ফরিদপুর প্রতিনিধি : ফরিদপুরের চরভদ্রাসনের মাথাভাঙ্গা গ্রামের পদ্মা নদীতে আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে গত কদিন ধরে চলছে জাটকা ইলিশ নিধনের মাহাযজ্ঞ। পদ্মা নদীর উক্ত পয়েন্টের দুটি বালু চরের মধ্যবর্তী জলমহালে আড়াআড়িভাবে সারি সারি বাঁশ পুঁতে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। পদ্মা নদীর দুটি চরের মধ্যবর্তী প্রায় এক কিলোমিটার জলমহাল এলাকাজুড়ে সারি সারি বাঁশের পানির নিচের অংশের গায়ে জাল দিয়ে ঘিরে রেখে কয়েকশ’ মিটার পর পর রাক্ষসী জালের ফাঁদ নির্মাণ করে রাখা হয়েছে বলেও জানা গেছে। ফলে পদ্মা নদীর উক্ত জলমহাল এলাকার সব ধরনের জাটকা ও ইলিশ চলাচল করতে না পেরে আটকা পড়ছে আড়াআড়ি বাঁধের ফাঁদে।
শুধু তাই নয়, ইলিশ ছাড়াও পদ্মা নদীর বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চলাচলের কোনো পথ না পেয়ে ঘুরে ফিরে আটকা পড়ছে উক্ত বাঁধের ফাঁদ জালে। কয়েক ঘণ্টা পর পর অসাধু জেলেরা বাঁধের মাছ ধরে বিক্রি করছে বিভিন্ন বাজারে। এতে উপজেলা পদ্মা নদীতে গত কদিন ধরে দিনরাত অবাধে নিধন হচ্ছে জাটকা ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতীর মৎস্য সম্পদ। সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, উপজেলা সদর ইউনিয়নের মাথাভাঙ্গা গ্রামের পদ্মা পারে কলাবাগান এলাকায় নদী পার হতে সারি সারি বাঁশ পুঁতে প্রায় অর্ধেক পদ্মাজুড়ে আড়াআড়ি বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। পদ্মা নদীতে উক্ত বাঁশের বেড়ার পানির নিচের অংশে বাঁশের গায়ে ঘন জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে।
এভাবে বাঁশ জাল দিয়ে জলাশয়ে মাছ চলাচলের পথ বন্ধ করে বাঁধের কয়েক মিটার পর পর তৈরি করে রাখা হয়েছে জাটকা ও ইলিশ আটকের ফাঁদ। আর উক্ত বাঁধের জেলেরা দু’ঘণ্টা অন্তর অন্তর বাঁধের ফাঁদে পড়া জাটকা ও ইলিশ তুলে এনে বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করে চলেছে। আড়াআড়ি বাঁধের এক মালিক হিটু মৃধা জানান, অনেক টাকা খরচ করে মাত্র কয়েকদিন ধরে বাঁধ দিয়েছি। বাঁধে এখনো পর্যাপ্ত মাছ আসে নাই। শুধু জেলেদের খাওয়া খরচ চলছে। পদ্মা নদীতে এ বাঁধ নির্মাণের সঙ্গে এলাকার আরও দুএকজন প্রভাবশালীরা জড়িত আছেন বলে তিনি জানান।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাঈদ হাসান বিপ্লব বলেন, আমার নতুন পোস্টিং হয়েছে। আমি শুনেছি পদ্মা নদীতে একটি আড়াআড়ি বাঁধ দেওয়া হয়েছে। বাঁধটির এক অংশ নাকি সদরপুর উপজেলা ও অন্য অংশ নাকি চরভদ্রাসন উপজেলা পদ্মা নদীর জল সীমানায় পড়েছে। তাই ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে যৌথভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছি। ইউএনও মোহাম্মদ ফয়সল বিন করিম জানান, পদ্মা নদীতে আড়াআড়ি বাঁধ শিগগিরই অপসারণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।