নিজস্ব প্রতিনিধি (ঝিনাইদহ) : ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার বাঘাডাংগা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারের সময় ০২ নারী ও ০১ জন শিশুসহ এক ভারতীয় মানব পাচারকারীকে আটক করেছে বিজিবি’র মহেশপুর ব্যাটালিয়ন।

গতকাল বৃহস্পতিবার ১ মে, বিকেলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি’র মহেশপুর ব্যাটালিয়ন (৫৮ বিজিবি) এর অধীনস্থ বাঘাডাংগা বিওপির নায়েক আবু হানিফের নেতৃত্বে বিজিবির একটি টহলদল দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত পিলার-৬০/৩৩-আর হতে আনুমানিক ০১ কিঃ মিঃ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কাঞ্চনপুর ব্রিজ এলাকায় নিয়মিত টহল পরিচালনা করছিল।

আনুমানিক বিকেল সাড়ে ৫ টায় শংকর অধিকারী (৩৯) নামের এক ভারতীয় মানব পাচারকারী বর্ণিত এলাকা দিয়ে বাংলাদেশী ২ জন নারী ও ১ জন শিশুকে ভারতে পাচারের প্রাক্কালে বিজিবি টহলদল তাদেরকে আটক করে।

আটককৃত মানব পাচারকারী শংকর অধিকারী ভারতের উত্তর২৪ পরগনা জেলার বাগদা থানার পূর্ব হুদা গ্রামের নুকুল অধিকারীর ছেলে।
তাকে জিজ্ঞাসাবাদ জানা যায়, সে গত ১১ নভেম্বর ২০২৪ থেকে আগামী ১১ মে, পর্যন্ত ৬ মাসের ভিসার মাধ্যমে গত ৩ মাস আগে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানার বড়খোলা গ্রামের তার পূর্ববংশীয় চাচার বাড়িতে বেড়াতে এসে জয়বালা (১৩) নামের একজনকে বিয়ে করে ভারতে চলে যায়।
পরবর্তীতে গত ১৭ এপ্রিল ২০২৫ তারিখ ভারতের হরিদাসপুর এলআইসিপি হয়ে বাংলাদেশের বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে পুনরায় বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
পরবর্তীতে বেড়ানোর কথা বলে সে তার স্ত্রী জয়াবালা এবং পাশের বাড়ির যুথিকা হালদার (২৯) ও তার ছেলে বাধন বৈদা (১০)-কে পাচারের উদ্দেশ্যে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার বাঘাডাংগা সীমান্তে নিয়ে আসেন।
তার স্ত্রী জয়াবালা এবং যুথিকা হালদার জানান, তাদেরকে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে নিয়ে আসা হয়েছে এবং এখান থেকে ভারতে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি তারা অবগত নন। এছাড়া তাদের পরিবারের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদেরকে বেড়ানোর কথা বলে উক্ত ভারতীয় মানব পাচারকারী বাড়ি থেকে কৌশলে নিয়ে গেছে।
পরবর্তীতে ভারতীয় মানব পাচারকারী শংকর অধিকারীকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, ২ জন মহিলা ও ১ জন শিশুকে ভারতে নিয়ে যাওয়ার জন্য জনৈক বাংলাদেশী দালাল আনোয়ারের সাথে ৪৭,০০০ টাকার চুক্তি হয়।
উল্লেখিত মানব পাচারকারীর কাছে নগদ বাংলাদেশী ৫০,১১০ টাকা, ৮৫০ ভারতীয় রুপী এবং ৭ ওমানি রিয়েল পাওয়া যায়। তার ভাষ্যমতে, এখান থেকে ৪৭,০০০ টাকা জনৈক আনোয়ারকে সীমান্ত অতিক্রম করার পর প্রদান করার কথা ছিল।
উল্লেখ্য, পাচারকারী ব্যক্তি শিকার হতে যাওয়া দুই মহিলা ও শিশুর কাছ থেকে কোনো টাকা নেয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, পাচারকারী ব্যক্তি মহিলাদ্বয় ও শিশুকে ভারতে পাচার করে বিক্রির পর উক্ত টাকা উসুল করার পরিকল্পনা করেছিল।
আটককৃত মানব পাচারকারীকে মহেশপুর থানায় এবং আটককৃত মহিলাদ্বয় ও শিশুকে যশোরের জাস্টিস এন্ড কেয়ারে হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।