আরও ১০ জনের মৃত্যু
নতুন শনাক্ত ৩৪১
মহসীন আহমেদ স্বপন : রাজধানী ঢাকায় করোনাভাইরাস ভয়ঙ্কর আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে মহামারি করোনাভাইরাসে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ জনে। আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৩৪১ জন। এতে দেশে ভাইরাসটিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৫৭২ জনে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। অনলাইনে বুলেটিন উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
তিনি জানান, করোনা শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় দুই হাজার ১৯টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এতে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৩৪১ জন। ফলে দেশে মোট করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৫৭২ জনে। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ১০ জন। এতে মৃতের সংখ্যা হয়েছে ৬০।
বুলেটিন উপস্থাপনকালে করোনার বিস্তাররোধে সবাইকে বাড়িতে থাকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।
গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে বৈশ্বিক মহামারিতে পরিণত হয়েছে করোনাভাইরাস। চীন পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দিয়ে উঠলেও এখন ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২১ লাখ। মৃতের সংখ্যা এক লাখ ৩৪ হাজারেরও বেশি। তবে পাঁচ লাখ ১৬ হাজারের মতো রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।
গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর প্রথম দিকে কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও গত ক’দিনে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। সবশেষ হিসাবে দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার ৫৭২। মারা গেছেন ৬০ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪৯ জন।
প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি নানা সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে; যার মূলে রয়েছে মানুষে মানুষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। মানুষকে ঘরে রাখতে রাজপথের পাশাপাশি পাড়া-মহল্লায় টহল দিচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী, র্যাব ও পুলিশ।
আক্রান্তদের মধ্যে রাজধানী ঢাকায় সর্বোচ্চ ৫১৮ জন রোগী পাওয়া যায়। আর ঢাকার উপকণ্ঠে নারায়ণগঞ্জে ২১৪ জনসহ ঢাকা বিভাগে ৪১৬ জন রোগী পাওয়া গেছে।
ঢাকা ছাড়া অন্যান্য বিভাগওয়ারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চট্টগ্রামে ৬২, সিলেটে ৫, রংপুরে ৩৪, খুলনায় ৩, ময়মনসিংহে ২৬, বরিশালে ২৩ ও রাজশাহী বিভাগে ৪ জন করোনা পজিটিভ রোগী শনাক্ত হয়। স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ঢাকার মোট ৯৭টি এলাকায় করোনা পজিটিভ রোগী শনাক্ত করা গেছে। তবে সর্বোচ্চ সংখ্যক রোগী শনাক্ত হয়েছে ওয়ারীতে। এর পরেই অধিক সংখ্যক রোগী শনাক্ত হয়েছে মোহাম্মদপুর, মিরপুর টোলারবাগ, যাত্রাবাড়ী, লালবাগ, ধানমন্ডি, উত্তরায়।
ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জসহ ঢাকা বিভাগে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা অব্যাহতভাবে বেড়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকা বিভাগের নির্বাচিত প্রতিনিধিসহ অন্যদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে দ্রুত পরীক্ষার মাধ্যমে রোগী শনাক্তকরণসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেন।
ঢাকা সিটির তথ্য : মিরপুর এলাকা ৪২, ওয়ারী ২৬, যাত্রাবাড়ী ২১, মোহাম্মদপুর ২০, টোলারবাগ ১৯, ধানমন্ডি ১৮, লালবাগ ১৮, উত্তরা ১৭, তেজগাঁও ১৬, বাসাবো ১৪, গেন্ডারিয়া ১৩, বাবু বাজার ১১, গ্রিন রোড ১০, মগবাজার ১০, মহাখালী ১০, হাজারীবাগ ৯, গুলশান ৮, বনানী ৮, বংশাল ৭, সুত্রাপুর ৭, চকবাজার ৬, বাড্ডা ৬, আজিমপুর ৬, রাজারবাগ ৬, শান্তিনগর ৬, আদাবর ৫, জিগাতলা ৫, চানখারপুল ৫, নাখালপাড়া ৫, শাহবাগ ৪, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা ৪, মালিবাগ ৪, সোয়ারীঘাট ৩, কোতয়ালী ৩, বেইলী রোড ৩, রামপুরা ৩, হাতিরপুল ৩, কামরাঙ্গীরচর ৩, সিদ্ধেশ্বরী ৩, ইসলামপুর ২, লক্ষ্মীবাজার ২, নারিন্দা ২, পুরানা পল্টন ২, শাহ আলীবাগ ২, পীরেরবাগ ২, আগারগাঁও ২, মুগদা ২, গুলিস্তান ২, জেলগেট ২, সবুজবাগ ২, বসিলা ১, সেন্ট্রাল রোড ১, বুয়েট এলাকা ১, উর্দু রোড ১, ইস্কাটন ১, শাজাহানপুর ১, নিকুঞ্জ ১, আশকোনা ১, কাজীপাড়া ১, দয়াগঞ্জ ১, ধোলাইখাল ১, শনির আখড়া ১, হাতিরঝিল ১, মানিকদী ১, বেড়িবাঁধ ১, বেগুনবাড়ী ১, ঢাকেশ্বরী ১, মিটফোর্ড ১, কদমতলী ১, সায়েদাবাদ ১, ফার্মগেট ১, নবাবপুর ১, রায়ের বাজার ১, আরমানিটোলা ১, বানিয়ানগর ১, খিলগাঁও ১, কুড়িল ১, মতিঝিল ১, শান্তিবাগ ১, শ্যামপুর ১, ভাটারা ১, জুরাইন ১, কল্যাণপুর ১, মাতুয়াইল ১, রায়েরবাগ ১, শ্যামলী ১, বেগমবাজার ১, বকশীবাজার ১, গোপীবাগ ১, রমনা ১, তেজতুরী বাজার ১।
কোন জেলায় কত রোগী : ঢাকা ৫৪৬, নারায়ণগঞ্জ ২১৪, গাজীপুর ৫৩, চট্টগ্রাম ৩১, নরসিংদী ২৮, মুন্সীগঞ্জ ২১, মাদারীপুর ১৯, কিশোরগঞ্জ ১৭, কুমিল্লা ১৪, গাইবান্ধা ১২, জামালপুর ১২, বরিশাল ১০, টাঙ্গাইল ৯, গোপালগঞ্জ ৯, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৮, ময়মনসিংহ ৭, দিনাজপুর ৭, নীলফামারী ৬, রাজবাড়ী ৬, চাঁদপুর ৬, মানিকগঞ্জ ৫, শরীয়তপুর ৫, নেত্রকোনা ৪, বরগুনা ৪, রাজশাহী ৪, পিরোজপুর ৪, শেরপুর ৩, ঠাকুরগাঁও ৩, ঝালকাঠী ৩, মৌলভীবাজার ২, রংপুর ২, পটুয়াখালী ২, লালমনিরহাট ২, ফরিদপুর ২, কুড়িগ্রাম ২, চুয়াডাঙা ১, কক্সবাজার ১, সিলেট ১, হবিগঞ্জ ১, লক্ষ্মীপুর ১, সুনামগঞ্জ ১, খুলনা ১, নড়াইল ১, নোয়াখালী ১।