নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত ঈদ শুভেচ্ছা কার্টুনে ‘ঈদ মোবারক’ লেখার পাশে কুকুরের ছবি ব্যবহার করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে পত্রিকাটির বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়েছে। মামলায় ওই পত্রিকার সম্পাদক, প্রকাশক ও গ্রাফিক ডিজাইনারকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার আবেদনের পর প্রথম আলোর পক্ষ থেকে ভয় দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মামলার আবেদনকারী নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘মামলার আবেদনের পর থেকে আমাকে বিভিন্নভাবে ভয় দেখানো হচ্ছে। গোয়েন্দাদের মতো আমার বাসার আশপাশে গিয়ে আমার বিষয়ে ও পরিবারের ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’

তবে এসব বিষয়ে তিনি ভীত নন বলে জানিয়েছেন নজরুল ইসলাম। দেশের শান্তির জন্যই প্রথম আলোর বিরুদ্ধে এই মামলার আবেদন করেছেন বলে দাবি করেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টের পর দেশে যখন একটা স্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল তখন এটি বিনষ্ট করার লক্ষ্যে প্রথম আলো ইচ্ছাকৃতভাবে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে।’

তিনি বলেন, ‘মুসলমানদের সবচেয়ে বড় আনন্দের দিন হচ্ছে ঈদুল ফিতর। আর মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে অপছন্দনীয় যেসব প্রাণী আছে তার মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে কুকুর। কুকুর বাঙালি সংস্কৃতির অংশ হলেও আমরা এটাকে স্বাভাবিক মনে করতাম। মূলত দেশের ভেতর অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে সুপরিকল্পিতভাবে কুকুরের ছবি প্রকাশ করেছে প্রথম আলো।’
এর আগেও প্রথম আলো জঙ্গি নাটক সাজাতে ফ্যাসিবাদ সরকারকে সাহায্য করেছে বলেও অভিযোগ নজরুল ইসলামের। দেশের প্রচলিত আইনে প্রথম আলোর সর্বোচ্চ শাস্তি হবে বলে আশাবাদী মামলার আবেদনকারী।
গত সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামানের আদালতে নজরুল ইসলাম এ মামলার আবেদন করেন। এতে ওই পত্রিকার সম্পাদক, প্রকাশক ও গ্রাফিক্স ডিজাইনারকে আসামি করা হয়েছে। আদালতও বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন। আগামী রবিবার এ বিষয়ে আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত।
মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, গত ৩০ মার্চ প্রথম আলো পত্রিকার প্রথম পাতার দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ কলামের হেডলাইনে ঈদ মোবারক নামক একটি ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশ করা হয়। যা কুকুরের ছবি সংবলিত। ওই ব্যঙ্গাত্মক কার্টুনের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মের পবিত্র উৎসবকে অবমাননা করা হয়েছে।
প্রথম আলোর মতো একটি জাতীয় পত্রিকা ইসলাম ধর্মের ঈদের মতো একটি পবিত্র ইবাদতকে কটাক্ষ করতে দ্বিধা করে নাই। একটি কুকুরের লোলুপ হাস্যরসাত্মক কার্টুনের সাথে মানুষের আনন্দকে চিত্রায়িত করে ঈদের পবিত্রতা এবং মুসলিম উম্মাহর ধর্মীয় অনুভূতিকে চরমভাবে অবমাননা করা হয়েছে।
এই কাজটি একটি সচেতন এবং সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ঈদুল ফিতরের মতো মহান ধর্মীয় উৎসবকে অপমানিত এবং হেয় করার ঘৃণ্য প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়।
এতে আরো বলা হয়েছে, আসামিরা স্বেচ্ছায়, স্বজ্ঞানে ও ইচ্ছাকৃতভাবে ইসলাম ধর্মের পবিত্র উৎসবকে তাদের দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় চিত্রায়িত ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন চিত্রের মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহর ঈদের মত পবিত্র ইবাদতকে হেয় প্রতিপন্ন ও অবমাননা করেছে।