রাজধানী উন্নয়ন কতৃপক্ষের জোনাল অফিসের অথারাইজ অফিসার ও কতিপয় চিহ্নিত সন্ত্রাসী কর্তৃক সাংবাদিক লাঞ্চিতের ঘটনায় মানববন্ধন 

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী

নিজস্ব প্রতিবেদক  :  মহাখালীতে রাজধানী উন্নয়ন কতৃপক্ষের জোনাল অফিসে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে লাঞ্ছনার স্বীকার হয়েছেন সাপ্তাহিক রিপোর্টিং পত্রিকার ক্রাইম রিপোর্টার মাহতাবুর রহমান সহ তার নিউজ টিম। গত ৩০ জানুয়ারি রাজউক জোন ৩ কার্যালয়ে ইমারত পরিদর্শক সোলাইমান হোসাইন ও তার সহকর্মী আবুল কালাম আজাদের হাতে লাঞ্চিত হন ওই সাংবাদিকগন। এই ঘটনায় হেনস্থার স্বীকার সাংবাদিকদের পক্ষে বনানী থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন সাংবাদিক মাহতাবুর রহমান।


বিজ্ঞাপন

বনানী থানায় সাপ্তাহিক রিপোর্টিং এর ক্রাইম রিপোর্টার মাহতাবুর রহমান এর দায়ের করা অভিযোগ সূত্রে পাওয়া যায়, গত বৃহস্পতিবার আনুমানিক বেলা সারে বারোটার দিকে তিনি তার অনুসন্ধানি টিম সহ, রাজউক কর্মকর্তাদের ঘুষ বাণিজ্য, দুর্নীতি আর অনিয়ম সম্পর্কে বক্তব্য নিতে রাজউকের মহাখালী জোনাল অফিসের জোন-৩ এর পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট জোন-৩/২ এর অথোরাইজ অফিসারের কাছে যায় কিন্তু মহাখালীর কার্যালয়ে তাদেরকে না পেয়ে ইমারত পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ এর কাছে পরিচালক ও অথোরাইজ অফিসার কোথায় আছেন তা জানতে চাইলে তিনি কোনো জবাব না দিয়ে উল্টো চিৎকার চেঁচামিচি করে সোলাইমান সহ অন্যান্যদেরকে জড়ো করে সাংবাদিকদেরকে সোলাইমানের অফিস কক্ষে নিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখেন। হেনস্থার স্বীকার সাংবাদিকরা হলেন সাপ্তাহিক রিপোর্টিং এর ক্রাইম রিপোর্টার মাহতাবুর রহমান, দৈনিক আমার সময় পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার শাহ আলম, দৈনিক নতুন দিন পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হান্নান ও সাপ্তাহিক রিপোর্টিং পত্রিকার রিপোর্টার মোঃ মহিব্বুল্লাহ ।

সাংবাদিকদের এ ভাবে কেনো হেনস্তা করা হচ্ছে তা জানতে চাইলে সোলাইমান গংরা বিশ্রী ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন এবং সোলাইমান এর সব অপকর্মের বিরুদ্ধে কেনো সংবাদ প্রচার হয়েছে তার জবাব চান এবং সম্পূর্ণ তথ্যপ্রমাণাদী ফেরত দিতে বলেন নচেৎ চাঁদাবাজ ও ভূয়া সাংবাদিক তকমা দিয়ে পুলিশে হস্তান্তর করার হুমকি দেয়। সাপ্তাহিক রিপোর্টিং এর সাংবাদিক মাহতাবুর রহমানের সঙ্গে থাকা অন্যান্য সাংবাদিকরা সোলাইমান গংদের এমন আচরনের কারন জানতে চাইলে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে সোলাইমান এর টেবিলের ড্রয়ারে থাকা হাতুড়ী বের করে সাংবাদিকদের মারার জন্য আক্রমন করে। তখন উভয় পক্ষের হট্টচিৎকারে অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তারাও সোলাইমান এর কক্ষে জড়ো হয়। উভয় পক্ষের বিবাদ নিয়ন্ত্রন করতে অত্র দপ্তরের রহিম নামের একজন কর্মকর্তা এগিয়ে আসেন এবং তার মধ্যস্থতায় সাংবাদিকরা কোনোরকমে নিস্তার পায়।


বিজ্ঞাপন

সাংবাদিক মাহতাবুর রহমান বলেন, সোলাইমান হোসাইনের দুর্নীতি ও অপকর্ম নিয়ে একাধিক তথ্যমূলক ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় ক্ষেপে ছিলেন সোলাইমান । তাই তিনি রিপোর্টিং টিমকে হেনস্থা করার জন্য নিজ কক্ষে আমাদের অবরুদ্ধ করে হুমকি-ধমকি ও গালাগালি করতে থাকেন। গালাগালির এক পর্যায়ে সোলাইমান হোসাইন আমাদের সকল ডিভাইস বন্ধ করতে কড়া নির্দেশ দেন। তিনি যখন নিশ্চিত হন তার কোন অপকর্ম প্রকাশ হওয়ার সুযোগ নেই তখন তার ড্রয়ারে থাকা হাতুড়ি বের করে আমাদের দিকে তেড়ে আসেন।


বিজ্ঞাপন

দৈনিক আমার সময় পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার শাহ আলম বলেন, ৩০ জানুয়ারি রাজউক মহাখালী জোনাল অফিসের জোন ৩/২ এর ইমারত পরিদর্শক সোলাইমান গং রা, কর্মরত সাংবাদিকদেরকে তাদের অফিস রুমে ডেকে নিয়ে যে ভাবে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও হাতুড়ী উচিঁয়ে মারার হুমকি দিয়ে সাংবাদিকদের হেনস্তা করেছে তা শুধু মাত্র বিগত ফ্যাসিবাদী আওয়ামীলীগ এর সহযোগী সংগঠন, হেলমেট লীগ ও হাতুড়ী লিগেরই নিদর্শন বহন করে।

ঘটনার সময় রাজউকের ইমারত পরিদর্শক সোলায়মান ও আবুল কালাম আজাদ গংরা যে ভাবে সাংবাদিকদেরকে অপমান অপদস্থ করেছে, এবং হাতুড়ী দ্বারা মারমুখী আচরন করেছে এর বিচার যদি রাজউক কর্তৃপক্ষ না করে তবে আমরা সাংবাদিকরা দেশের সর্বোচ্চ আদালতমুখী হতে বাধ্য হবো।

দৈনিক নতুন দিন পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হান্নান বলেন, সোলাইমান হোসাইন যেভাবে আমাদের উপরে হাতুড়ি দিয়ে আক্রমন করেছিল তাতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা ছিল কিন্তু অন্যান্য ইমরত পরিদর্শকগণ উপস্থিত হয়ে আমাদেরকে উদ্ধার করেন তাই বেঁচে গেছি নয়তো আমাদের সাথে খারাপ কিছু হতে পারতো। আমরা এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং যথাযথ বিচার দাবি করছি।

রিপোর্টার মোঃ মহিব্বুল্লাহ বলেন, আমরা রিপোর্টিং টিম অফিস অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে মহাখালী জোনাল অফিস এর পরিচালকের সাথে সাক্ষাৎ করতে গেলে তাকে না পেয়ে ফিরে আসার সময় ইমারত পরিদর্শক সোলাইমান ও আবুল কালাম আজাদ আমাদের কে সোলাইমানের কক্ষে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর সোলাইমান ও আবুল কালাম আজাদ হাতুড়ি দিয়ে আমাদের উপর হামলা করেন। আমরা এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই সেই সাথে দৃষ্টান্তমূলক কঠোর বিচার ও শাস্তি দাবি করছি।

উল্লেখ্য ইমারত পরিদর্শক সোলাইমান হোসাইনের বিরুদ্ধে নোটিশ বাণিজ্য, ভবন মালিকদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করা, দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ উপার্জন, ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। এ সব বিষয়ে সাপ্তাহিক রিপোর্টিং পত্রিকায় একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হয়। সাপ্তাহিক রিপোর্টিং পত্রিকা ছাড়াও একাধিক পত্রিকায় সোলাইমানের দুর্নীতি নিয়ে তথ্যবহুল সংবাদ প্রকাশ করা হলেও এই বিষয়ে রাজউকের চেয়ারম্যান সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয়নি তাই হয়তো সোলাইমান আজ সাংবাদিক হেনস্থা করতে দ্বিধাবোধ করছে না।

👁️ 7 News Views

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *