নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম।

নিজস্ব প্রতিবেদক : মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে মদ ও বিষক্রিয়ায় পরিণত হয় ঠিক তেমনি মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া বিষে ভরা কর্মকর্তা দিয়ে পরিপূর্ণ গণপূর্ত অধিদপ্তর । অথচ কথা ছিল ৫ ই আগস্ট এর স্পিরিটে পরিবর্তন আসবে গণপূর্ত অধিদপ্তরে বিশেষ করে একই চেয়ারে তিন বছরের অধিক সকল নির্বাহী প্রকৌশলীকে পরিবর্তন করা হবে এমনটি নির্দেশনা দিয়েছিলেন গণপূর্ত উপদেষ্টা দপ্তর হতে কিন্তু প্রধান প্রকৌশলী তার নিজস্ব সুবিধায় নিজস্ব স্বার্থে তা করেননি ।

এমনই এক নির্বাহী প্রকৌশলীর কথা বলব আজ যার মেয়াদ স্বয়ং প্রধান প্রকৌশলী চেয়েও বেশি। প্রধান প্রকৌশলী তার দপ্তরে আছেন প্রায় চার বছর তাহলে বুঝাই যাচ্ছে সে নির্বাহী প্রকৌশল এর মেয়াদ চার বছর এর বেশি। তাহলে সেটা কত ৫, ৬ আসলে কত বেশি হলে বেশি বলা যায়?

গণপূর্তের ই/এম বিভাগ ১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম এর বিষয়ে কিছু কথা না বললেই নয় । যিনি তার পদে আছেন প্রায় আট বছর। একই পদে ৮ বছর থাকার রেকর্ড শুধুমাত্র তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীদের থাকে কিন্তু তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীদের কে টক্কা দিয়ে জনাব আশরাফুল ইসলাম তার পদে আজকে আট বছর ধরে পদাশিন রয়েছেন।
রুপপুর কাণ্ডে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত এই কর্মকর্তার পদোন্নতি বন্ধ থাকা সত্ত্বেও কিভাবে তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন তা অবশ্যই প্রশ্নবিদ্ধ। দুর্নীতির অভিযোগ চলমান থাকা অবস্থায় উক্ত অভিযুক্ত কর্মকর্তা কোন পদে দায়িত্ব পালন করতে পারেন না এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই স্বাভাবিকতাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে আশরাফ আজ প্রায় আট বছর ধরে গণপূর্ত অধিদপ্তরে ঢাকার একটি বিভাগ সদল বলে চালিয়ে যাচ্ছেন। এ যেন দুর্নীতির সাথে আপসকেই প্রমাণ করে। আশরাফের এই বিষয়ে কোন অনুশোচনা নেই তা বোঝা যায় কারন উক্ত প্রকল্পে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত কোন কর্মকর্তাই এখনো কর্মস্থলে ফিরতে পারেননি।
স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার গণভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দায়িত্বে টানা ৮ বছর চাকরি করায় জনাব আশরাফের ভিতরে তৈরি হয়েছে স্বৈরাচারী মনোভাব। তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে বেশ বেকায়দায় রয়েছেন। উল্লেখ্য যে তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তার সম ব্যাচের একজন কর্মকর্তা । তাই প্রাইয়ি তাদের ভিতর অস্বস্তি বিরাজমান হয় ।
মূলত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত হওয়ায় জনাব আশরাফুল ইসলামের পদোন্নতি বর্তমানে হচ্ছে না, আর এই বিষয়টাকেই তিনি সাপে বর হিসাবে নিয়েছেন । তাইতো একই বিভাগে টানা আট বছর চাকরি করেও তার ভিতরে নামছে না কোন অবসাদ বরং তিনি প্রধান প্রকৌশলীর বিশেষ স্নেহে উত্তর বঙ্গীয় কোটায় তার পদে আসীন রয়েছে।
টানা এক পদে একাধিক সময় থাকায় নানাবিধ অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছেন কিন্তু অপেক্ষাকৃত ক্লিন ইমেজ বজায় থাকায় সবাই তাকে মিস্টার ক্লিন বলে ডাকে। বাহ্যিক এই ক্লিন ইমেজটি জনাব আশরাফের জন্য বিশাল উপকারী হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাইতো তার ডিভিশনে কোন কাজই ঠিকাদার ছাড়া নেই, কাজ হয়ে যাওয়ার পরেই দরপত্র আহবান করা তার ডিভিশনের একটি বিশেষত্ব।
প্রাইসই কোনো নিয়ম-নৃত্য আঁকা না করে প্রাক্কলন পাস এবং টেন্ডার লাইভে দেন জনাব আশরাফ। সবার প্রিয় হওয়ায়, মিস্টার ম্যানেজার হিসেবে তাকে সবাই চেনে কারণ তিনি সবকিছুই ম্যানেজ করতে সিদ্ধহস্ত তাইতো প্রশ্ন ওঠে স্বৈরাচারী সরকারের গণভবন আর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দায়িত্বে পালন করা একজন কর্মকর্তা কিভাবে ৫ ই আগস্টের পরে তার পদের টিকে থাকেন? কি বা তার রহস্য ?
শুধুমাত্র উত্তরবঙ্গের কোটায় প্রধান প্রকৌশলী তার প্রতি সর্বদা বিশেষ দৃষ্টি দিয়ে রেখেছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে একাধিকবার তার বিষয়ে অভিযোগ হলেও প্রধান প্রকৌশলী সেই বিষয়ে সব সময় চুপ থেকেছেন। সুবানবাগ মসজিদ প্রকল্পে অনিয়ম ও সঠিক সময়ে কাজ না করায় , সিভিলে নির্বাহী প্রকৌশলীকে বদলি করা হলেও কোন এক রহস্যগত কারণে জনাব আশরাফকে কেউ বদলি করতে পারেনি ।
আশরাফের পদয়নের এক যুগ পূর্তি হতে আরো দুই বছর লাগবে। এখন প্রশ্ন হল আসলে জনাব আশরাফ কি এক যুগ পূর্তি হলে এই পদ ছাড়বেন?