বললেন করোনাজয়ী তরুণ
নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসের সংক্রমণের দিনগুলোতে সবাইকে ঘরে থেকে পরিবারকে সময় দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন প্রাণঘাতী এ ভাইরাস থেকে মুক্ত হয়ে সম্প্রতি সুস্থ জীবনে ফেরা তরুণ ফয়সাল শেখ। মঙ্গলবার গণভবন থেকে ৬৪ জেলা প্রশাসকের (ডিসি) সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে সংযুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী ওই তরুণের সাথে কথা বলেন।
করোনা থেকে মুক্ত হওয়া জার্মানিফেরত ফয়সাল বলেন, আমি জার্মানিতে পড়াশোনা করছি। আমার পরিবারের সাথে ছুটি কাটানোর জন্য গত ১ মার্চ দেশে ফিরি। এখানে আসার ১০ দিন পর আমার খুব খারাপ লাগে, শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা যায়। তখন আমার ও আমার পরিবারের সবার নিরাপত্তার জন্য আমি নিজেই আইইডিসিআরের সাথে যোগাযোগ করি টেস্ট করানোর জন্য।
তিনি বলেন, এরপর যখন আমার করোনা পজিটিভ আসে তখন আমি ভয়ে ছিলাম। কারণ করোনা একটি নতুন ধরনের রোগ, এটি কীভাবে সামাল দেয়া হবে এখানে! আমি এখানে জার্মানির মতো চিকিৎসা সেবা পাবো কি-না, এখানে কীভাবে চিকিৎসা হবে, এটা নিয়েও সংশয়ে ছিলাম।
‘টেস্টে পজিটিভ আসার পর আইইডিসিআর আমাকে কোয়ারেন্টাইনে রাখতে চায়। আমি রাজি হই। তারা বাসায় এসে আমাকে নিয়ে গিয়ে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ভর্তি রাখে। সেখানে আমি ১০ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকি, আমার পরিবারের সবাইকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। কয়েকদিন পর বারবার টেস্ট করার পর যখন আমার টেস্ট রেজাল্ট নেগেটিভ আসে, তখন আমি আমার পরিবারের কাছে ফিরে যাই। আল্লাহর রহমতে আমার মাধ্যমে পরিবারের কারও করোনা হয়নি।’
চিকিৎসা অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি বলেন, আমি আইইডিসিআর থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা পেয়েছি। সেখান থেকে একজন ডাক্তার সবসময় আমার সাথে যোগাযোগ রেখেছেন। আমার কোনো সমস্যা হচ্ছে কি-না জানতে চেয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনার নির্দেশনায় দেশে যে করোনা চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে, আমি আপনার কাছে অনেক কৃতজ্ঞতা আদায় করছি। দেশের জনগণের কাছে একটাই অনুরোধ, আপনারা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মানুন। করোনার সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে বাসায় থাকা, ঘরে থাকা। পরিবারকে সময় দিন। যতদিন ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে ঘরে থাকুন, তাহলেই কেবল আমরা করোনা থেকে মুক্ত থাকতে পারব।
এসময় ফয়সালকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আল্লাহর কাছে শুকরিয়া যে তুমি সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছো। পরিবারের আর কারও তো কোনো অসুবিধা হয়নি?’
উত্তরে ফয়সাল বলেন, আমার পরিবার ও বন্ধুদের কারও কোনো সমস্যা হয়নি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খুব ভালো, শুনে খুব খুশি হলাম।’