ফরিদপুরের চরভদ্রান ও সদরপুরে পদ্মা নদীতে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত গ্রাম বাংলার খবর জাতীয় বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ

ফরিদপুর  প্রতিনিধি :  নদী ভাঙন যেন এক আতঙ্কের নাম। গত কয়েক বছর ধরে পদ্মায় অব্যাহত ভাঙনে দিশেহারা ফরিদপুরের চরভদ্রাসন ও সদরপুর উপজেলার শত-শত পরিবার। এরই মধ্যে ভিটেমাটি, ঘড়-বাড়ি, ফসলি জমি, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গিলে খেয়েছে এই পদ্মা। নিঃস্ব হয়েছে শত-শত পরিবার, কারও কারও ঠাই হয়েছে রাস্তার পাশে। এরই মধ্যে আরেক আতঙ্ক যুক্ত হয়েছে পদ্মা নদীতে। অবৈধ ড্রেজার দিয়ে শুরু হয়েছে অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন।


বিজ্ঞাপন

প্রতি বর্ষা মৌসুমে পদ্মার ভাঙন তীব্র থেকে তীব্রতর হয়। এরই মধ্যে পদ্মা ভাঙন ঠেকাতে চরভদ্রাসন ও সদরপুর উপজেলা রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে নদী তীরবর্তী এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে নদী শাসনের কাজ করা হয়েছে। ভাঙন থেকে কিছুটা রক্ষা হলেও পদ্মা-নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে যুক্ত হয়েছে নতুন আতঙ্ক অবৈধ ড্রেজার। অবৈধ ড্রেজার দিয়ে অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন করে এই বালু চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাল্কহেড (মাটিবাহী জাহাজ)এর মাধ্যমে। ছোট-বড় বেশ কয়েকটি ড্রেজার দিয়ে অপরিকল্পিত ড্রেজিংয়ের ফলে নদী ভাঙন আরও তীব্র থেকে তীব্রতর হতে পারে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ রয়েছে। এছারা বাধের কাজে আসা ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে অন্যত্র বিক্রি করা হচ্ছে বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। এছারাও  ড্রেজার দিয়ে রাতের আধারে চলে বালু উত্তোলন। ভোর হওয়ার পুর্বেই সটকে পরেন তারা।


বিজ্ঞাপন

গত কয়েকদিন দিন যাবৎ পদ্মা-নদী থেকে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছে তারা, অনুমতি কে দিয়েছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ড্রেজারের আরেক শ্রমিক জানান, আমরা শ্রমিক, অনুমতি কে দিয়েছে আমরা বলতে পারি না। বাধের কাজে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শ্রমিক জানান, আমরা বাধের কাজে আসছি, বালুর মান সম্বন্ধে জানা নেই, পদ্মার বালু কেটে পদ্মায় ফেলছি।

পদ্মা পাড়ের এতো কাছ থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু কাটলে পারের অনেক ক্ষতি হবে, এমনটাই জানালেন আকোটের চর  ইউনিয়নের বাসিন্দা মজিবর। আনলোডার দিয়ে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় বালু ব্যবসায়ীদের বালু সাপ্লায়ার  এক শ্রমিক (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, গত তিনদিনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজে বালু দেয়া ড্রেজার থেকে ৫ বলগেট ১ টাকা ফুট দরে ক্রয় করে আনা হয়ছে।

স্থানীয়রা জানান, গত ৫ই আগস্ট হাসিনা সরকার পতনের আগে এক শ্রেণির বালুখেকো আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে নামে-বেনামে বালু উত্তোলন করে আসছিলেন। সরকারের পট পরিবর্তনে সবাই ভেবে ছিলেন এবার অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ হবে। এর ফলে নদী ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পাবে পদ্মা নদী পাড়ের মানুষ। কিন্তু বাস্তবে সেটা হয়নি। হাতঘুরে অন্য বালুখেকোরা বালু উত্তোলনে যুক্ত হয়েছেন। এদের বিরুদ্ধে কথা বললে শুরু হয় হুমকি-ধমকি ও মারধরের ঘটনা। এখন দেখা যাচ্ছে, শুধু মুখ বদল হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের নিরব ভূমিকা নিয়ে চিন্তিত এলাকাবাসী। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে দুই উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা র মুটোফোনে যোগাযোগ এর চেষ্টা করলে ফোন রিসিভ করেন নি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদ্বয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *