ভোলায় জ্বিন তাড়ানোর নামে কৌশলে এক গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে রুনা বেগম নামে এক কিশোরীর (ওঝা) বিরুদ্ধে। অগ্নিদগ্ধ জোসনা বেগমকে (৩৫) পরিবারের সদস্যরা উদ্ধার করে প্রথমে ভোলা সদর হাসপাতলে ভর্তি করে। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ভোলা সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের বাঘার হাওলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শুক্রবার রাতে অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়া হয়। এ ঘটনায় পুলিশ ওই ওঝার নানা বেলায়েত হোসেন এবং তার স্ত্রী অহিদা বেগমকে আটক করেছে।
অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূর মা মাহফুজা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ে জোসনা ৪ সন্তানের জননী। তার স্বামী স্বামী মো. জসিম সৌদি প্রবাসী। অনেক দিন ধরে জোসনা হঠাৎ হঠাৎ অস্বাভাবিক আচরণ করে। আমাদের পাশের গ্রামের বেলায়েত হোসেনের নাতনি ওঝা রুনা বেগমকে দেখায়। জোসনার ওপর বড় জ্বিন ভর করেছে বলে রুনা অনেকদিন ধরে চিকিৎসা করে আসছিল। জ্বিন তাড়ানোর জন্য বৃহস্পতিবার রাতে জোসনাকে আসতে বলে রুনা। তার কথা মতো রাতে জোসনাকে নিয়ে রুনার কাছে যাই। রুনা জোসনার গায়ে কেরোসিন মেখে আগরবাতি ও ধূপ জ্বালিয়ে ঝাড় ফু দিতে থাকে। একপর্যায়ে সে জোসনার শরীরে কৌশলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে জোসনাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। তার শরীরের ৫০ ভাগের বেশি ঝলসে গেছে।’
স্থানীয়রা জানান, বেলায়েত হোসেন তার নাতনি রুনাকে দিয়ে গ্রামের অনেক লোকজনকে নিঃস্ব করেছে। চিকিৎসার নামে মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। কেউ টাকা চাইলে তাদের বিভিন্ন ভয় দেখায় রুনা ও তার নানা বেলায়েত। জোসনা বেগমের চিকিৎসার জন্যও রুনা অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। জোসনা ভালো না হলে টাকা ফেরতের জন্য চাপ দিলে ওই দিন রাতে রুনা কৌশলে জোসনার পরিবারকে ভয় দেখানোর জন্য চিকিৎসার নাম করে ইচ্ছাকৃত আগুন ধরিয়ে দেয়। আর রুনা প্রমাণ করাতে চাইছিল টাকা ফেরত চাওয়াতে জ্বিনরা অখুশি হয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। ভোলা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ছগির মিঞা জানান, অগ্নিদগ্ধ জোসনার পরিবার মামলা করেছে। দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রুনা ওঝা পলাতক রয়েছে। তাকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।