মোঃ সাইফুর রশিদ চৌধুরী : গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ সন্দেহে আটক ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের উপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় ৫৫৫ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
সোমবার ৩ ফেব্রুয়ারী দুপুরে টুঙ্গিপাড়া থানার উপপরিদর্শক এসআই (নিরস্ত্র) রাব্বি মোরসালিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নাম্বার ৩৩০(৩)/১ তারিখ ৩/২/২০২৫। মামলায় ১০৫ জন জনের নাম উল্লেখ ও ৪৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে। এ ঘটনায় সাফায়েত গাজী নামের এক ব্যক্তিকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোরশেদ আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায় গতকাল রবিবার টুঙ্গিপাড়া উপজেলার খান সাহেব শেখ মোশাররফ হোসেন স্কুল এ্যন্ড কলেজের সামনের আওয়ামী লীগের ডাকা কর্মসূচির লিফলেট বিতরণ করছিলেন স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লিফলেট বিতরণ করা বন্ধ করতে গেলে বাকবিতন্ডা বাঁধে। তখন আওয়ামী লীগ কর্মী সন্দেহে একজনকে আটক করলে স্থানীয়রা পুলিশের উপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর করে। এঘটনায় পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হন।
ওসি খোরশেদ আলম জানান, এ ঘটনায় সোমবার দুপুরে ১০৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৪৫০ জনকে আসামি করে টুঙ্গিপাড়া থানা একটি মামলা দায়ের করেন এসআই রাব্বি মোরসালিন।জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেফতার আতঙ্কে টুঙ্গিপাড়া এলাকা এখন পুরুষ শূন্য অবস্থায় আছে।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাদের লিফলেট বিতরণ বন্ধ করতে গেলে স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়ে পুলিশ। এসময় পুলিশের কাজে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগে স্থানীয় সাফায়েত গাজীকে নামের এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। এঘটনায় আটক ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের উপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর করে এক পুলিশ সদস্যকে অবরুদ্ধ করে রাখেন স্থানীয়রা। পরে ঘটনাস্থলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পৌঁছে অবরুদ্ধ পুলিশ সদস্যকে ছাড়িয়ে নেন। তারপর থেকে ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ঘটনার পর থেকেই নিরাপত্তা দিতে রবিবার রাত সাড়ে ৯ টা থেকে সোমবার সকাল সাড়ে ৮ টা পর্যন্ত থানার সাঁজোয়া যান নিয়ে টুঙ্গিপাড়া থানার সামনে অবস্থান করেছিলো সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ মঈনুল হক জানান, পুলিশের গাড়ি ভাংচুর ও একজন পুলিশ সদস্যকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে এমন সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। পরে উত্তেজিত জনতাকে বুঝিয়ে সেই পুলিশ সদস্যকে ছাড়িয়ে ওসির কাছে পৌঁছে দিই। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।