নিজস্ব প্রতিবেদক : সাধারণ মানুষকে ঘরের থাকার আহ্বান জানিয়ে কঠোর আইন প্রয়োগের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন র্যাবের বিদায়ী মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। তিনি বলেছেন, ‘আপনারা সবাই ঘরে থাকুন, বাইরে বের হবেন না। নিজেরা সচেতন না হলে আমরা কঠোর আইন প্রয়োগ করব। এখন সিদ্ধান্ত আপনার; ঘরে থাকবেন নাকি জেলে যাবেন, নাকি কবরে যাবেন।’
সোমবার দুপুরে অনলাইনে র্যাব থেকে বিদায়ের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বেনজীর আহমেদ। আগামী বৃহস্পতিবার তিনি নতুন আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের কথা রয়েছে। এর আগে ৮ এপ্রিল তাকে আইজিপি হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। দীর্ঘ পাঁচবছরের বেশি সময় সুনামের সঙ্গে র্যাব প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন বেনজীর।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘আমরা সবসময় বুঝিয়ে মানুষকে ঘরে রাখতে পারব না। যদি নিজেরা সচেতন না হয়। আইনশৃঙ্খলাবাহিনী এলাকায় এলাকায় গেলে মানুষ ঘরে চলে যায়। আমরা চলে এলে রাস্তা, চায়ের দোকানে মানুষ আড্ডা দিতে থাকে। এটা ঠিক না। করোনা বিপদ আমাদের সবার। সরকার ছুটি দিয়েছে, ত্রাণ দিচ্ছে মানুষকে ঘরে থাকার জন্য। তাই সবাই আরো সচেতন হবো।’
যদি সরকার চায় তাহলে আমরা সাধারণ মানুষকে আইন প্রয়োগ করে জেলে দিতে বাধ্য হবো বলেন নতুন পুলিশ প্রধান।
বাড়িতে বাড়িতে খাবার পৌছে দিই উল্লেখ করে র্যাবের বিদায়ী প্রধান বলেন, ‘করোনা একটা বৈশ্বষিক সমস্যা। যারা স্বাস্থ্যসেবায় উন্নত, সেসব দেশ হিমশিম খাচ্ছে। কারণ বিশ্বব্যাপী ভয়াবহ অবস্থা চলছে। কেউ পাবলিক গ্যাদারিং করবেন না। অনেকে ত্রাণ বিতরণ করছেন, তাদেরকে সম্মান জানানোর ভাষা আমার নেই। তবে, ত্রাণ বিতরণের সময় দয়া করে মানুষের উপস্থিতি কিংবা লোকসমাগম করবেন না। বাড়ি বাড়ি দিয়ে আসুন। তাহলে এই রোগের সংক্রমণ বাড়বে না। কারণ পাবলিক গ্যাদারিং করে ত্রাণ দিয়ে বিপদ ডেকে আনবেন না।’
ত্রাণ চুরির ব্যাপারে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে বেনজীর আহমেদ বলেন, মানুষকে ঘরে রাখতে সরকার নিন্ম আয়ের মানুষকে ত্রাণ দিচ্ছে। সেটা কাউকে চুরি করতে নয়। রিলিফ নিয়ে নয় ছয় করতে দিব না। আর এটা সহ্য করা হবে না। যারা রিলিফ আত্মসাৎ করছে তাদের বিষয়ে আমাদের জানাবেন। সঙ্গে সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিদায়ী র্যাবের প্রধান বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার সময় র্যাবের প্রতি মানুষের একটা ভিন্ন ধারণা ছিল। কারণ তার আগে নারায়ণগঞ্জের ঘটনা ঘটেছিল। দায়িত্ব নেবার পর সাধারণ মানুষের মাঝে র্যাবের আস্থা ফিরিয়ে এনেছি। মানুষ র্যাবকে এখন বিশ্বাস করে এলিট ফোর্স হিসেবে। জঙ্গি, সন্ত্রাস, মাদকে আমরা বড় ভূমিকা রেখেছি। জঙ্গি দমনে আমরা নির্দেশে বাহিনী কর্মকর্তা, সদস্য ঝাপিয়ে পড়েছে। অনেকে জীবন উৎসর্গ করেছে। যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের কোনদিন ভুলব না। এর আগে বেনজীর আহমেদ তার বক্তব্যে বলেন, দীর্ঘ পাঁচবছরের বেশি সময় র্যাব প্রধানের দায়িত্ব পালন করেছি। এই দীর্ঘসময়ে সব সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করেছি। পরবর্তী যে পদে (আইজিপি) দায়িত্ব পেয়েছি, সেখানেও কাজ করার সময় সাংবাদিকরা আমার সঙ্গে থাকবেন। সরকারের দেওয়া পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করব আপনার সঙ্গে নিয়ে।