জালিয়াতি আর কাকে বলে : মাতারবাড়ী আমদানি করা কয়লায় মাটি

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত চট্টগ্রাম জাতীয় বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক  : একটা কিছু সরকারি শুনলেই ভাবনায় আসে যে এর হয়তো কোনো মালিক নেই, জবাবদিহি নেই! এ কারণেই হয়তো ‘সরকার কা মাল, দরিয়া মে ঢাল’—এই রকম একটি কথা প্রচলিত রয়েছে। সরকারি কাজে অনিয়ম, দুর্নীতি, লুটপাট, অপচয় নতুন কিছু নয়। সরকারি কাজ বা কেনাকাটার সব স্তরে এ রকম অনিয়মের উদাহরণ ভূরি ভূরি। কিন্তু বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাঁচামাল হিসেবে আসা কয়লার স্থলে মাটি! এটি কেমন জালিয়াতি? এর আগে আমরা বিদেশ থেকে মিথ্যা ঘোষণায় একটির পরিবর্তে অন্য পণ্য আমদানির কথা জানি।


বিজ্ঞাপন

শুল্ক-কর ফাঁকি দিতে ও টাকা পাচার করতে এ রকম ঘটনা হরহামেশাই ধরা পড়ে। তবে এবার খোদ সরকারি প্রকল্প কক্সবাজারের মাতারবাড়ী এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য আনা কয়লায় পাওয়া গেছে মাটি—এটি মানা যাচ্ছে না।


বিজ্ঞাপন

এ রকম একটি খবর দেশের শীর্ষ জাতীয় দৈনিকে প্রকাশ পেয়েছে। এতে বলা হয়েছে, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য আমদানি করা কয়লার একটি চালান এসেছে ইন্দোনেশিয়া থেকে।


বিজ্ঞাপন

কাজটি পেয়েছিল এক ভারতীয় কম্পানি। প্রায় ৬৩ হাজার টন কয়লার এই চালানটি খালাসের সময় এতে বিপুল পরিমাণে মাটির উপস্থিতি পাওয়ায় খালাস বন্ধ করে জাহাজটিকে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পাঠিয়ে দিয়েছে কোল পাওয়ার জেনারেশন কম্পানি লিমিটেড (সিপিজিসিএল)।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, গত ১৭ মার্চ ‘এমভি ওরিয়েন্ট অর্কিড’ নামের সিঙ্গাপুরের পতাকাবাহী একটি জাহাজ মাতারবাড়ী বন্দরের চ্যানেলে প্রবেশ করে। কম্পানিটি যে কয়লা পাঠিয়েছে, তাতে বিপুল পরিমাণে মাটি রয়েছে, যা বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ব্যবহারোপযোগী নয়।

এটি একই সাথে ভয়ংকর ও দুৰ্ভাগ্যজনক ঘটনা! মাটি মিশ্রিত কয়লা দিয়ে কি আর বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়? সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখন পণ্য খালাস বন্ধ রেখে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণের অপেক্ষা করছে।

আমাদের বক্তব্য হলো, সরকারি একটি বিদ্যুৎ প্রকল্পে এত বড় জালিয়াতি কিভাবে ঘটল, এর সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্বাচনের আগে তাদের ইমেজ ও কাজের পূর্বাভিজ্ঞতা ছিল কি না, এর পেছনে অন্য কোনো মুনাফালোভী চক্র জড়িত কি না—বিষয়টির শক্ত অনসুন্ধান হওয়া দরকার। মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্প কর্তৃপক্ষ, কাস্টমস ও বন্দর কর্তৃপক্ষের সমন্বিতভাবে বিষয়টির নেপথ্যে কারা জড়িত, তাদের খুঁজে বের করা উচিত। জনগণের টাকায় চালু হওয়া এই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের কয়লায় এমন জালিয়াতি ও অপচয় হলে এর ভুক্তভোগীও সাধারণ জনগণই হবে।

এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ ব্যাপারে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। আর এর নেপথ্যে যারা জড়িত, তাদেরও শাস্তির আওতায় আনতে হবে এবং তাদের কাছ থেকে এর ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *