ঔপন্যাসিক এলেন হপকিনস তার ফলআউট বইয়ে লিখেছেন, রাগ হচ্ছে- একটি বৈধ আবেগ। যখন এটি নিয়ন্ত্রণ করা হয় এবং যেটি আপনি করতে চাচ্ছেন না, কিন্তু করতে হচ্ছে, তখনই কেবল এটি খারাপ।
বিভিন্ন সময়ে নিজেদের ক্ষোভ থেকে আমরা রেগে যেতে পারি। ভালোবাসা, উত্তেজনা, দুঃখ ও সুখের ক্ষেত্রে মানুষের আবেগ খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু রাগ আসে মানুষের ভুল বোঝাবুঝি থেকে। মানুষ কখনও কখনও এটি ঢাকতে চেষ্টা করেন; কিংবা সর্বাত্মকভাবে প্রকাশ ঘটান।
মানুষের মনে ক্ষোভ তৈরি হওয়া প্রাকৃতিক। কখনও কখনও কান্নার মাধ্যমে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করি। আবার রেগেমেগে জিনিসপত্র ছুড়ে কিংবা মারামারিতে রাগ ছড়িয়ে দিই।
কিন্তু রাগ খুবই ভালো, যখন এটি আপনাকে নিয়ন্ত্রণ না করে। গঠনমূলক রাগ মানুষকে বহুদূর যেতে সহায়তা করতে পারে। রাগটাকে কেবল ইতিবাচক ধারায় ছড়িয়ে দিতে পারলেই হলো।
নিজের ভেতরের মানুষটির কথা শুনুন
বিশ্বে বহু জিনিস আছে, যা নিয়ে আমরা রাগ করতে পারি। কখনও কখনও রাগ আমাদের বড় বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যেতে পারে। কিন্তু কৌশল হচ্ছে- সবার আগে আপনার রাগকে শোনেন এবং আপনার ভেতরে মানুষটি কী বলছে, তা শোনেন। এতে ঠুনকো বিষয়গুলোও যাতে বড়ভাবে উপস্থাপিত না হয়, সেটি স্পষ্ট হয়ে যাবে।
রাগ না করে সীমারোপ করুন
চারপাশের পৃথিবী নিয়ে আমরা অনেক রাগ করতে পারি। কিন্তু ন্যায়সঙ্গত কিছু করা নিয়ে চারদিকের রসদ একেবারে কম। একজন আপনার সঙ্গে কীভাবে আচরণ করছে, তা নিয়ে রাগের কিছু নেই। কেউ আপনার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে নিজেকে সুখী করতে পারবে না। কারণ তাদের নেতিবাচক সমালোচনা ন্যায়সঙ্গত হতে হবে। যদি সেটি না হয়, তবে অজ্ঞতাই পরম সুখ হিসেবে আবির্ভাব হবে।
লক্ষ্য অর্জনে রাগকে কাজে লাগান
আপনার কাজ নিয়ে বস খুশি না; কিংবা তার কাছ থেকে ভালো আচরণ পাচ্ছেন না। অথবা নিজের চাকরিটাকে ভালোবাসতে পারছেন না। সে ক্ষেত্রে নিজের রাগকে এমনভাবে কাজে লাগান, যেটি আপনার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। কাজেই জীবনের লক্ষ্যগুলো সফল করতে নিজের রাগকে ভালোভাবে ব্যবহার করুন। এভাবে শ্বাস আটকে যাওয়া পরিরেশ থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারবেন।
সম্পর্ক মজবুত করতে সহায়তা করতে পারে রাগ
কাউকে তাৎক্ষণিকভাবে আঘাত কিংবা সমালোচনা না করে পরিস্থিতি নিয়ে ভাবতে হবে কীভাবে নিজেকে একটু সময় দিতে পারবেন, তা খুঁজে বের করুন। ধরুণ কেউ আপনার দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা ভণ্ডুল করে দিয়েছেন। কাজেই স্বাভাবিকভাবে আপনার রেগে যাওয়ার কথা। কিন্তু একটু থামুন, শ্বাস নিন। বন্ধুর জায়গায় নিজেকে ভাবুন। সেখানে আপনি থাকলে কী আচরণ করতেন, তাই চিন্তা করুন।
এতে রাগকে এমনভাবে প্রকাশ করতে পারবেন, যা আপনার মনকে ভালো করে দেবে। বন্ধুর সঙ্গে সম্পর্ক মেরামত করে নিতে যা সহায়ক হবে।