চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা ও গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার, দুই গ্রামবাসীর মধ্যে মাইকিং করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ঈদে চিলমারী-হরিপুর তিস্তা সেতুতে ঘুরতে আসা, মা ও মেয়েকে উক্তক্তের জের এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে শুরু হয়ে দফায় দফায় চলা এ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৬ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে একজনকে চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে আসলে তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। এবং তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চিলমারী থানা পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের বাধা উপেক্ষা করে, দুই পক্ষের শতাধিক লোকজন দেশীয় অস্ত্র ও লাঠি সোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। পরে খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর একটি টিম দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। রমনা ইউনিয়নের সাজু ও মোতালেব নামের দুই যুবকসহ এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

গত শুক্রবার (৪ এপ্রিল) চিলমারী রমনা ইউনিয়নের দক্ষিণ খরখরিয়া গ্রামের বাসিন্দা মা ও মেয়ে দ্বিতীয় তিস্তা সেতুতে ঘুরতে আসলে, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের শহরের মোড় এলাকার তিন কিশোর গোপনে ছবি তোলেন এবং উত্ত্যক্ত করার চেষ্টা করেন। পরে মা ও মেয়ে ঐ ঘটনার প্রতিবাদ করার সময় ঐ কিশোররা তাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন।
বিষয়টি ঘটনাস্থলে উপস্থিত চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের ডাঙ্গার চর এলাকার, কয়েকজন যুবকের চোখে পড়লে তারা প্রতিবাদ করেন। এতে দুই পক্ষের যুবকদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ঐ ঘটনার জের ধরে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েন।
বৃহস্পতিবার সকালে রমনা ইউনিয়নের, দক্ষিণ খড়খড়িয়া এলাকার আলমগীর হোসেন (৩৫) তাদের ভুট্টা ক্ষেত দেখতে যায়। পরে আগের ঐ ঘটনার জের ধরে শহরের মোড় এলাকার মিস্টারসহ কয়েকজন যুবক মিলে তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। খবর পেয়ে তার পরিবারের লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় আলমগীরকে উদ্ধার করেন।
এরপর প্রথমে তাকে চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে রংপুর মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনার পর দুই গ্রামের মানুষ আবার ও সংঘর্ষে লিপ্ত হন।
এতে উভয় গ্রামের অন্তত ৬ জন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে কুড়িগ্রাম থেকে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে সেনাবাহিনী ও দুই জেলার পুলিশ প্রশাসন উভয় পক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন।
চিলমারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহিম বলেন, ‘দুই গ্রামের মানুষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। পরে দুপুরে ঘটনাস্থলে পুলিশ প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর একটি টিম গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
দুই গ্রামবাসী ও স্থানীয় জন-প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। তারা আর সংঘর্ষে জড়াবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছেন। এ ঘটনায় ২ পক্ষের কোন লিখিত কোন প্রকার অভিযোগ পত্র পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।