৪ সাংবাদিক আক্রান্ত কোয়ারেন্টাইনে ১০০

এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন স্বাস্থ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত চার সাংবাদিক করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে দুজন বাড়িতে এবং অপর দুজন হাসপাতালে রয়েছেন। তাদের আক্রান্তের কারণে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরামর্শে মোট ১০০ সাংবাদিক-কর্মচারীকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে।
এই সংখ্যা বাংলাদেশের গণমাধ্যমের জন্য অশনিসংকেত বলছেন সংশ্লিষ্টরা। গণমাধ্যমকর্মীদের অভিযোগ, সাংবাদিকদের স্ব স্ব মিডিয়া হাউজ থেকে স্বাস্থ্য-সুরক্ষাসামগ্রী না দিয়েই অ্যাসাইনমেন্টে পাঠানো হচ্ছে। সাংবাদিকদের এমন চলাফেরা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সাংবাদিক নেতারা।
গত ৩ এপ্রিল বাংলাদেশে সাংবাদিক হিসেবে প্রথম করোনায় আক্রান্ত হন বেসরকারি টেলিভিশনের এক ক্যামেরাপারসন। গত ২৬ মার্চ তার শরীরে জ্বর দেখা দেয়ায় তাকে সেদিনই ছুটি দেয়া হয়। এই ঘটনার পর তার সংস্পর্শে আসা আরও ৪৭ রিপোর্টার-ক্যামেরাপারসন ও কর্মকর্তাকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়।
৯ এপ্রিল আরেকটি বেসরকারি টেলিভিশনের একজন রিপোর্টার ও তার শ্বশুর করোনায় আক্রান্ত হন। আর তার সংস্পর্শে আসা টেলিভিশনটির সাংবাদিক, ক্যামেরাম্যান, গাড়িচালকসহ অন্তত ৩৪ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সাংবাদিক আক্রান্ত ও কোয়ারেন্টাইনের বিষয়ে টেলিভিশনটির প্রধান নির্বাহী (সিইও) ও প্রধান সম্পাদক বলেন, ‘৯ এপ্রিল কর্মীদের হোম কোয়ারেন্টাইন শেষ হয়েছে। তাদের কারও মধ্যেই করোনার উপসর্গ দেখা যায়নি। তবে বাড়তি সতর্কতা হিসেবে তাদের আরও কয়েকদিন অফিস না আসার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
এদিকে শুক্রবার দুটি দৈনিকের দুজন সাংবাদিকের শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এরপর এই দুইজনসহ প্রতিষ্ঠান দুটির অন্তত ২০ জন কর্মীকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে।
তাদের বিষয়ে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরী বলেন, আমাদের একজন সদস্য সাংবাদিকের করোনা পজিটিভ হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। আমরা তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসহ সব ধরনের সহযোগিতা করছি।
দেশে একের পর এক সাংবাদিকের করোনায় আক্রান্তে বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে।
এক যৌথ বিবৃতিতে ডিইউজে সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু বলেন, এ কথা কারো অজানা নয় যে, বেশিরভাগ গণমাধ্যমে বেতন-ভাতা ও প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধাদি অনিয়মিত। স্বাস্থ্যঝুঁকির কোনো ধরনের নিরাপত্তা নেই। নেই পরিবহন সুবিধাও। তারপরেও পাঠক চাহিদা, প্রতিষ্ঠানের সুনাম অক্ষুন্ন রাখা এবং রাষ্ট্রের চতুর্থস্তম্ভ হিসেবে পেশাগত দায়িত্ববোধ থেকে সংবাদকর্মীরা কর্তব্য পালন করে যাচ্ছেন। কিন্তু বর্তমান নাজুক পরিস্থিতিতে সংবাদকর্মীদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান ও রাষ্ট্রকে নতুন করে জরুরিভাবে চিন্তা করতে হবে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সাংবাদিক ও তাদের পরিবারের সদ্যদের চিকিৎসা ব্যয় সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমকে বহনের দাবি জানিয়েছেন ডিইউজে নেতারা।
ডিইউজের এই দুই নেতা আরও বলেন, গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান চালু রাখা হলেও স্বগোত্রীয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নিউজ শেয়ারিং করা ও কম গুরুত্বপূর্ণ অ্যাসাইনমেন্ট পরিহার করতে হবে। তাছাড়া ঝুঁকি কমিয়ে আনা ও অফিসের সহকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পথে-ঘাটে-মাঠে বাইরে নিউজ সংগ্রহে যাওয়া সাংবাদিকের জন্য সুরক্ষিত আলাদা নিভৃত বার্তাকক্ষের (আইসোলেশন নিউজরুম) ব্যবস্থা করতে হবে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *