বিশেষ প্রতিবেদক : তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন পিএলসি’র কর্মচারী ফয়েজ আহমেদ লিটন নানা অপরাধ,অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তি। তার বিরুদ্ধে ১৯৯২ সালে তিতাস গ্যাসের কর্মচারী বিল্লাল হোসেন বেপারীকে হত্যার অভিযোগ হয়েছিল। সেই মামলায় কারা ভোগ করে চাকরি চ্যুত হয়েছিলেন ফয়েজ আহমেদ লিটন। জানা যায় সেই সময়ে বিল্লাল হোসেন বেপারীকে তিতাস গ্যাস ভবনের তৎকালীন ৭তলা থেকে নিচে ফেলে হত্যা করা হয়। যার অন্যতম অভিযুক্ত ফয়েজ আহমেদ লিটন।
পরবর্তীতে ১৯৯৮-৯৯ সালে ওই মামলায় সমঝোতা হয়। এর প্রেক্ষিতে দুই হাজার সালে তিনি তিতাসের চাকরিতে পুনর্বহাল হন।গত ২০০১ সালের পর তাকে তিতাস গ্যাসের বিএনপি সমর্থিত শ্রমিক সংগঠনের নেতা হাবিবুর রহমানের সাথে চলাফেরা করতে দেখা যায়।গত ২০০৭ সালে তিতাস গ্যাসের টাস্ক ফোর্সের দায়িত্ব পান কর্নেল মোঃ হাসান আহমেদ সেই সময়ে ওয়ান ইলেভেন চলাকালে তিতাস গ্যাসের দুর্নীতিবাজ নেতাদের নামে মামলা হয় সেই মামলায় আসামী হন ফয়েজ আহমেদ লিটন।
এরপর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তাকে তিতাস গ্যাস কর্মচারী ইউনিয়ন সিবিএ সভাপতি মরহুম কাজিম উদ্দিন এর সাথে চলাফেলা করতে দেখা যায়। তার সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে অবৈধ সংযোগ এবং তিতাস গ্যাসের নানা কাজ বাগিয়ে নিতেন তিনি। সে এসএসসি সার্টিফিকেট দিয়ে তিতাস গ্যাসে ওয়েল্ডার হিসেবে যোগদান করে। অথচ নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েশন করা বলে দাবি করেন। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান না হলেও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান দাবি করেন।
বর্তমানে ফয়েজ আহমেদ লিটন সোনারগাঁও অফিসে কর্মরত রয়েছেন। তিনি তিতাস গ্যাসের অনুমোদন বিহীন জাতীয়তাবাদী কর্মচারী ইউনিয়নের স্বঘোষিত নেতা। তিনি নিজেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা সেজে প্রতারণার অভিযোগে দল থেকে বহিষ্কার হয়েছেন ইতোপূর্বে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নিয়েছেন বলে প্রচার করেন। নিজেকে একজন মুক্তিযুদ্ধের বীর প্রতীকের সন্তান হিসেবে প্রচার করেন।
বাস্তবে কোনটারই গ্রহণযোগ্য প্রমাণ দেখাতে পারবেন না। সুযোগ পেলেই উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা অথবা বড় বড় নেতাদের পাশে বসে ছবি তুলে সেলফি বাণিজ্য করে।
বিএনপি কর্মীকে হত্যার মামলাকে আওয়ামী লীগ আমলে নির্যাতিত হয়েছেন বলে প্রচার করছেন। এবং তিনি বলে থাকেন বিভিন্ন সময় আয়না ঘরে গেছেন। তার এসব কথা আগাগোড়া ডাহা মিথ্যা। এমনটি জানিয়েছেন তার ঘনিষ্ঠ জনেরা।
গত দেড় যুগে ফয়েজ আহমেদ লিটন বিএনপি’র কোন আন্দোলন সংগ্রাম কিছুর সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না। ২০০১ সালের পূর্বের কিছু ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে তিনি বিএনপি সমর্থিত কর্মচারী ইউনিয়নে মাথা ঘামানোর চেষ্টা করে থাকেন। বিএনপি হাই কমান্ডের নেতাদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে নানা অপকর্ম করে বেড়ান এই ফয়েজ আহমেদ লিটন।
তিতাস গ্যাসের জোবিঅ-সোনারগাঁ অফিসে কর্মরত থেকে ফয়েজ আহমেদ লিটন রূপগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান, বাসাবাড়ির অবৈধ গ্যাস সংযোগ ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে অভিযানের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়।
তিতাস গ্যাসের জোবিঅ-সোনারগাঁ অফিসের সাহায্যকারী খৈয়ম ব্যাপারী, বিক্রয় সহকারি ফাইজুল, এবং লুঙ্গি পার্টি শামীমের মাধ্যমে অবৈধ সংযোগ থেকে গত কয়েক মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ফয়েজ আহমেদ লিটন।
অবৈধ সংযোগ থেকে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনে গেছেন তিনি।গত কিছুদিন আগে তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা কালে যারা তিতাস কর্মকর্তা কর্মচারীদের উপর হামলা চালিয়েছিল সেই ঘটনায় মামলায় অভিযুক্ত লোকজনের সাথে ফয়েজ আহমেদ নিয়মিত উঠাবসা করেন।
সে বিএনপির নেতা হত্যা মামলার আসামি হওয়ায় অনেকেই তার বিষয়ে মুখ খুলতে সাহস পায় না। গত আওয়ামী লীগের আমলে শ্রমিকলীগ সমর্থিত তিতাস গ্যাসের কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ) সভাপতি কাজিমুদ্দিন প্রধানের সাথে আতাত করে অনেক সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন পিএলসি’র জাতীয়তাবাদী কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি জুলফিকার মতিন বলেন, আসলে ফয়েজ আহমেদ লিটন আমাদের সংগঠনের কেউনাা। স্বাক্ষর জালিয়াতির কারণে তাকে আগেই সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এবং তিনি দলের যথেষ্ট পরিমাণ দুর্নাম করেছেন যার কারণে তাকে শাস্তিও দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে ফয়েজ আহমেদ লিটনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি, বিধায় তার কোন প্রকার বক্তব্য প্রকাশিত হলো না।