পাবনা প্রতিনিধি : “পুষ্পপাড়া মাদ্রাসার পুষ্প কাননে এসো সবাই মিলি আজ প্রাণে প্রাণে” এই স্লোগানকে সামনে রেখে মাদ্রাসাটির প্রায় পাঁচ শত সাবেক শিক্ষার্থীরা মিলিত হয়েছিল মাদ্রাসা চত্বরে। মাদ্রাসাটির ইতিহাসের এটি দ্বিতীয় পুনর্মিলনী।

অনেকের সাথে দেখা হলো প্রায় এক যুগ, এমনকি তারও বেশি সময় পরে। যাদের সাথে কাটিয়েছে জীবনের শৈশব কৈশোর ও যৌবনের দুরন্ত বেলার গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো। তাদের অনেককে দেখে অনেকেই আবেগে আপ্লুত হয়েছন। জড়িয়ে ধরেছেন বুকের সাথে। স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে অনেকেই অশ্রু সিক্ত হয়েছেন।

ড. মুস্তাফিজুর রহমান খানের সঞ্চালনায় মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান এর স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠানটি।

বক্তব্য পেশ করেন মাদ্রাসার সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও বর্তমান উল্লাপাড়া কামিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, পাবনা আলিয়া মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল সামাদ, সাবেক অধ্যক্ষ হযরত মাওলানা আব্দুল হাই, সাবেক অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক সাহেবের বড় সন্তান আবু সাঈদ মোঃ এনামুল হক, মাদ্রাসার সাবেক ছাত্র ও পাবনা জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর মাওলানা আব্দুর রহিম।
সাবেক ছাত্রদের মধ্য থেকে স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য পেশ করেন পাবনা আলিয়া মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল মোঃ আশরাফুল ইসলাম , পাবনা ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুল লতিফ ধুলাউড়ি কামিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আনোয়ার হোসেন এবং জামায়াতে ইসলামী পাবনা জেলা শাখার সেক্রেটারি মাওলানা অধ্যাপক আব্দুল গাফফার খান ।
মাওলানা আব্দুল গাফফার খানের স্মৃতিচারণমূলক সহজ সরল ভাষার বক্তব্য সবাইকে নস্টালজিক করে তোলে। অনুষ্ঠানটিতে আরও বক্তব্য রেখেছিলেন মাদ্রাসাটির সাবেক শিক্ষার্থী বর্তমানে সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল আউয়াল এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানটিতে সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে সবার মাঝে আনন্দের জোয়ার বইয়ে দেন বিশিষ্ট কণ্ঠশিল্পী অত্র মাদ্রাসার সাবেক শিক্ষার্থী শিল্পী ওবায়দুল্লাহ তারেক ।
পুনর্মিলনের এ ধারা অব্যাহত রাখতে বারবার জোর দাবি আসতে থাকে উপস্থিত সাবেক শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে। দায়িত্বশীলদের সাথে পরামর্শ করে মঞ্চে আসেন মাদ্রাসার সাবেক শিক্ষার্থী মাওলানা ফরিদ আহমেদ।
তিনি মাইক হাতে নিয়ে উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে শত বর্ষ পূর্তি উপলক্ষে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিলে সবাই সমস্বরে প্রস্তাবের পক্ষে সাড়া দেন। অতঃপর তিনি আহবায়ক হিসেবে মাওলানা আব্দুল গাফফার খান এবং সদস্য সচিব হিসেবে ড. মুস্তাফিজুর রহমান খান এর নাম ঘোষণা করলে সবাই তাতেও সর্ব সম্মতি প্রদান করেন।
এরপরে সকল ব্যাচের শিক্ষার্থীদেরকে ব্যাচভিত্তিক মঞ্চে এনে উপস্থিত সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেন অনুষ্ঠানটির সঞ্চালক ড. মুস্তাফিজুর রহমান খান।
অনুষ্ঠানে বর্তমান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পিএস মহিউদ্দিন, বিসিএস সমবায় ক্যাডারের কর্মকর্তা ও রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান মোখলেসুর রহমান, পল্লি উন্নয়ন একাডেমির বগুড়ার সহকারী পরিচালক ডা. রিয়াজুল ইসলাম, ডঃ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ইউসুফ সহ মাদ্রাসার ৫ শতাধিক সাবেক ছাত্র-ছাত্রী অংশগ্রহণ করেন।
সাবেক ছাত্রদের পাশাপাশি মাদ্রাসার সাবেক শিক্ষকরাও এই মিলনমেলায় শরীক হন। সবশেষ র্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হয় এবং ২০ জনকে লটারির মাধ্যমে পুরস্কৃত করা হয়।
সবাই আজ স্ব স্ব স্থানে প্রতিষ্ঠিত। কোনও সমস্যা কিংবা সহায়তায় আমরা একত্রিত হয়ে যেন কাজ করতে পারি সেটার চমৎকার একটি প্ল্যাটফর্ম হবে এই এলামনাই এসোসিয়েশন। সেই প্রত্যাশা করে সাবেক এই শিক্ষার্থীরা।