ঢাকার ডিআর’র অনিয়ম-দুর্নীতি

অপরাধ আইন ও আদালত এইমাত্র রাজধানী

বড় আ’লীগার সাবিকুন নাহার

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহার এর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। একসময় বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমানের আশ্রয়-প্রশ্রয় থাকলেও বর্তমানে নিজেকে বড় আওয়ামী লীগার মনে করেন তিনি। অভিযোগ রয়েছে সাবিকুন নাহার বর্তমান আইনমন্ত্রীর এলাকার পূত্রবধু হওয়ায় কোন কাজ করতেই ভয় পান না। তাই বিগত দিনের বিএনপি থেকে জেগে ওঠা সাবিকুন নাহার বিএনপির নাম বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ হয়ে গেছেন এবং বাংলাদেশ রেজিস্ট্রশন সার্ভিস এসোসিয়েশন এর সভাপতি পদে নির্বাচন করার জন্য মেতে উঠছেন। জানা গেছে এই নির্বাচনে ৫ থেকে ৬ কোটি টাকার মত খরচ হওয়ার কথা। এতো টাকার উৎস কোথায়! এব্যাপারে তিনি বলে থাকেন কোন বাধাই তাকে পরাজিত করতে পারবে না। তিনিই সভাপতি হবেনই। তার বিপক্ষে যে আছে তাকে সে কোন প্রতিদন্ধি মনে করেন না। অপরদিকে জনৈক দলিল লেখক জানান, তাদের চাহিদামতো ঘুষ না দিলে দলিল সম্পাদনা করা সম্ভব হয় না। সাবরেজিস্ট্রারগণ অফিস সহকারীর মতামত ছাড়া দলিলে স্বাক্ষর করেন না। কোন কোন দলিলে ২ শতাংশ থেকে ৪ শতাংশ হিসাব করে নেওয়া হয় আবার থোকভাবেও নিয়ে থাকেন। হেবা দলিলে ও ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে থাকেন। সাবিকুন নাহারের দুর্নীতি করার অভ্যাস আজও অব্যহত রয়েছে। যৌথবাহিনীর কাছে ধরা পরে হোচট খেলেও থেমে যাননি তিনি। বরং হাত আরো পাকা হয়েছে। কারণ তখন পাশে পেয়েছিল দুদকের সচিব আর এখন পাশে পেয়েছে শ^শুর বাড়ীর স্বয়ং নিজ দপ্তরের মন্ত্রীকে। কে নেয় তার বিজয়ের মালা।
সাবিকুন নাহারের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি নিউজের ব্যাপারে বক্তব্য না দিয়ে অন্য প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। এ সময় তিনি আরো বলেন, চাকরি করতে গেলে একটু আদটু এদিক সেদিক করতে হয়। ২০১৬ সালে তো সাসপেন্ড হয়েছিলেন এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওটা দলিলে স্বাক্ষর করিনি বলে সচিব মহোদয় সাসপেন্ড করছিল। যাক এসব কথা। আমি সিলিকশনেই হতে পারতাম কিন্ত সে দিকে না গিয়ে নির্বাচন করছি। মন্ত্রী মহোদয়ও আমার পক্ষে বলে জাহির করেন।
আরো জানা যায়, ঘুষের টাকাসহ সাবরেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহার ও তার হেড ক্লার্ককে যৌথবাহিনীর এক অভিযানে গ্রেফতার হয় এবং মোটা অংকের ঘুষের মাধ্যেম জামিন নেয়। কিন্তু মুসলেকা দেয়া থাকে যে, যখন ডাকবে তখনই হাজির হবেন। এ খবর কর্তৃপক্ষ জানতে পেরে তাকে মুন্সীগঞ্জে বদলী করে ও সে পলাতক থাকে। এরপর অলৌকিক শক্তির লবিং এর মাধ্যম দুদকের সচিবের সাথে সুসম্পর্ক করেন তিনি। অন্যদিকে কেরানিগঞ্জ বাড়ি হওয়ায় প্রভাবশালী মন্ত্রী আমান উল্লাহ আমানের সাথে সখ্যতা গড়ে ঘুষ, দুর্নীতি, অনৈতিক কাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। তার নিজস্ব এলাকা কেরানীগঞ্জেই শতকোটি টাকার উপরে সম্পদ করেছেন। এছাড়া রাজধানীর হাতিরপুল, গুলশান, ধানমন্ডি ও উত্তরায় রয়েছে তার একাধিক বিলাশবহুল বাড়ি ও ফ্ল্যাট; যার মূল্য শত কোটি টাকার ওপরে। সাবিকুন নাহারের নামে দুর্নীতি অভিযোগ ফাইল রয়েছে। এছাড়াও তার নামে এবং তার আত্বীয় স্বজনের নামে একাধিক ব্যাংকে ডজন খানেক হিসাব নম্বরে কোটি কোটি টাকা আছে। অন্যদিকে সাবিকুন নাহারের বর্তমান কর্মস্থল থেকে প্রতি মাসে ১৭টি সাবরেজিস্ট্রারসহ ১৮টি দপ্তর থেকে প্রতি মাসে তার কাছে উৎকোচ আসে প্রায় ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা। সরেজমিনে গত এক সপ্তাহে খোঁজ-খবর নিয়ে এসব তথ্য পাওয়া যায়। এছাড়াও নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনৈক অফিস সহকারী জানান, এই নির্বাচনে যে টাকা খরচ করছে তা আসছে কোথা থেকে। টাকা আমরা আয় করে দেই আর সে খরচ করে। আবার সাংবাদিকগন আসলে বলে থাকেন আমি কোন অবৈধ কাজ করি না। অন্যদিকে ঢাকা সদর, কেরানীগঞ্জ, গুলশান, তেজগাঁও, মোহাম্মদপুর, সূত্রাপুর, উত্তরা, বাড্ডা ও খিলগাঁও, আশুলিয়াসহ সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে ঘুষ ছাড়া কাজ হয় না। অন্যদিকে অফিসে চুরি হলো তার আজ পর্যন্ত কোন সমাধান করে নাই। অথচ তিনি বলে থাকেন, এখানে ঘুষ নেয়া হয় না।


বিজ্ঞাপন