সেন্টমার্টিনে যেতে পারবেন দিনে ১২শ৫০জন পর্যটক

এইমাত্র সারাদেশ

হাবিবুল ইসলাম হাবিব, টেকনাফ:দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপ। প্রতিদিন কেবল ১২শ৫০ জন পর্যটক-ই যেতে পারবেন। তাও আগে অনলাইনে নিবন্ধন করে যেতে হবে। নাকিকের জিন্জিরা তথা সেন্টমার্টিনের অস্তিত্ব এবং পরিবেশ সুরক্ষায় রাত্রিযাপনের ওপরও বিধি নিষেধ আরোপ করা হতে পারে। এ ছাড়া আরো নতুন নতুন অ্যাকশন প্ল্যান নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার কক্সবাজারের একটি হোটেলে ‘কক্সবাজারের পরিবেশ ব্যবস্থাপনা’ বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ড. সুলতান আহমদ। তিনি বলেন, অনলাইনে নিবন্ধন করে নির্দিষ্ট সংখ্যক পর্যটকের সেন্টমার্টিন দ্বীপে যাওয়ার নিয়ম এ বছরই ছিল। কিন্তু তা কার্যকর করা যায়নি। আগামী পর্যটন মৌসুমে কার্যকর করা হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিজি বলেন, সেন্টমার্টিন দেশের বড় সম্পদ। প্রকৃতি ও পরিবেশ সুরক্ষা করা সম্ভব না হলে অচিরে সেন্টমার্টিনের পরিবেশ হবে ভয়াবহ।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (মানব সম্পদ উন্নয়ন) এস এম সরওয়ার কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে আলোচনায় অংশ নেন কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি লেফটেন্যান্ট কর্নেল আনোয়ারুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবেদিল ইসলাম, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক ও রিও প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ জিয়াউল হক, যুগ্ম পরিচালক মো. ফেরদৌস হোসেন খান, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের ও কক্সবাজার বন পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি সাংবাদিক দীপক শর্মা দীপু।
সেমিনারে বলা হয়, প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) হিসেবে বর্তমানে সেন্টমার্টিন, সোনাদিয়া ও সমুদ্র সৈকত এখন পরিবেশগত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এ জন্য মহাপরিকল্পনার মাধ্যমে উন্নয়ন কাজ করতে হবে। ফিরিয়ে আনতে হবে আগের পরিবেশ। পরিকল্পনা ছাড়া স্থাপনা গড়ে উঠায় দূষণের কবলে পড়েছে হোটেল মোটেল জোন। ৩২৫টি হোটেলের মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়েছে মাত্র ৪৮টি। স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান (এসটিপি) বাস্তবায়ন করেছে মাত্র ছয়টি হোটেল। কক্সবাজারে প্রতিদিন কঠিন ও তরল বর্জ্য সৃষ্টি হয় ৫০ থেকে ৭০ টন। ১২ টন বর্জ্য শোধানাগারের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু শোধানাগারে বর্জ্য আসে মাত্র দুই টন। এই তথ্য থেকে বুঝা যায়, কক্সবাজার পর্যটন শহরের পরিবেশ দূষণের ভয়াবহ অবস্থা।
সেমিনারে আরেক তথ্যে বলা হয়, দিন দিন পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। এরমধ্যে পানি ব্যবহারের চেয়ে অপচয় হয় বেশি। পাহাড় কাটার মাটি, হ্যাচারির বর্জ্য ও হোটেল মোটেলের বর্জ্য সরাসরি যাচ্ছে সাগর ও নদীতে। বাঁকখালী নদী ভরাট, দখল হওয়ার কারণে শহরের লবণাক্ত পানি বেড়ে গেছে।
সেমিনারে বলা হয়, এসব নানা দূষণের কারণে কক্সবাজারে পর্যটক আসা হ্রাস পাবে এবং স্থানীয়দের জন্যও বসবাস অনুপযোগী হয়ে পড়বে কক্সবাজার। কক্সবাজারের পরিবেশ সুরক্ষার এ সময় এখনো ফুরিয়ে যায়নি। তবে দেরি করা যাবে না। দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া দরকার। এজন্য সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করতে হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে খুরুস্কুলে পরিবেশবান্ধব ২২৫ পরিবারের জন্য আবাসন ভবন তৈরি করবে বলে সেমিনারে জানানো হয়।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *