প্রাণিসম্পদ অফিসার প্রভাস চন্দ্র সেন।

মোঃ সাইফুর রশিদ চৌধুরী : গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার প্রভাস চন্দ্র সেনের বিরুদ্ধে সরকারের রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায় সদর উপজেলার প্রাণিসম্পদ অফিসার তার এবং তার স্ত্রী পিংকি দাসের নামে সম্প্রতি ৭০ লক্ষ টাকা দিয়ে গোপালগঞ্জ পাচুড়িয়া এলাকার তেঘরিয়া মৌজায় চার শতাংশ জমি ক্রয় করেছেন।
জমির তফসিল বিআরএস খতিয়ান ৭৮৭, বিআরএস দাগ নং ৩৭, এসএ খতিয়ান ৮২২, আরএস খতিয়ান ৬৬৫। যার দলিল নম্বর- ৮৪৩১/২৪ তারিখ ২.১২.২০২৪ খ্রিঃ। দাতা যথাক্রমে রশিদা খানম, আজিজুর রহমান ও আরিফুর রহমান। গ্রহীতা প্রভাস চন্দ্র সেন তার স্ত্রী পিংকি দাস অসৎ উদ্দেশ্যে দলিলে ৪০ লক্ষ টাকা লিখেছেন। এখানে ৩০ লাখ টাকা কম লিখায় সরকার বড় অংকের টাকার (ত্রিশ লাখ টাকার ১২% হারে ৩,৬০,০০০/=) রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। জানা যায় তার স্ত্রী একজন গৃহিণী। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায় ৭০ লক্ষ টাকা তার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত। তার আয়কর নথিতে এ টাকার কোন তথ্য দেয়া হয়নি।
এ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অফিসার প্রভাস চন্দ্র সেন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি এ টাকার উৎস সম্পর্কে কোন সঠিক জবাব দিতে পারেননি। তিনি সুকৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে যান। অনুসন্ধানে জানা যায় ৭০ লক্ষ টাকার জমি ৩০ লক্ষ টাকা তিনি লিখেছেন। এ বিষয়ে বিক্রেতাদের সাথে আলাপ করলে জানা যায় তারা ক্রেতার কাছ থেকে ৭০ লক্ষ টাকা পেয়েছেন।
দলিলে ৪০ লক্ষ টাকার বিষয়ে তারা বলেন প্রভাস চন্দ্র সেন তাদের বলেছেন ত্রিশ লক্ষ টাকা লিখলে তার সুবিধা হয় কারণ তিনি সরকারি চাকরি করেন ৭০ লক্ষ টাকা লিখলে তার অফিসে অসুবিধা হতে পারে। তাই তারা সরল বিশ্বাসে বিষয়টি মেনে নিয়েছে।
৭০ লক্ষ টাকার বিষয়ে প্রভাস চন্দ্র সেন বলেন আমি ৪০ লক্ষ টাকা দিয়ে জায়গা কিনেছি এটাই সঠিক। কিন্তু তিনি ৪০ লক্ষ টাকারও উৎস সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিতে পারেননি।
এ টাকা গুলি তার আয়কর নথিতে দেখানো আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি আমার এবং আমার স্ত্রী ডিপিএস ভেঙ্গে এবং ধার দেনা করে এ টাকা সংগ্রহ করেছি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তার অফিসের একাধিক কর্মচারী কর্মকর্তা জানান, তিনি অফিস সময় ব্যক্তিগতভাবে টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন এলাকায় গরু ছাগল হাঁস মুরগির চিকিৎসা দিয়ে থাকেন।
এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন। সংশ্লিষ্ট সকলে তার এ অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানান। একটি সূত্রে জানা যায় দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত টাকা দিয়ে তিনি তার নিজ এলাকা ও শশুর বাড়িতে নামে বেনামে আরো সম্পদ ক্রয় করেছেন। সঠিক তদন্ত করলেই এর সত্যতা পাওয়া যাবে।