রাজধানীর মুগদায় চুরির মিথ্যা অপবাদে নির্যাতনের শিকার নারীর মৃত্যু : থানায়  হত্যা মামলা দায়ের 

Uncategorized অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী

বিশেষ প্রতিবেদক  :  রাজধানীর মানিকনগর ওয়াসা রোড এলাকার সবজি বিক্রেতা আয়শা বেগম (৫৫) কে চুরির সন্দেহে বেধরক মারপিট করায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। ওই চুরির ঘটনায় মৃত আয়শা বেগমের দুই মেয়ে রুবিনা ও রুমি কে সন্দেহ করছিলেন ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন। এ সূত্র ধরে লাকি আক্তারের বাসায় ডেকে নিয়ে পরিবারের সবাই মিলে শারীরিক নির্যাতন সহ বেধরক মারপিট করে আয়েশাকে।মারপিটের ঘটনায় গুরুতর অসুস্থ হলে মুগদা মেডিক্যাল ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।


বিজ্ঞাপন

পরে নিহতের মেয়ে রুমি বাদী হয়ে আক্তার বানু (৬০) সাথী আক্তার (৩২) লাকী আক্তার (৩৬) এর বিরুদ্ধে মুগদা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মুগদা থানার মামলা নম্বর ১৫ তারিখ ১২-২-২০২৫ ধারা ৩০২/৩৪ দ: বি:। আয়শা বেগম মানিকনগর ঋষিপাড়া গলির মুখে নিয়মিত সবজি বিক্রি করতেন এবং বিকেলে মিয়াজান গলির মুখে মেয়েদের তৈরি পোশাক বিক্রি করতেন। তিনি ৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের নেতা নিজামুদ্দিনের শাশুড়ি ছিলেন।


বিজ্ঞাপন

জানা গেছে গত ৮ ফেব্রুয়ারি মানিকনগর ৫৫/ডি সরদার বাড়ি মসজিদ গলির বাসিন্দা লাকি (৩৬)-এর বাসা থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণ ও রুপার গহনা চুরি হয়। চুরির অভিযোগে লাকি থানায় কোনো অভিযোগ না করে আয়শা বেগম ও তার দুই মেয়ে রুমি আক্তার (৩০) এবং রোজিনা (২৫)-কে সন্দেহ করেন।


বিজ্ঞাপন

তারা চুরির অভিযোগ অস্বীকার করলে লাকি ও তার সহযোগীরা তাদের চাপ দিতে থাকেন। ১০ ফেব্রুয়ারি দুপুর অনুমান দুপুর ১২ টার দিকে আয়শা বেগম যখন সবজি বিক্রি করছিলেন, তখন আক্তার বানু নামের এক নারী তাকে ডেকে তার নিজ বাসায় নিয়ে যান। সেখানে লাকি, সাথীসহ আরও ৭-৮ জন নারী উপস্থিত ছিলেন। তারা আয়শা বেগমকে চুরির দায় চাপিয়ে দিতে থাকেন।

একপর্যায়ে চুরির ঘটনা স্বীকার করতে বাধ্য করার জন্য মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করতে থাকেন। তবে আয়শা বেগম চুরির অভিযোগ অস্বীকার করলে, লাকি, সাথী, আক্তার বানু এবং আরও কয়েকজন তাকে মারধর করতে থাকেন। কিল, ঘুষি ও লাথির আঘাতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং বমি করেন। এ সময় তিনি তার ছোট মেয়ে রোজিনাকে ফোন করে দ্রুত নিয়ে যেতে বলেন।

রুমি ও রোজিনা মায়ের অবস্থা দেখে দ্রুত রিকশায় করে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১১ ফেব্রুয়ারি রাত ৯ টার দিকে আয়শা বেগম মারা যান। মৃতের ময়না তদন্তের জন্য মুগদা থানা পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
১২ফেব্রুয়ারি নিহত আয়শা বেগমের মেয়ে রুমি আক্তার বাদী হয়ে মুগদা থানায় মামলা দায়ের করেন।

এ ঘটনার বিষয়টি মুগদা অফিসার ইনচার্জ গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে বলেন, অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে। আশাকরি অচিরেই অপরাধীদের গ্রেফতার করে আসল রহস্য উদঘাটন করতে পারব।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *