মোঃ সাইফুর রশিদ চৌধুরী : দরপত্রে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন, গোপালগঞ্জ টিম গোপালগঞ্জ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করেন। আজ সোমবার ৩ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১১ টায় এ অভিযান পরিচালিত হয়।

গোপালগঞ্জ দুদক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গোপালগঞ্জ জেলাধীন টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় অবস্থিত টুঙ্গিপাড়া এলএসডি-তে অব্যবহৃত, জরাজির্ণ ও পরিত্যক্ত ০১টি খাদ্যগুদাম বিক্রয়ের নিমিত্ত জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়, গোপালগঞ্জ হতে স্মারক নং ১৬৬, তারিখ: ২৭-০১-২০২৫ খ্রি. মূলে দরপত্র আহবান করা হয়। গোপালগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগ কর্তৃক ভাঙ্গা খরচ বাদে উক্ত পরিত্যক্ত খাদ্যগুদামের প্রাক্কলন করা হয়েছে ১,৫৬,৮৬৬.৯৯ টাকা।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়, গোপালগঞ্জ হতে ৪৬ জন টেন্ডার ডকুমেন্ট ক্রয় করে ১৩ জন দরপ্রস্তাব দাখিল করেন। উক্ত বিষয়ে দরপ্রস্তাব দাখিলকারী ঠিকাদার আমিনুর শেখ অভিযোগ করেন যে, তিনি বিগত ১০-০২-২০২৫ তারিখে দরপত্র দাখিল করতে গেলে বাধাপ্রাপ্ত হোন। তথাপী পুলিশ বিভাগের সহায়তা নিয়ে দরপত্র দাখিল করেন।
দরপত্র উন্মোক্তকরণের সময় স্থানীয় ঠিকাদার লেবু ও তার দলবল তার প্রতিনিধি হিরণ্ময়কে মারধর করেন। অত:পর টেন্ডার প্রত্যাহারের আবেদনে জোর করে তার নামীয় স্বাক্ষর নেন হিরণ্ময়- কে দিয়ে। টেন্ডারের স্বাক্ষরের সাথে প্রত্যাহার পত্রের স্বাক্ষরের কোন মিল নাই। এমনকি তিনি দরপত্র প্রত্যাহারের পাওয়ারও প্রদান করেননি। তিনিসহ আরও ৪ জন দরপত্র প্রত্যাহার করা হয়েছে মর্মে তাকে জানানো হয়।
আমিনুর শেখ দরপত্র প্রত্যাহার না করলেও জোর করে প্রত্যাহার দেখানোর চেষ্টা করা হয়। অভিযান পরিচালনাকালে দরপত্র প্রত্যাহারের আবেদনটি সংগ্রহ করে দেখা যায় আবেদনের স্বাক্ষরটি তার নয়। এ বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, গোপালগঞ্জে কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি জানান যে, হিরণ্ময় নামীয় এক ব্যক্তি জনাব আমিনুলের পক্ষে টেন্ডার দাখিল করেন। কিন্তু হিরণ্ময় নামীয় ব্যক্তি যে জনাব আমিনুর এর প্রতিনিধি এর স্বপক্ষে খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে কোন রেকর্ডপত্র উপস্থাপন করতে পারেন নাই।
এই বিষয়ে টেন্ডার ওপেনিং কমিটির রেজুলেশন ও অন্যান্য রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে দেখা যায় যে, আমিনুল ইসলাম তার দাখিলকৃত দরপত্রে ৬,১৯,০০০ টাকা দর দিয়েছেন কিন্তু, তাকে বাদ দিয়ে ১,৬৫,০০০ টাকায় কার্যাদেশ দেয়ার একটি পক্রিয়া চলমান ছিলো। এতে দেখা যায় যে, সরকারের (৬,১৯,০০০ – ১,৬৫,০০০) = ৪,৫৪,০০০ টাকা রাজস্ব ক্ষতির সম্ভাবনা তৈরী হয়েছে।
দুদক সূত্র আরও জানায়, এবিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা প্রাপ্ত হয়ে পরবর্র্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।