মোঃ সাইফুর রশিদ চৌধুরী : দুর্নীতি ক্ষমতার অপব্যবহার ও অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনসহ দুই অধ্যাপক ও এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গোপালগঞ্জ দুর্নীতি দমন কমিশন একটি মামলা দায়ের করেছেন।

গোপালগঞ্জ দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারি পরিচালক বিজন কুমার রায় বাদী হয়ে রবিবার ২ মার্চ এ মামলা দায়ের করছেন। মামলা নম্বর ০৮, তারিখ ০২/০৩/২০২৫ খ্রিঃ ধারা দন্ডবিধি ৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/ ১০৯, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ।

উক্ত মামলার আসামিরা হলেন প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন (৬২) সভাপতি, সেকশন অফিসার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিয়োগ কমিটি, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ ও সাবেক ভিসি, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ।
প্রফেসর ড. মোশার্রফ আলী সদস্য, সেকশন অফিসার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিয়োগ কমিটি, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ ও সাবেক অধ্যক্ষ, রাজেন্দ্র কলেজ, প্রফেসর ড. মো: আব্দুল মান্নান সদস্য, সেকশন অফিসার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিয়োগ কমিটি, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও সাবেক অধ্যাপক এগ্রো টেকনোলজি ডিসিপ্লিন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।
শারমিন চৌধুরী সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা, বর্তমানে সেকশন অফিসার, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ। গোপালগঞ্জ দুর্নীতি দমন কমিশন সূত্রে জানা যায়,
দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রধান কার্যালয়, ঢাকার নথি নং ০০.০১.০০০০.১০৯.২৮.০০১.২৩ (ই.এন.নম্বর: গোপালগঞ্জ/৩৩, তারিখ:০৯-০১-২০২৫ খ্রি.) এর অভিযোগের বিষয়ে সরেজমিনে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করে প্রাপ্ত তথ্য, সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তথ্যানুসন্ধানকালে সংগৃহীত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জের স্মারক নং ৭৬৩, তারিখ: ২০-০৯-২০১৮ খ্রি. মূলে প্রশাসনিক কর্মকর্তা/ সেকশন অফিসারের ১৬টি পদসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত ১৬টি শূন্য পদের স্থলে আসামী শারমিন চৌধুরীসহ ২০ জনকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা/ সেকশন অফিসার পদে নিয়োগ দেয়া হয়।
উক্ত পদে ৮৭০ জন আবেদকারীর ডাটা শীট যাতে তৎকালীন ভিসি ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিনের স্বাক্ষর রয়েছে জব্দপূর্বক পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, উক্ত তালিকায় আসামী শারমিন চৌধুরী’র নাম নাই। তাছাড়া নিয়োগ কমিটির সুপারিশে তালিকার ৮৭৩ নম্বর ক্রমিকের শারমিন চৌধুরী-কে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হলেও বাস্তবে ৮৭৩ নম্বর ক্রমিক ডাটা শীটে নাই। অর্থাৎ আবেদন তথা তালিকায় না থাকার পরও জাল-জালিয়াতিপূর্ণভাবে তাকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে।
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত ছিল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখে প্রার্থীর বয়স ৩২ বছর হওয়ার কথা থাকলেও প্রকৃতপক্ষে আসামী শারমিন চৌধুরী বয়স ৩২ বছরের বেশি ছিল। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয় ২০-০৯-২০১৮ খ্রি. তারিখে, শারমিন চৌধুরীর জন্ম তারিখ: ২০-০৬-১৯৮৫ খ্রি.। অর্থাৎ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখে তার বয়স ৩৩ বছর ৩ মাস ছিল। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আসামী শারমিন চৌধুরীর বয়স ৩২ বছরের স্থলে ৩৩ বছর ৩ মাস থাকার পরও বে-আইনিভাবে নিয়োগ, বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত ১৬টি শূন্য পদের স্থলে ২০ জনকে নিয়োগ ও ডাটা শীটে নাম না থাকার পরও নিয়োগ দিয়ে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করা হয়েছে।