কুমিল্লা প্রতিনিধি : কুমিল্লার দেবিদ্বারে ইটভাটায় মোবাইল কোর্ট, জরিমানা ও ভাংচুর বন্ধের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও প্রধান উপদেষ্ঠা, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্ঠা বরাবর স্বারক লিপি প্রদান করেছে উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতি।

মঙ্গলবার (৪-৩-২৫) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট স্বারক লিপি প্রদান করেন,পরে নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে৷ এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ইটভাটা মালিক সমিতির সদস্য মোহাম্মদ নুরুজ্জামান, মফিজুল ইসলাম চৌধূরী,মোহাম্মদ সুমন সহ অনন্যরা৷ বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ইটভাটা শুরু করার সময় সব নিয়ম মেনে প্রশাসন আমাদের লাইসেন্স দিয়েছে,এখন যখন আমরা ব্যবসা শুরু করছি তখন মোবাইল কোর্ট, জরিমানা ও ভাংচুর করে৷

স্বারক লিপিতে বলা হয়, আমরা বাংলাদেশের ইটভাটা মালিকগন বিগত ৩৫/৪০ বৎসর যাবৎ অনেক প্রতিকুলতার মধ্যে দিয়ে ইটভাটার ব্যবসা পরিচালনা করিয়া আসিতেছি। দেশের রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ী সহ সকল অবকাঠামো নির্মানে ব্যবহৃত ইট সরবরাহ করে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছি।
দেশের উন্নয়নের সঙ্গে সমতা রেখে আমরা ইটভাটার মালিকগন বায়ুদূষণ রোধে সরকার নির্দেশিত আধুনিক প্রযুক্তির জিগজাগ ভাটা স্থাপন করি যাহা জ্বালানী সাশ্রয়ী, পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি, ও উপমহাদেশে টেকসই এবং সহজ প্রযুক্তি হিসাবে পরিচিত। বর্তমানে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে এখন দেশের ইটভাটা সমূহ মাত্র ৫-১০% বায়ু দূষন করছে, জৈব বয় পোড়ানোতে ৪০% এবং যানবাহনের কালো খোয়া ৫০% (দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকা ০৬-০৩-২০২১ ইং তারিখে প্রকাশিত রিপোর্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের রসায়ন বিভাগের জরিপ)। পূর্বে ইটভাটার দূষনমাত্রা ছিল ৫৮%।
বিদ্যমান জিগজাগ অটায় আরও অধিকতর উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিবেশ দূষণ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। এই শিল্পে প্রায় ৫০ লক্ষ প্রমিক কর্মরত আছে এবং ৫০ লক্ষ পরিবার তথা ২ কোটি মানুষের রুটি রোজীর ব্যবস্থা আমরায় করেছি, ইটভাটা বন্ধ হয়ে গেলে এই লোকগুলো বেকার হয়ে পড়বে।
এছাড়াও প্রায় প্রতিটি ইত্যাটার বিপরীতে ১ কোটি টাকার উপরে ব্যাংক লোন যা প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা এই ভাটা সমূহ বন্ধ হয়ে গেলে সমুদয় ব্যাংক লোন অনাদায়ী থেকে যাবে। ইটভাটার মালিকগণ বছরে হাজার হাজার কোটি টাকার অধিক রাজস্ব দিয়ে থাকেন।
উপদেষ্টা সৈয়দা রেজিওয়ানা হাসান অত্যান্ত আন্তরিক হলেও বর্তমান আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারনে জিগজাগ ইটভাটার সমস্যা সমাধান হচ্ছে না।
আমরা আশা করছি প্রধান উপদেষ্টা এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার মাধ্যমেই ইটভাটা পরিচালনার একটি যুক্তিক সমাধান হবে।
সবার আগে ড্রাম চিমনী, ফিক্সড চিমনী ও লাকড়ী নিয়ে পোড়ানো ইটভাটা সম্পূর্ণ বন্ধ করা সিদ্ধান্তে মাননীয় উপদেষ্টার সাথে আমরা একমত পোষন করেছি কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাহা না করে তার বিপরীতমুখী অবস্থান নিয়ে বৈধ পদ্ধতির জিগজাগ ইটভাটায় জরিমানা ও ভাংচুর করছেন।
আমরা কোন অবস্থাতেই এই সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ঠেলে দিতে চাই না। বিগত ফ্যাসিষ্ট সরকারের মদদপুষ্ট বসুন্ধরা, কনকর্ড সহ আধিপত্যবাদী প্রতিষ্ঠান সমূহ ইট শিল্পকে ধংশের দিকে ঠেলে দিচ্ছে এবং বর্তমান সরকারের মখোমুখি আমাদেরকে দাড় করানোর চেষ্টা করছে।