নিজস্ব প্রতিবেদক : গতকাল , বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি ,জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, রাজনৈতিকভাবে দেশের অবস্থা অস্থির ও অনিশ্চিত। যারা দেশ চালাচ্ছে, তারাও জানেনা একমাস পর কি হবে। গেলো বছর ৫ আগষ্টের আগে সারাদেশে আওয়ামী লীগ ছাড়া কিছুই ছিলোনা, এক দিনের ব্যবধানে কোথাও আওয়ামী লীগ নেই। যারা দীর্ঘ দিন নির্যাতনের শিকার হয়েছে, সাধারণ মানুষ তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। যারা দীর্ঘ দিন ক্ষমতায় ছিলোনা, সাধারণ মানুষের জন্য কোন কাজ করতে পারেনি। নির্যাতিত হয়ে পালিয়ে বেড়িয়েছে, দেশের মানুষ কিন্তু নির্যাতিত মানুষের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। জনগণের কথা বলতে গিয়ে নির্যাতিত হলে, সাধারণ মানুষ নির্যাতিতদের পক্ষে থাকে। দেশের মানুষ দেখতে চায়, তাদের পক্ষে কারা অবস্থান নেয়। মানুষের অধিকারের জন্য কাজ করলে, তা বিফলে যায় না। দেশের মানুষ এখন জাতীয় পার্টির দিকে ঝুঁকছে। তারা বিশ^াস করে, জাতীয় পার্টি তাদের অধিকারের কথা বলতে পারবে।
আজ দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের কার্যালয় মিলনায়তনে মুন্সিগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টি নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভায় গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ কথা বলেন।
এসময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, দেশের বেশিরভাগ মানুষ বর্তমান সরকারের উপর আস্থা হারিয়েছে। দেশের মানুষ বর্তমান সময়ে শো-ডাউন করা দলগুলোরও ওপরও বিরক্ত। তারা সরকারি দলের মত আচরণ করছে। বর্তমান সরকার সকল ক্ষেত্রে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। এই স্রোতের বিপক্ষে শুধু মাঠে আছে জাতীয় পার্টি। প্রতিটি অন্যায়-অবিচারের প্রতিবাদ করবে জাতীয় পার্টি। দেশের আইন-শৃঙখলা পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেই, কে নিয়ন্ত্রণ করছে তা কেউ জানেনা। সরকারের কোন পরিকল্পনা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি প্রতিদিনই অবনতি হচ্ছে। দেশের মানুষের জান ও মালের কোন নিরাপত্তা নেই। সরকারের সাথে যারা আছে, তাদেরও নিরাপত্তা নিশ্চিত নয়। প্রতিদিন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারনে, মানুষ আয় দিয়ে ব্যয় নির্বাহ করতে পারছে না। কলকারখানা বন্ধ হয়ে হাজার হাজার কর্মী বেকার হয়ে পড়ছে। দেশের আমদানী-রফতানী অস্বাভাবিক হয়ে পড়েছে। আধাপেট খাওয়া ও না খেয়ে থাকা মানুষের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। দূর্বল আইন-শৃংখলা পরিস্থিতিতে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা বাড়লে, যেকোন অজুহাতে দেশে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরী হলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পরে। দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ অনিশ্চিত হয়ে ওঠে। নির্যাতিত ও নির্যাতনকারী এই দুই ভাগে দেশ বিভক্ত হয়ে গেছে। বাঁচার জন্য নির্যাতিতরা ঘুরে দাঁড়ালে সাংঘর্ষিক অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে।
গোলাম মোহাম্মদ কাদের এসময় আরো বলেন, এমন বাস্তবতা থেকে উত্তোরণের জন্য শক্তিশালী সরকার দরকার। শক্তিশালী সরকারের জন্য দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্য একটি ভালো নির্বাচন দরকার। বর্তমান সরকার কি একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে পারবে? এখনই তারা আমাদের সাথে বৈষম্য করছে। আমাদের নামে মিথ্যা হত্যা মামলা দিয়েছে। আমাদের নেতা-কর্মীরা রাস্তায় নামলে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। আমাদের নেতাদের গ্রেফতার করা হলে, তাদের জামিন দিচ্ছে না। জাতীয় পার্টি নব্য ফ্যাসিবাদের শিকার হচ্ছে। আমাদের নির্বাচন থেকে বাদ দিতে চাচ্ছে। বেশির ভাগ মানুষের প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দলগুলোকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করলে, তাতে গ্রহণযোগ্য সরকার গঠিত হবে না।
জাতীয় পার্টির মুন্সিগঞ্জ জেলা শাখার নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির সাথে সাংগঠনিক আলোচনা সভায় ঢাকা বিভাগীয় অতিরিক্ত মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকা’র সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টি মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার। এসময় উপস্থিত ছিলেন-প্রেসিডিয়াম সদস্য এটিইউ তাজ রহমান, এ্যাড. মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, মোঃ জহিরুল ইসলাম জহির, মোঃ আরিফুর রহমান খান, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মোঃ খলিলুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ রাজু, চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারী খন্দকার দেলোয়ার জালালী, সম্পাদকমন্ডলী মোঃ হুমায়ুন খান, মাহমুদ আলম, এম এ রাজ্জাক খান, মোঃ মিজানুর রহমান মিরু, ইঞ্জিনিয়ার এলাহান উদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক আজহারুল ইসলাম সরকার, সমরেশ মন্ডল মানিক, দ্বীন ইসলাম শেখ, কেন্দ্রীয় নেতা জিএম বাবু, মেহেদী হাসান শিপন, আব্দুর রহিম, নজরুল ইসলাম, জাতীয় ছাত্র সমাজ এর সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল রেজা। জেলা নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আহ্বায়ক জামাল হোসেন, সদস্য সচিব এএফএম আরিফুজ্জামান দিদার, নেতৃবৃন্দ।