)শ্রীলা তেরেজা সরকার ৯/১/২০২৫ তারিখে সমবায় অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় যুগ্ম নিবন্ধক বরাবর এবিষয়ে একটি সালিশী মামলা দায়ের করেছেন। সালিশী মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে-” বিধি মোতাবেক ঘোষিত নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ বৈধ ভোটার তালিকা পাওয়ার জন্যে ৫/১/২০২৫ তারিখে নির্বাচন কমিটির সভাপতির বরাবর আবেদন করি।এর প্রেক্ষিতে আমার সদস্য পদ বাতিলের কারণ দর্শানোর চিঠি জারি করা হয়। সমবায় সমিতি আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী নির্বাচনের নোটিশ জারির ৬০ দিনের মধ্যে এবং নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে বিদায়ী ব্যবস্থাপনা কমিটি সদস্য পদ বাতিলের চিঠি জারির আইনগত বৈধতা এবং আইন ভঙ্গের জন্যে সমবায় সমিতি আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী কমিটির বিরুদ্ধে দন্ড প্রদানের জন্যে সালিশি মামলা দায়ের করছি”।
জানাগেছে, তিনি ০৮-১২-২০০৬ হতে ০৮/১২/২০০৯ পর্যন্ত সমিতির বোর্ড ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন। ০৬-১২-২০১২ তারিখ থেকে একটানা চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন। কেবল প্রথমবার নির্বাচনের মাধ্যমে চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। পরে সমবায় অধিদপ্তরের কতিপয় অসৎ কর্মকর্তার সহায়তায় কায়দা কৌশল করে প্রহসনের নির্বাচন দেখিয়ে ”বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায়” নির্বাচিত হয়েছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের জেল জুলুমের ভয় দেখিয়ে নির্বাচন থেকে সরিয়ে দিয়েছেন। এবার নিজের পরিবারের সদস্যদের প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে;ক্ষমতায় বসিয়ে পেছন থেকে সমিতি চালানোর ফন্দি এটেছেন আগষ্টিন।
আগষ্টিন পিউরিফিকেশন দি মেট্রোপলিটন খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লি: এ বর্তমানেও অবৈধভাবে চেয়ারম্যান পদে আছেন। কেননা, সমবায় আইন ২০০১(সংশোধিত ২০১৩) এর ১৮(৮) ধারায় বলা হয়েছে”ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য হিসেবে একাধিক্রমে তিনটি মেয়াদ পূর্ণ করিয়াছেন এমন কোন সদস্য উক্ত মেয়াদের অব্যবহিত পরবর্তি একটি মেয়াদের নির্বাচনে প্রার্থী হইবার যোগ্য হইবেন না”। অথচ সমবায়ের মাফিয়া খ্যাত দর্জি আগষ্টিন পিউরিফিকেশন দি মেট্রোপলিটন খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লি:(এমসিসিএইচএসএল) এ অবৈধভাবে চতুর্থ মেয়াদে চেয়ারম্যানের পদ দখল করে আছেন।
এবিষয়ে সমবায় অধিদপ্তরের ২০২০-২১ অর্থবছরের অডিট রিপোর্টে চতুর্থ মেয়াদে নির্বাচিত দেখানো চেয়ারম্যান সহ ৪ জনকে অপসারনের নির্দেশনা দেয়া হয় এবং তাদের স্বাক্ষরে ব্যাংক একাউন্ট পরিচালনা বন্ধ করতে বলা হয়।
আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর তার ব্যবসায়িক পার্টনার সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক থাকলেও রহস্যজনক কারনে আগষ্টিন পিউরিফিকেশন গং দম্ভের সাথে এখনো পদ দখল করে রেখেছেন।
উল্লেখ্য, সাবেক আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ছত্রছায়ায় লুটপাট করে আমেরিকা যুক্তরাষ্টের মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ১১৩ হোলল্যান্ডে দু’টি বাড়ি, গাজীপুর জেলার টঙ্গী থানাধিন পাগাড়ে ১৫ কাঠার উপর বিলাশবহুল বাড়ী,টঙ্গীস্থ জীনুর মার্কেটে ২টি ১০ তালা বিল্ডিং, তেজগাঁও হুন্ডা গলিতে ২টি ফ্লাট, তেজগাঁওয়ের ১২২ মনিপুরিপাড়ায় ১টি ফ্লাট, উওরা ১৬ নং সেক্টরে ৫ কাঠা প্লট , এশিয়ান টাউনে ২টি প্লট ,পাগাড়ে ১ বিঘার প্লট , শেরপুর বার মারিতে আড়াই বিঘা প্লট ,তুমিলিয়ায় ২০ বিঘা প্লট , বাটারা ৪ নং সেক্টরে ২টি প্লট , ২য় স্ত্রী লতার নামে উওরার ৯ নং সেক্টরে ২টি প্লট , মাউসাইদে ২ বিঘা প্লট,উত্তরার দক্ষিণখানে ৫০ বিঘার প্লট এবং ভাদুনে ১টি প্লট ।নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে ব্যাংকে কোটি কোটি টাকার এফডিআর। উক্ত সম্পদ তার জ্ঞাত আয়ের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। অন্যদিকে তিনি দি মেট্রোপলিটন খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লি:এ লুটপাট করে মানিলন্ডারিং প্রক্রিয়ায় অবৈধভাবে আমেরিকায় অর্থ পাচার করে সেখানে বাড়ি ক্রয় করেছেন।
গাজীপুর জেলার টঙ্গী থানার পাগার গ্রামের এককালের দর্জি ও জমির দালাল আগষ্টিন পিউরিফিকেশন গত ০৩-০২-১৯৯২ তারিখে দি মেট্রোপলিটন খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লি: (এমসিসিএইচএসএল) এর সদস্য হন। এরপর আলাদিনের চেরাগ হাতে পেয়ে যান।চেরাগ ঘষে এখন হাজার কোটি টাকার মালিক! ১২ বছরে দর্জি আর জমির দালাল থেকে হয়ে গেছেন ধনকুবের সমাজসেবি। উচ্চ শিক্ষা বঞ্চিত দর্জি আগষ্টিন বনে গেছেন বিশিষ্ট সমবায়ী। তদবিরের মাধ্যমে বাগিয়ে নিয়েছেন শ্রেষ্ঠ সমবায়ির পুরস্কার।সমবায় সমিতির টাকা ব্যয় করে সেজেছেন সমাজসেবি।
সকল অপকর্মজানিত রোষানল থেকে বাঁচতে সমিতির প্রধান কার্যালয়ে ট্রেডিশন ভঙ্গ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছবি মার্বেল পাথরে খোদাই করে রেখেছিলেন। সাবেক আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য , সমবায় প্রতিমন্ত্রীর পুত্র এবং স্বরাষ্ট্র আসাদুজ্জামান খান কামাল এর নাম ভাঙ্গিয়ে চলতেন।
গতবছরের ৫ আগষ্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন সংগ্রামের ফলে সাবেক আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার পতনের পর আগস্টিন পিউরিফিকেশন এর দোসর ও সহোযোগিতায় থাকা মন্ত্রীদের মুরাল ভেঙ্গে ফেলেছেন।
এজিএম-এ অনুমোদন ছাড়া সমিতির টাকা দিয়ে তেজগাঁও থানায় ভ্যান উপহার দিয়ে বনেছিলেন পুলিশ বন্ধু। পুলিশ দিয়ে প্রতিবাদি নিরাপরাধ সদস্যদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে নির্যাতন করেছেন।